টেট পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে সরকারের বৈষম্যের শিকার বরাক
নয়া ঠাহর,শিলচর: টেট পরীক্ষা কেন্দ্র ও হাইস্কুল উন্নীতকরণ প্রক্রিয়ায় ফের বৈষম্যের শিকার বরাক - প্রতিবাদে সরব হল বিডিএফ ইউথ ফ্রন্ট।
হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ জেলায় নেই কোন টেট পরীক্ষা কেন্দ্র,অন্যান্য জেলায় ১২ টি অব্দি হাইস্কুলকে হায়ার সেকেন্ডারিতে উন্নীত করলেও বরাকের ভাগ্যে বরাদ্দ মাত্র দুটি ।এসবের প্রতিবাদে ফের গর্জে উঠল বিডিএফ যুব ফ্রন্ট।
এক প্রেস বার্তায় যুব ফ্রন্টের মূখ্য আহ্বায়ক কল্পার্ণব গুপ্ত বলেন যে আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য টেট পরীক্ষার জন্য রাজ্যের মোট ৩৫ টি জেলার ২৭ টিতে পরীক্ষা কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে অথচ আশ্চর্যজনক ভাবে সাতটি জেলাকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যার সবকটিই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। বলা বাহুল্য যে এরজন্য বরাকের করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলায়ও কোন পরীক্ষা কেন্দ্র ঘোষিত হয়নি। তিনি বলেন আমরা সংবাদ মাধ্যমসূত্রে জানতে পারলাম যে এব্যাপারে বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ জানতে চাইলে শিক্ষা বিভাগের কর্তারা একে অন্যের দিকে বল ঠেলে দিচ্ছেন, কোন স্পষ্ট কারণ বা যুক্তি দেখাতে পারছেন না। কল্পার্ণব বলেন তাহলে কি এটা ধরে নিতে হবে যে সংখ্যালঘু বা মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রার্থীদের অসুবিধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ? তা নাহলে বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে যখন যতটা সম্ভব বাইরে না বেরোনো বা ভিড় না জমানোর নির্দেশ রয়েছে সেখানে হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ জেলায় পরীক্ষা নেবার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও কেন এই দুই জেলার পরীক্ষার্থীদের নিকটবর্তী কাছাড় জেলার এসে এই পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে ?
বিডিএফ যূবফ্রন্টের মূখ্য আহ্বায়ক বলেন যে যদি মুসলিম পরীক্ষার্থীদের বঞ্চিত করতে সরকারি তরফে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে তবে এরচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় আর কিছু হতে পারনা কারণ এর মানে একটি নির্বাচিত সরকার এক্ষেত্রে ভারতীয় সংবিধানকে অবমাননা করছেন ।এই দোষে দুষ্ঠ হলে অবিলম্বে এই সরকারকে বরখাস্ত করার আদেশ দেওয়া উচিত রাস্ট্রপতির, কারণ জনপ্রতিনিধিদের সংবিধানের শপথ নিয়েই বিধানসভায় পা রাখতে হয়। । তাই অবিলম্বে এই ব্যাপারে সরকারকে স্পষ্টীকরণ দিতে হবে বলে জোরালো দাবি জানান তিনি।
যুবফ্রন্টের আরো দুই আহ্বায়ক দেবরাজ দাশগুপ্ত ও ইকবাল নাসিম চৌধুরী এদিন বলেন যে সম্প্রতি রাজ্যের অনেকগুলো মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এর একটি তালিকাও সরকারি তরফে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই ক্ষেত্রে আবার বঞ্চনার শিকার হয়েছে কাছাড় জেলা তথা বরাক উপত্যকা। উদাহরণ স্বরূপ কামরূপ গ্রাম্য/ মেট্রোর ক্ষেত্রে এরকম স্কুলের সংখ্যা ৯টি,গোলাঘাট ৯টি,নঁগাও/ মরিগাও ১২ টি, বোড়োল্যান্ড ১১টি। অন্যান্য জেলার অবস্থানও এই অনুপাতে হলেও কাছাড় তথা বরাকে শুধু ২ টি হাইস্কুলকে হায়ার সেকেন্ডারতে উন্নীত করা হয়েছে। দেবরাজ ও ইকবাল এদিন এর পিছনে কারণ কি -এই প্রশ্ন ছুড়ে দেন মূখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে। তাঁরা বলেন যে তার মানে কি বরাকের স্কুলগুলো নিম্নমানের ? এবং যদি তা হয় থাকে তারজন্য দায়ী কে ? তাঁরা বলেন যে এই উপত্যাকার বহুস্কুলে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, নেই পাকা গৃহ, এমনকি নেই শৌচালয়ও যারজন্য মহিলা শিক্ষক বা কর্মীদের প্রচন্ড অসুবিধা ভোগ করতে হয়। অল্প বৃষ্টিতেই প্লাবিত হয় অনেক বিদ্যালয় কক্ষ। কিন্তু এরপরও শিক্ষক বা ছাত্রদের ক্ষেত্রে মেধার অভাব নেই বরাক উপত্যকায়। তাই উপরোক্ত ব্যাপারে আবার বৈষম্যের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সরকারকে তাই এই ব্যাপারেও উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে স্পষ্টীকরণ দিতে হবে বলে এদিন দাবি জানান তাঁরা।একই সাথে বরাকের সমস্ত স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকারকে সচেষ্ট হবার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।
কোন মন্তব্য নেই