Header Ads

অসমে বাঙালি হিন্দুদের ওপর সু পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ হানছে বিজেপি অভিযোগ তৃনমূল কংগ্রেসের

নয়া ঠাহর, গুয়াহাটি;সমে বসবাসকারী গোর্খা সম্প্রদায়ের মানুষদের বিদেশি-র নামে হয়রানি না করার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্তবিশ্ব শর্মা সতর্ক করে ছেন। সম্প্রতি এক জনসভায় তাঁর শাসনকালে গোর্খা দের ওপর  ভুলেও বিদেশি-র নামে নির্যাতন না চালাতে  তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। এটা অত্যন্ত সময়োপযোগী ও আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রীর। বিপরীতে, মুখ্যমন্ত্রী ডঃ শর্মা হিন্দু বাঙালির ত্রাণ কর্তা সাজার যে নিপুণ অভিনয় করে আসছেন, তার মুখোশ খুলে গিয়েছে। কারণ, তাঁর শাসনকালেই সুপরিকল্পিত ভাবে জেলা ভিত্তিক নির্দ্দিষ্ট সংখ্যার হিন্দু বাঙালির নামে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের নোটিশ পাঠানোর প্রক্রিয়া কে এক সরকারি ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করছেন অসম তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা চিত্তরঞ্জন পাল।
উল্লেখ্য, "ইণ্ডো-নেপাল শান্তি ও মৈত্রী" চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৯৫০ সালের ৩১শে জুলাই। নেপালে নিযুক্ত ভারতীয় দূত চন্দ্রশেখর প্রসাদ নারায়ণ সিং ও নেপালের রাজা তথা প্রধানমন্ত্রী মহুন শমসের জং বাহাদূর রাণা-র স্বাক্ষরে এই শান্তি ও মৈত্রী চুক্তি সম্পাদিত হয়। ভারতীয় সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুসারে গোর্খা সম্প্রদায়ের মানুষদের বিদেশি বলে 7গণ্য করা যায় না।
ওদিকে, ইণ্ডো-নেপাল শান্তি ও মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার আগে ১৯৫০ সালের পয়লা মার্চ "ইমিগ্র্যান্টস (এক্সপালশান ফ্রম আসাম) অ্যাক্ট, ১৯৫০ নামে সংসদে আইন প্রণয়ন করা হয়। এই আইনের ২ (খ) ধারায় ধর্মীয় নির্যাতনের বলি হয়ে পাকিস্তান থেকে অসম কিংবা ভারতের অন্যত্র এসে বসবাস করলে তাদের ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হবে না। 2 (B)  "give such further directions in regard to his or their removal from India or Assam as it may consider necessary expedient.
Provided that nothing in this section shall apply to any person who on account of civil disturbances in any area now forming part of Pakistan has been displaced from or has left his place of residence in such area who has been subsequently residing in Assam."
বলাবাহুল্য, ইমিগ্র্যান্টস এক্সপালশান আইন অনুসারে ১৯৭১ সালের পঁচিশ মার্চের আগে আসা হিন্দু বাঙালিরা এই আইনের সুবাদে সবাই ভারতীয় নাগরিক। যদিও বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ৩রা মার্চ থেকে ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ভয়ে পালিয়ে ভারতে আসা, যা অসমে নগণ্য সংখ্যা, হিন্দু বাঙালি এসেছিলেন, তাঁরা "ইন্দিরা--মুছিব" চুক্তি অনুসারে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছেন। বর্তমান অসমে একজনও বাংলাদেশি নেই বলে সচেতন মহল মনে করেন।
এছাড়া, এন আর সি নবায়নের জন্য যে সব হিন্দু বাঙালিরা আবেদন করেছেন, তাঁদের প্রত্যেক এর হাতে নাগরিকত্ব প্রমাণের নথিপত্ৰ রয়েছে। যদিও বিজেপি সরকারের ষড়যন্ত্রের দরুণ রিফিউজি সার্টিফিকেট, মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট ও অন্যান্য নথিপত্ৰ বাতিল করার দরুণ প্রায় বারো লক্ষ হিন্দু বাঙালির নাম এন আর সি-তে নথিভুক্ত হয় নি।
চিত্তরঞ্জন পাল আরও বলেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্তবিশ্ব শর্মা অতিরিক্ত আরও পনের লক্ষ হিন্দু বাঙালির নাম এন আর সি থেকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। সে ক্ষেত্রে, ১৯৭১  সালের আগে আসা প্রকৃত ভারতীয় হিন্দু বাঙালি নাগরিকদের বাংলাদেশি সাজানোর ষড়যন্ত্র করছে রাজ্য সরকার। নাগরিকত্ব আইন ২০১৯ অনুসারে যদি হিন্দু বাঙালির নাগরিকত্ব দেওয়া যেতো, তাহলে বিগত তিন বছরে এই তড়িৎকর্মা সরকার কেন রুলস প্রস্তুত করতে পারে নি ? এ প্রশ্ন তুলে চিত্তরঞ্জন পাল বলেন, ১৮৩৬ সাল থেকে ১৮৭২ সাল পর্যন্ত অসমের রাজ্য ভাষা বাংলা ছিলো। সে হিসেবে অসমের হিন্দু বাঙালিরাও তো প্রায় দু শ বছর ধরে বসবাস করছেন। তাই হিন্দু বাঙালিদের হেনস্থা না করতে অসম পুলিশ কে হুঁশিয়ার করে দিতে মুখ্যমন্ত্রী কে আহ্বান জানান চিত্তরঞ্জন পাল।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.