বাংলা বিজেপি বড় ধ্বস, মুকুল রায় দিদির হাত ধরলেন
দেবকিশোর চক্রবর্তী, কলকাতা : শেষ পর্যন্ত সব জল্পনার
অবসান ঘটিয়ে বিজেপি ছেড়ে নিজের ঘর তৃণমূলেই ফিরলেন বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য| শুক্রবার বিকেলে তৃণমূল ভবনে গিয়ে দলনেত্রীকে সাক্ষী রেখে ‘ঘর ওয়াপসি’ হলেন মুকুল রায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক
বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসে ঘরে ফেরার কথা নিজেই জানালেন| তৃণমূলে ফিরলেন একা নয় , পুত্র শুভ্রাংশুর রায়কে সঙ্গে নিয়ে|
এই প্রত্যাবর্তণের ফলে বঙ্গ রাজনীতিতে শুরু হয়ে গেলে 'খেলা ভাঙার খেলা'|
এদিন সকালে পুত্র শুভ্রাংশু -সহ ঘনিষ্ঠদের নিয়ে একটি বৈঠক
করেন মুকুল। সেখানেই তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত এবং ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা
করেছেন। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরেই বিজেপি-র
থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন মুকুল। দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেও যাননি। কার্যত খানিকটা অনীহা নিয়েই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে ভোটে
দাঁড়িয়েছিলেন। সে কারণে ভোটের আগে এবং পরে তাঁকে কোনও সাংগঠনিক ভূমিকায় সে ভাবে
দেখাও যায়নি।
মুকুলও প্রচারে নেমে মমতা-বিরোধী একটি শব্দও উচ্চারণ
করেননি। ফলে তখন থেকেই অতীতের ‘বৈরিতা’ অনেকটাই কমতে শুরু করে। দলনেত্রী স্বয়ং ভোটের আগে থেকে মুকুল সম্পর্কে প্রকাশ্যেই
সহানুভূতিশীল থেকেছেন। তাঁর বক্তব্যে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তুলনা টানতে গিয়ে
বলেছেন, মুকুল ততোটা খারাপ ছেলে নয়|
মুকুল রায় ভোটে জিতে বিধায়ক হয়েছেন বটে। কিন্তু শপথ নেওয়া
ছাড়া অন্য কোনও ভূমিকায় তাঁকে দেখা যায়নি। বরং স্ত্রী-র অসুস্থতা নিয়ে তাঁর সঙ্গে
বিজেপি-র দূরত্ব বাড়ছিল। তার পাশাপাশিই পাল্লা দিয়ে দূরত্ব কমছিল তৃণমূলের সঙ্গে। সব মিলিয়ে পদ্মশিবিরের খুব স্বচ্ছন্দে ছিলেন না মুকুল।
মুকুল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরায় সাম্প্রতিক কালে সম্ভবত
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা দিতে পারবে তৃণমূল।
কারণ, তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে
ওজনদার নেতাদের যাওয়া শুরু হয়েছিল মুকুলকে দিয়েই। তাঁর পর একে একে জোড়াফুল থেকে
পদ্মফুলে নাম লিখিয়েছিলেন অর্জুন সিংহ, সব্যসাচী দত্ত, শোভন চট্টোপাধ্যায়রা। আর ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। মুকুল তৃণমূলে ফিরে এলে
তাঁদের কাছেও একটা বার্তা যাবে। যেমন রাজনীতিক মহলে জোরাল সঙ্কেত দেওয়া যাবে এই
মর্মে যে, তৃণমূল থেকে গিয়ে বিজেপি-র সঙ্গে ঘর করা যায় না।
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন আরও বহু বিজেপি নেতা তৃণমূলে আসবে।
কোন মন্তব্য নেই