Header Ads

বেলুড় মঠের লক্ষ্মী পুজো



     

কোজাগরী পূর্ণিমাতে বেলুড় মঠে প্রতিবারই মা লক্ষ্মীর আরাধনা অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।  শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরের গর্ভগৃহের ঠিক সামনের নাটমন্দিরের নির্দিষ্ট স্থানে এই লক্ষ্মীপুজোর আরাধনা হয়ে থাকে।  লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন অন্যান্য পুজোর তুলনায় সরল হলেও কোনো রকম কমতি যাতে মায়ের পুজোর আয়োজনে না থাকে, সে বিষয়ে সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনাদি করা হয়।  বেলুড় মঠে লক্ষ্মী পুজো হয়ে থাকে ধানের ঘটে।  ধানের ঘটটিকেই সুন্দর করে শাড়ি গয়নায় সাজিয়ে মা লক্ষ্মীর রূপ দেওয়া হয়।  যতদূর জানা যায় তা হলো, এই ধানের ঘটটিতেই মা সারদামণি দেবী লক্ষ্মী পুজো করতেন, যা পরবর্তীকালে বেলুড় মঠের মন্দিরের উপরে রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা হয় ও লক্ষ্মীপুজোর দিন তাতেই মা লক্ষ্মীর পুজো হয়ে আসছে। 
      লক্ষ্মীপুজোর এখানে বৈশিষ্ট হলো কেবল শাঁখ ধ্বনি করেই এখানে পুজো হয়ে থাকে, অনেক জায়গায় ঢাক বাজানোর চলন থাকলেও বেলুড় মঠে ঢাক বাজানো হয় না তার বদলে বড়ো বড়ো শাঁখ বাজিয়ে মায়ের পুজোতে আরতি হয়ে থাকে। মায়ের ভোগের জন্য প্রায় পাঁচশো নারকেল নাড়ু প্রস্তুত করা হয়, সঙ্গে কোজাগরী ভোগাদিও দেওয়া হয়।  মায়ের ভোগে কোনো অন্ন দেওয়া হয় না, তার বদলে থাকে লুচি পাঁচ রকমের তরকারি ও ভাজা, সঙ্গে পায়েস ও নানারকম মিষ্টি ইত্যাদি নিবেদন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও থাকে ডাবের জল মিছরির জল।  মা লক্ষ্মী এবং শ্রী নারায়ণের ষোড়শ উপচারে পুজো করা হয়ে থাকে এবং বাকিদের পঞ্চ উপচারে পুজো করা হয়।  মায়ের আরতি ও হোম সব কিছুই করা হয় লক্ষ্মী পুজোর পদ্ধতির বিধি মেনে। দুর্গাপুজো যিনি করে থাকেন সাধরণত সেই পূজারী ব্রহ্মচারী মহারাজই লক্ষ্মীপুজোর অনুষ্ঠানের পূজকের আসনে থাকেন।  সন্ন্যাসীদের এই পুজো করবার অধিকার থাকে না।  মায়ের ভোগে আমিষ কোনো কিছুই থাকে না।  মা লক্ষ্মীর যেহেতু শ্রী সৌন্দর্য খুবই প্রিয় তাই সুন্দর করে আলপনা দেওয়া ফুল দিয়ে সাজানো ও ধূপ-দীপ জ্বালিয়ে রাখা হয় সবসময় পুজোর জায়গায়।
      তাছাড়া, বেলুড়মঠস্থ অন্যান্য রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের শাখা কেন্দ্রগুলিতেও যথাবিধি নিয়মানুযায়ী কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।  অধিকন্তু, জননী শ্রীমা সারদাদেবীকেই আমরা রামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের অধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মীদেবীরূপে ভাব ও ভক্তিতে মনেপ্রাণে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। 

       মা লক্ষ্মী কি এলো এবার,
                         মা সারদা রূপটি ধরে। 
      তাই নাকি রে রামকৃষ্ণ,
                         পূজে তাঁরে ভক্তি ভরে।।
      সে নাকি রে আদ্যাশক্তি,
                         তাঁরই হাতে সবার মুক্তি। 
      মহালক্ষ্মী সরস্বতী,
                         রূপ ঢেকে মা জ্ঞানবিতরে।। 
      সীতা রাধা অন্নপূর্ণা,
                         মাকে পেয়ে ধরাধন্যা। 
      মা নামে ডেকেছে বন্যা,
                         সে যে কতো সুধামাখা। 
      কাঙ্গালে তারিতে মা যে,
                         এলো কাঙ্গালিনী বেশে। 
      অভয়া বিতরে অভয়,
                          সদা বরাভয় করে।। 
      =========================
                সংগৃহীত উপস্থাপনায়,
          রামকৃষ্ণ মঠ, বাগ্দা, পুরুলিয়া।
       তারিখ—২০শে অক্টোবর, ২০২১ইং।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.