প্রভাস কুমার গুপ্ত নিজেকে অন্ধকারে রেখেও সবাইকে আলোর পথ দেখিয়েছেন
অমল
গুপ্ত, কলকতা : পশ্চিমবঙ্গের
আলো আধারি এক গ্রাম, যে গ্রামে আলো সব নিভে
গেছে। আলোর পথ দেখানো
উজ্বল মানুষগুলো সব চলে
গেছে। পরে আছে বিশাল এক তেঁতুল গাছ, বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত
এই গাছ গ্রামের উজ্জ্বল অতীতকে ধরে
রেখেছে। এই গ্রামের এক উজ্জ্বল পুরুষ জীবনের
শেষ প্রান্তে এসেও পরিবারের উজ্বল
স্মৃতি আগলে পড়ে আছেন। সবার
জন্যে তিনি, তার
জন্যে কেউ নেই। এক লাইন কালি কলম খরচ করতেও কৃপণতা,
সেই মানুষ সম্পর্কে অমৃত
ভূমি চারধাম, ওদের
কাছে ভারত মহান নয় বই এর লেখক
অশোক গুপ্ত বলেন এখন কেউ দাম দিচ্ছে না কিন্তু মৃত্যুর পর
সঠিক মূল্যায়ন হবে এবং সমাজ স্বীকৃতি
দেবেই দেবে। বলেন পরিবারের
উজ্জ্বল পুরুষদের না জানা
না বলার অনেক কথা লিপিবদ্ধ করে গেছেন। নিজের কথা কমই বলেছেন। তার ইংরেজি সাহিত্যে পান্ডিত্য অসীম জ্ঞান,
মানুষের কাছে অজানা রয়ে গেল। প্রায়
অর্ধশতাব্দী শিক্ষকতা করে বহু
মূল্যবান বই লিখে পত্নীকে হারিয়ে ৮৫ বছরের
জীবনে শুধুই স্মৃতি
আর সোনালী স্মৃতি, সংস্কৃতির গবেষক
প্রণব আচার্য কান্দি নামাতে ওই আলো
আঁধারী গ্রামের গুপ্ত
বংশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেছেন।
প্রভাস কুমার গুপ্তা সেই
পরিবারের সু সন্তান
ও আন্দুলিয়া গ্রামের গুপ্ত
পরিবারের দুই বিপ্লবী তারাপদ গুপ্ত এবং
প্রফুল্ল গুপ্ত সম্পর্কে
কলম ধরেছেন। গুপ্ত পরিবারের আদি পুরুষ যাদব গুপ্ত
মুর্শিদাবাদ জেলার প্রথম
ব্যাচের স্নাতক শিব নাথ
গুপ্ত, সমসাময়িক কৃতি
সন্তান রামেন্দ্র সুন্দর
ত্রিবেদী সম্পর্কে কলম ধরেছেন। ছাত্র
সমাজের কল্যাণে ইংরেজি
গ্রামার লিখেছেন। কি লেখেন নি? তাকে
নিয়ে কেউ লিখেছেন কিনা
জানা নেই। কান্দি জেল রোডের বাড়িতে পত্নী
সান্ত্বনার স্মৃতি বুকে
নিয়ে আবছা চোখে অসুস্থ শরীরে মানুষ
খোঁজেন, যারা
আলোর পথ দেখাবেন।
তাঁরই
কলমে এক কবিতা,"ভালো আছি বেশ আছি"। নামে এক অবক্ষয় জীবনের
কথা যেখানে গলা পচা
সমাজের ছবি ধরেছেন তিনি আর কেউ নন। তিনি প্রভাস কুমার
গুপ্ত, তাঁরই কলমে... ভি সি আর, ভি সি ম্যাগি চাওমিন,
টুসুম টাসুম, রক্তাক্ত নায়কের বিকৃত মুখ। ফুচকা, বিউটিপার্লার, ববচাট,
বিকেলে ককটেল পার্টিতে প্যাটিস,
মোগলাই পরোটা, বিস্মতির মর্গে রবীন্দ্র
নাথ, নজরুল আধুনিকতার দুর্গন্ধ
বাতাসে। ড্রাগ
বিরোধী বক্তৃতার আগে হুইস্কিতে গলা ভেজানো। ...সমাজতন্ত্রের শব দেহে শকুনির উল্লাস।
এই কবিতা প্রমান করে এত কিছু
পেয়েও না পাওয়ার বেদনা প্রভাস
কুমার গুপ্তকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। কান্দি জেমো
এন এন হাই স্কুলে
প্রায় অর্ধ শতক সাফল্যের সঙ্গে শিক্ষকতা করেও এক অতৃপ্তি
তাকে গ্রাস করেছে। পরিবারের
নিকট জনকে আলোর পথ দেখাতে গিয়ে নিজেই যেন অন্ধকারে ডুবে
গেছেন। না তা সত্যি নয়। অপরের জীবনকে
আলোকিত করেছেন তার জীবন ও
ব্যর্থ হতে পারে না। মৃত্যুর
পরেই মূল্যায়ন হয়। যে
মূল্যায়নে জীবনের অন্ধকার
কেটে যাবে। আলোয় আলোকময় হয়ে
উঠবে।









কোন মন্তব্য নেই