Header Ads

কাছাড় কাগজকলকে নিলাম করে বিক্রির সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট

শিলচর : গত পয়লা জুন সরকারি লিকিউডেটর  কুলদীপ ভার্মা কাছাড় ও নগাও কাগজকল সহ এইচ পি সি সমস্ত সম্পত্তি নিলামে বিক্রির জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। সরকারের এই অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

ফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে আহুত এক জরুরি সভায় এই ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিএফ আহ্বায়ক পার্থ দাস বলেন যে  সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত শেষ সংবাদ অনুযায়ী আমরা জানতাম যে ন্যাশনাল কোম্পানি ল্য এপ্যেলেট ট্রাইব্যুনাল  ,যা এন সি এল টির সিদ্ধান্তের আইনি বৈধতা যাচাই করা এবং তাদের সেই অনুযায়ী নির্দেশ দেবার জন্য নিয়োজিত , তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারকে এই কাগজকল পুনরায় চালু করা এবং কর্মচারীদের বকেয়া মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর গত ১০ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকার থেকে এই দুটো মিলের ব্যাপারে  সিদ্ধান্ত নেবার জন্য সময় চেয়ে এন সি এল টির কাছে আবেদন জানান। এমন কি নির্বাচনী প্রচারে এসে খোদ কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে এই রাজ্যের বেকার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে তারা কাছাড় ও নগাও কাগজকলের পুনরুজ্জীবনের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নেবেন। বিডিএফ আহ্বায়ক বলেন যে এইসবের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী ছিলাম যে নির্বাচনের পর কাগজকলের সমস্যার অবশ্যই সমাধান হবে। কিন্তু মিলগুলো বিক্রির জন্য গতকালের এই বিজ্ঞপ্তি দেখে আমরা স্তম্ভিত হয়ে পড়েছি। এই পদক্ষেপ নেওয়া হলে  একদিকে যেমন কর্মচারীদের বকেয়া বেতন ভাতা পাবার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে তেমনি এই কাগজকলকে কেন্দ্র করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মিলিয়ে যে ২ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকতে পারত তারও ইতি ঘটবে। তিনি বলেন আসামের মতো একটি অনুন্নত রাজ্য ,যেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ এমনিতেই সীমিত সেখানে এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত কি করে রাজ্য সরকার মেনে নিতে পারেন তা তার মাথায় ঢুকছে না।

বিডিএফ এর আরেক আহ্বায়ক জহর তারণ বলেন যে এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী দুটো কাগজকল সহ এইচ পি সির সমস্ত সম্পত্তির বিক্রয় মূল্য বা রিজার্ভ প্রাইস ধার্য্য করা হয়েছে ১১৩৯ কোটি টাকা। তিনি বলেন যে অথচ কিছু সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে আমরা জানতে পেরেছি বর্তমানে দুটো মিলের অধীনস্থ জমি রয়েছে ২০০০ একর। এছাড়া যন্ত্রপাতি সহ দেশের  বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে রয়েছে এইচ পি সির অনেক সম্পত্তি। তিনি বলেন যে কিছু বিশ্বস্ত সূত্র থেকে এই সবকিছুর বিক্রয়মূল্য ৫০০০ কোটি টাকার কম হবেনা বলে খবর পাওয়া গেছে। তার প্রশ্ন  কোরোনা কালীন এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি করে  এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া কি এতই জরুরী ছিল ? তিনি বলেন যেহেতু এইচ পিসির উক্ত সমস্ত সম্পত্তি সরকারি টাকায় কেনা তাই এর বিক্রয়মূল্য কম হচ্ছে কিনা ,তা জানবার একশো শতাংশ অধিকার  জনগনের রয়েছে। তিনি তাই সরকারকে অবিলম্বে এই ব্যাপারে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার জন্য দাবি জানিয়েছেন।

বিডিএফ এর সদস্যরা এদিন একযোগে নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে এই বিজ্ঞপ্তিকে প্রত্যাহার করে অবিলম্বে আবার কি করে কাছাড় কাগজকলকে  সচল করা যায় সেদিকে নজর দেবার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর কর্মদক্ষতাকে প্রশংসা করে   এই ব্যাপারে সদর্থক ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন বলে মন্তব্য করেন।একই সঙ্গে তাদের বক্তব্য যে সরকার যদি এরপরও এই ব্যাপারে একগুঁয়ে মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যান তবে বরাকের বাসিন্দাদের নিয়ে এই ইস্যুতে যথাসাধ্য আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহন করতে বাধ্য হবে বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেসবার্তায়  এই খবর  জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.