শিলচর লামডিং রেলপথে ব্যাপক দুর্নীতি তদন্তের দাবি অবিসার
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রী এবং চীফ ভিজিলেন্স কমিশনার কে স্মারকলিপি:শিলচর-লামডিং ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণে দূর্নীতি, নিম্নমানের কাজ এবং
সিআরএস রিপোর্টের বাস্তবায়নে গাফিলতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চাইলো অবিসা:
___________________________
নয়া ঠাহর,শিলচর :লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ রেললাইন নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের। নিম্নমানের কাজ এবং মাত্রাতিরিক্ত দূর্নীতি ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেল ৬০০০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বরাক তথা ত্রিপুরা-মণিপুর-মিজোরাম রাজ্যের লাইফলাইন এই রেলপথ। ভূমিধস/রেলট্রেক এর নীচে থেকে মাটি সরে এবং একটি স্থানে প্রায় ১০০-১৫০মিটার জায়গা ওয়াস আউট হওয়ার ফলে রেলপথ বন্ধ হয়ে গেছে। রাজ্যের বন্যা এবং দূর্যোগ পরিস্থিতির সুধার হলেও, ওই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু করা যাবে কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না রেল কর্তৃপক্ষ।এই পরিস্থিতিতে রেলের নির্মাণ শাখার বিরুদ্ধে অযোগ্য ঠিকাদার নিয়োগ এবং রেলওয়ে সেফটি রিপোর্ট অমান্য করার অভিযোগে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রী এবং চীফ ভিজিলেন্স কমিশনার এর কাছে চিঠি লিখে আবেদন জানালো অল বরাক ইয়ুথ স্টুডেণ্টস অ্যাসোসিয়েশন(অবিসা)।
শুক্রবার দিল্লিতে অবিসার কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য-আহ্বায়ক বাহারুল ইসলাম বড়ভূইয়া জানিয়েছেন,লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর পক্ষে বিপজ্জনক— ওই রেলপথ পরিদর্শনের পর দাখিল রিপোর্টে এমনই জানিয়েছিলেন ‘কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি’ সুদর্শন নায়েক।সেখানকার নির্মাণকাজও সঠিক নয়। সেতু ও সুড়ঙ্গের কাজও ঠিকমতো করা হয়নি। তাতে প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়েছে। সে সব ত্রুটি মেরামতের পরই ওই লাইনে যাত্রীবাহী ট্রেন চলতে পারে। সিআরএস তাঁর রিপোর্টে স্পষ্টই লিখেছেন— ওই রেলপথ পরিদর্শন করে তিনি সন্তুষ্ট হননি। এই রুট এখনও যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর পক্ষে উপযুক্ত নয়। এই রিপোর্টকে আমল না দিয়েই যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করে রেল মন্ত্রক। যার ফলশ্রুতিতে যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন বরাক উপত্যকার বাসিন্দারা।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে অবিসা জানিয়েছে যে, প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ খরচ করে রেললাইন সংস্কার, নতুন রেলপথ নির্মাণ ও অবকাঠামোয় ব্যয় করার পরও ব্রডগেজ প্রকল্পটি মাঝে মধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়েছে। ১১৫ বছর আগেকার মিটারগেজ লাইনে যেসব সমস্যা ছিলনা ব্রডগেজ লাইনে তারচেয়ে অনেক বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে।ফলে অর্থনৈতিকভাবেও অঞ্চলটি ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।লামডিং-বদরপুর ব্রডগেজ রেলপথে ধস নামার দরুন বরাক উপত্যকা সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরা মণিপুর, মিজোরামের সঙ্গে বহিঃরাজ্যের যোগাযোগ সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে পড়েছে।প্রধানমন্ত্রীর কাছে অবিসা' র আর্জি সিআরএস রিপোর্টকে বাস্তবায়িত করে যাত্রী নিরাপত্তা সুরক্ষিত করা হোক । পাশাপাশি, সিআরএস রিপোর্টকে কেন যথাযথভাবে গুরুত্ব দেওয়া হল না তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করার দাবি জানিয়েছে অবিসা । এদিন প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে রেলমন্ত্রী , রেলের ভিজিলেন্স বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনারকে।
রেল সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে পাহাড় লাইনে রেল চলাচল সচল করার লক্ষ্যে রেল কর্তৃপক্ষ যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে রেলপথ মেরামতির কাজ করে চলছে।রেলমন্ত্রক লামডিং-বদরপুর ব্রডগেজ রেলপথ সচল করে তুলতে ১৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
কোন মন্তব্য নেই