Header Ads

মানুষ আজ দিশাহারা করোনা, ব্ল্যাক ফ্যাঙ্গাস, আমফনের পর তাউকটে, মৃত্যু মিছিল

অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি: বছরখানিক থেকে মানুষ দিশাহারা, শ্রমজীবী গরিব মানুষের   নাভিশ্বাস উঠছে। অতিমারি করোনা  সংক্রমণ লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত প্রতিদিন মৃত্যু  মিছিল   মর্গে লাশের স্তুপ, আধা জ্বালিয়ে মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে  মৃতদেহ জ্বালাবার জ্বালানো কাঠ নেই হাসপাতালে বেড নেই, অক্সিজেন নেই, অক্সিমিটার নেই, রেমিডিসিভি ইনজেকশন নেই   বিনা অক্সিজেনে মানুষ মরছে, তা কোনোদিন আমরা স্বাধীন ভারতের নাগরিক  ভেবেছিল? এর মধ্যে  একশ্রেণীর অসৎ  দুর্নীতিবাজ মানুষ দেদার কালবাজারে অক্সিজেন রেমিডিসিভির  বিক্রি করে মুনাফা লুটছে  তাদের কোনো শাস্তি হয় না।  ডেড বডি নিয়ে  দুর্নীতি, হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত  মৃতদেহ ছেড়ে নিকট  পরিবারের মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে। মৃত্যর পর  নিজের মা-বাবা ভাই-বোন  দূরে সরে যাচ্ছে। এক সাদা কাপড়ে মৃতদেহ ঢেকে দেওয়ার পর তাও চুরি হয়ে যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের বাগপতে  পুলিশ  জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে ৫০০ টির বেশি বেড  কভার, প্রায় ৩০০ শাড়ি ও পোশাক  উদ্ধার করেছে। এই পোশাকগুলো  ধুয়ে সাফ করে  দামি  কোম্পানির   স্ট্যাম্প মেরে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।  সেই সংক্রমিত পোশাক বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে। আর  আমানবিক, নিষ্ঠুরতার  আকাশ সমান লোভ লালসার ছবি কত দেখতে হবে।

