দু:সময়ে মিউজিক থেরাপিতে মানুষকে ভালো রাখতে চান রোমান্টিক চন্দ্রাণী
নয়া ঠাহর প্রতিবেদন, আগরতলা : এই অতিমারির সময়ে মানুষকে গান শুনিয়ে ভালো রাখতে চান শিল্পী চন্দ্রানী চ্যাটার্জী। মিউজিক থেরাপিতে মানুষকে সুস্হ রাখার পন্হায় বিশ্বাসী চন্দ্রানী এক বছরেরও বেশী সময় ধরে নানান সাংস্কৃতিক সংগঠনের পেইজে, নিজের মুখবইয়ে লাইভে এসে গান গেয়ে চলছেন অবিরত। এই দুঃসময়ে মানুষের মনোবল বাড়িয়ে মানুষকে ভালো রাখতে চেয়ে নিজের সামাজিক দায় মেটাচ্ছেন বাংলার কোলফিল্ডের মেয়ে - জোনাকি। জোনাকি - চন্দ্রানীর আদুরে ডাকনাম। রানীগঞ্জে জন্ম ও আসানসোলে বেড়ে উঠা চন্দ্রানী সব ধরনের গান গাইলেও রবীন্দ্রনাথের গানের প্রতি তাঁর অমোঘ আকর্ষণ তৈরি হয় স্কুলবেলাতেই। আসানসোলের মনিমালা গার্লস হাইস্কুলে পড়াশুনা করার সময়তে বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন থেকে পাশ করে চাকুরীতে যোগ দেওয়া স্কুল শিক্ষকরাই মূলত চন্দ্রানীকে রবীন্দ্রপ্রেমি করে তুলেছিলেন। সেই থেকেই রবীন্দ্রনাথের গান, লেখা,জীবনর্শন ভীষণভাবে টানে এই গুনী বাঙালী মেয়েকে। জ্ঞান হওয়ার পর মা সাধনা চট্টোপাধ্যায়ের কোলে বসে গানের হাতেখড়ি মিস্টি মেয়ে জোনাকির । প্রথাগত ভাবে গান শেখা শুরু দিদি ইন্দ্রানী চট্রোপ্যাধায়ের কাছে। আসানসোল, রানীগঞ্জে দুরন্ত শৈশব, কৈশোর কাটিয়ে 'বর্ধমানের ব্রেবোন' - আসানসোল গার্লস কলেজ থেকে ভূগোল অর্নাস নিয়ে পাস করে ১৯৯৭ সালে কলকাতা পাড়ি দেন চন্দ্রানী। কিশোরী জোনাকির ঝোঁক তখন ফ্যাশান ডিজাইনিং - র দিকে। কলকাতায় ফ্যাশান টেক্সটাইল ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনার সময়তেই সুন্দরী চন্দ্রানী প্রেমে পড়েন শান্তিনিকেতন থেকে ফাইন আর্টস পাস করা সুব্রত ঘোষালের।পরিচয়ের এক বছরের মধ্যেই বিয়ে করে ফেলেন তাঁরা। স্বামী সু্ব্রত ঘোষাল এখনো দারুনভাবে উৎসাহিত করেন তাকে চন্দ্রানীর কথায়, সু্ব্রত আমার স্বামীর চেয়েও বেশী বন্ধু। এখনো ও আমার প্রেমিক। কলকাতায় এসে গান শিখেছেন স্বাগতালক্ষী দাশগুপ্তা, শ্রমণা চট্টোপাধ্যায়, শুভদীপ মুখার্জী, দেবাশীষ রায় চৌধুরীদের কাছে।অল্প সময়ে ফ্যাশান টেক্সটাইল ডিজাইনিং' র কাজে বেশ নামডাক হলেও চন্দ্রানী নানা কারনে নিজেকে জড়িয়ে নেন, শিক্ষকতার কাজে। ২০০৬ সালে পান শিক্ষকতার চাকুরী। উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুর আনন্দমঠ গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা চন্দ্রানীর পেশা শিক্ষকতা হলেও গানের নেশায় বুঁদ হয়েই বেঁচে থাকতেন চন্দ্রানী। ২০১২ সাল থেকে সংগীতের সঙ্গে ঘর বাঁধার জেদ আরও বাড়িয়েছেন এই তরুনী। গানলাইভে নিজের সুরেলা কন্ঠের জন্য প্রশংসা পেয়েছেন দেশ - বিদেশের বাংলা গানের শ্রোতাদের। সব ধরনের গান গাইলেও ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্র সংগীতের প্রতি আালাদা টান রয়েছে চন্দ্রানীর। ২০১৬ সালে শিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায়, শম্পা কুন্ডু, অগ্নিভ বন্দোপাধ্যায়দের সঙ্গে, 'যে পথে প্রেম' - বাংলা অাধুনিক গানের এলব্যামে গলা মেলান চন্দ্রানীও। ২০১৭ সালে নিজের একক মৌলিক গানের এলব্যাম, এই মন খোঁজে। এলব্যামের শ্রাবন সাজ গানটি দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো সামাজিক মাধ্যমে। কলেজবেলায় জড়িয়েছিলেন বাম ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গেও। কলেজের নানান অনুষ্ঠানে গাইতেন গনসংগীতও। শিল্পী উৎপলেন্দু চৌধুরীর সঙ্গে গনসংগীতের গাওয়ার স্মৃতি এখনও উজ্বল মনের মনিকোঠায়।খ্যাতনামা রবীন্দ্র শিল্পী সূচিত্রা মিত্রের কাছ থেকে স্কুলবেলায় পাওয়া অটোগ্রাফ, - আরো বড় হও, লম্বায় নয়, মানুষ হিসাবে - এটাই জীবনের সেরা প্রাপ্তি চন্দ্রানীর।
কোন মন্তব্য নেই