আজ ১৫মে  শনিবারের বারবেলা আর্ন্তজাতিক জ্যোতিবিজ্ঞান দিবস, আগামী ২৬মে এই বছরের প্রথম চন্দ্রগ্রহণ  রক্তিম চাঁদ, বিরল মহাজাগতিক  দৃশ্য দেখা যাবে। এর মধ্যে  প্রকৃতির প্রতিশোধ  তাওকোটে ধেয়ে আসছে। আমফানে পশ্চিমবঙ্গকে ধ্বংস করেছে এবার ১৭ মে থেকে কেরল গুজরাট মহারাষ্ট্রের সমুদ্র উপকূলকে  সামুদ্রিক ঝড়ে তছনছ করবে। রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। এই মহারাষ্ট্রে  করোনার প্রকোপে মানুষ  দিশেহারা।  সমুদ্র উপকূলীয়  শহর গোয়ার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত ৪/৫ দিনে ৭৫ জন করোনা রুগী অক্সিজেন মারা গেছে। এরপর ঝড় তুফান। মানুষ কোথায় যাবে?   দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রায় প্রতিদিন জরুরি বৈঠক করেছেন। গতকাল বলেছে, মানুষের  দুঃখ কষ্ট উপলব্ধি করতে পারছি। কষ্ট লাঘবের সব চেষ্টা করা হচ্ছে। ভারতে দুই  বিশাল নদী   গঙ্গা, যমুনা, এশিয়ার বৃহত্তম নদ ব্রহ্মপুত্র আজ দূষিত। পলিউসন কন্ট্রোল বোর্ড   বলেছে, এই জলে  ব্যক্টেরিয়া কলিফর্ম আছে। এই জল পান করলে কলেরা, টাইফয়েড প্রভৃতি রোগের   সৃষ্টি হবে। কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে  জানিয়েছে  ব্রহ্মপুত্র নদ গঙ্গা যমুনা সহ দেশের ৪৫ টি নদীর জল দূষিত হয়ে গেছে।  নীতি আয়োগ জানিয়েছে, আগামী ২০৩০ সালে দেশের  ৪৫ শতাংশ মানুষ  পানীয় জলের তীব্র অভাবে ভুগবে। এই পবিত্র গঙ্গা   আজ দূষিত, করোনার সময় এলকোহল  দিয়ে হাত ধুতে হচ্ছে। অরুণাচল প্রাদেশে  ব্রহ্মপুত্র নদের নাম সিয়াং  এই নদীর  জল দূষিত হয়ে গেছে বলে অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খান্দু  জল না  খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। করোনা সংক্রমণে মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হচ্ছে গঙ্গা নদীতে। বারাণসীকানপুর, হাজীপুর   পাটনা   থেকে খবর আসছে। পশ্চিম বঙ্গের ফরাক্কা বারেজে আটকে আছে বহু মৃতদেহ। মালদহ জেলার পুলিশ  জনগণকে সতর্ক করে দিয়ে অনুরোধ করছে গঙ্গার জল  না ব্যবহার করার জন্যে। মানিকচকে লাউড স্পিকারে  এই অনুরোধ করা হচ্ছে। মমতা সরকার নির্দেশ দিয়েছে মৃতদেহগুলো নদী থেকে তুলে জীবাণু মুক্ত করে মাটির পাঁচফুট গভীরে পুঁতে দেবার।  তা অজ্ঞাতপরিচয়  মরদেহগুলির প্রতি উপযুক্ত সম্মান ও মর্যাদা  প্রদানের কোথাও বলা হয়েছে।  গঙ্গা নদী ব্যাকটেরিয়াতে ভরপুর, এক সার্ভে রিপোর্ট শুধু গঙ্গা নদীতে ৩৪০০০ এম এন পি কলি ফর্ম  ব্যক্টেরিয়ার সন্ধান পাওয়া গেছে। তারপর  করোনসংক্রমিত  মৃতদেহ জলে ফেলা দেওয়া হচ্ছেকি   ভয়ানক সংক্রমণ ছড়াবে তা ভাবলে গায়ে কাঁটা দেবে। কিন্তু সরকার নির্বিকার। ২৫৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ গঙ্গার  প্রায় ৫০০০ কিলোমিটার বারাণসী, কানপুর, পাটনা,  কলকাতা   প্রভৃতি নগরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত। বারাণসীর, মনিকর্নিকাহারিস চন্দ্র ঘাটর কিনারাতে   প্রতিবছর  ৩২ হাজার মরদেহ   জ্বালানো হয়। এর ফলে প্রায় ৩০০ টন ছাই গঙ্গার জলে ফেলে দেওয়া হয়। এক সংবাদপত্রের রিপোর্টে একথা বলা হয়েছে।  পবিত্র গঙ্গা নদীতে মরদেহ ভাসালে মোক্ষলাভ হবে এই কুসংস্কার  গঙ্গাকে অপবিত্র ও দূষিত করছে। এখন প্রতিদিন প্রায় ২০০০ টি আধা পোরা দেহ   ভেসে  যাচ্ছে বলে সংবাদ সূত্রটির দাবি।   প্রতিদিন  করোনা  বেড়েই চলেছে। আজ যদিও জাতীয় সংবাদপত্র এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক দাবি করেছে সংক্রমণ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে প্রতিদিন লাখ ৫০ হাজার থেকে কিছুটা কমেছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সন্থা বা হু-র প্রধান   ট্রেডর্স আধানম  গ্র্যাবিয়াস  বলেছেন, ২০২০ সালের থেকেও  ভারতে  অতিমারি তীব্র আকার ধারণ করবে। জাপানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।  সাধারণ মানুষ  কোনটা  বিশ্বাস করবে?  Roiter এক  আর্ন্তজাতিক সংবাদ সন্থা, তার   সাংবাদিক সৈয়দ আলী হায়দর  সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিওতে বলেছেন হু বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা  করোনা সংক্রমণে মৃতদের পোস্টমর্টেম করতে দিচ্ছে না।  হু আমেরিকাবিরুদ্ধে কিছু বলে না। কিন্তু রাশিয়া বিশ্বে প্ৰথম করোনা আক্রান্ত  মরদেহ পোস্টমর্টেম করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। বডি চিড়ে দেখেছে  এক  তেজস্ক্রিয়   তাপ  অনুভব  করা  যাচ্ছে। ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। ওই সাংবাদিক বলেন, জাপানের নাগাসাকি হিরোশিমাতে আজ ও বোমা বিষ্ফোরনের ফল  ভুগছে। শিশু পঙ্গু হয়ে  জন্মাচ্ছে। তিনি বলেন, পোস্টমর্টেম করার পর   বিশেজ্ঞ ডাক্তাররা বলেছেন, শুধু এস্পিরিন বা   ডিসপিরিণ জাতীয় ট্যাবলেট  খেলেই রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হবে। এরপর ১৪ হাজার করোনা রুগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়।  মানুষ কোনটা বিশ্বাস করবে? সাধারণ মানুষ আজ  লকডাউন  নাইট কারফিউ এর বৃত্তে পড়ে রুজি রোজকার হীন হয়ে দিশেহারা অবস্থা। আর কত দিন ঘর বন্দি হয়ে থাকতে হবে?

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.