Header Ads

২০ লক্ষ লোকের টিকাকরণের ব্যাবস্থা করতে হবে প্রশাসন ও আগামী সরকারকে - বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট

শিলচরঃ ভারতবর্ষের কোভিড পরিস্থিতির চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এক জরুরী সভায় মিলিত হয়ে বরাকের স্বার্থে কিছু দাবি নিয়ে সরব হলেন বিডিএফ এর সদস্যরা।

ফ্রন্টের মূখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় এদিন বলেন যে মূলতঃ কেন্দ্র সরকারের উদাসীনতা এবং পরিকল্পনার অভাবে অবস্থা আজ এই পর্যায়ে এসেছে। তিনি বলেন দিল্লি , হরিয়ানা ইত্যাদি রাজ্যে রোগীর জন্য হাসপাতালে শয্যা পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া যাচ্ছেনা অক্সিজেন। ফলে প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন প্রচুর রোগী। বর্তমান কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থার জন্য সরকার নিজেই দায়ী। তিনি বলেন গত বছরের নভেম্বরে বিজ্ঞানীরা এই দ্বিতীয় ঢেউ আসার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছিলেন সরকারকে।‌ কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করে সরকার বিশাল বিশাল নির্বাচনী সমাবেশ করেছে বা তার অনুমতি দিয়েছে। প্রয়াগে লক্ষ লক্ষ লোক কুম্ভ মেলা উপলক্ষ্যে জমায়েত হয়েছেন যারা এই ভাইরাসের সংক্রমণ সারা দেশে ছড়িয়েছেন। হোলি সহ সমস্ত উৎসব পালনের ব্যাপারে ছিলনা কোন বিধিনিষেধ। এমনকি নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এতটাই ব্যাস্ত ছিলাম যে কোভিডের জন্য বিজ্ঞানীদের নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় টাস্ক ফোর্সের সভা পর্যন্ত হয়নি গত তিনমাস ধরে। আমাদের এই রাজ্যে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী পর্যন্ত আসামে কোভিড নেই এবং সেজন্য মাস্ক পরার দরকার নেই বলে কিছুদিন আগেই মন্তব্য করেছেন। এসবের ফলশ্রুতিতেই আজ কাতারে কাতারে রোগী মারা যাচ্ছেন ,সরকারি অবহেলার মাশুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। তিনি আরো বলেন আসাম তথা বরাক উপত্যকার অবস্থা ও উদ্বেগজনক। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমতাবস্থায় অধিকাংশের ভ্যাক্সিনেশন বা টীকাকরণ ছাড়া আর কোনো পথ নেই,অথচ এই ব্যাপারেও বিশৃঙ্খলা চলছে। তিনি বলেন যে যেহেতু হার্ড ইম্যুনিটির জন্য ৫০/৬০ শতাংশের টিকাকরণ দরকার তাই বরাকের অন্তত ২০ লক্ষ লোকের বিনামূল্যে টিকাকরণের জন্য অবিলম্বে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। তার বক্তব্য কেন্দ্রীয় সরকার কত শতাংশের টিকাদান কবে অব্দি করবে সেসব জেনে লাভ নেই। যেহেতু মানুষের জীবনের চেয়ে মূল্যবান আর কিছু হতে পারে না তাই বরাকে উল্লিখিত সংখ্যার টিকাকরণের জন্য টিকা প্রদান কেন্দ্রের সংখ্যাবৃদ্ধি সহ, টিকার সরবরাহ ইত্যাদি অবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে।

প্রদীপ বাবু আরো বলেন যে বাইরে থেকে যারাই বরাকে আসছেন তাদের কোভিড পরীক্ষার ব্যাপারে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা চলছে ফলে এই উপত্যাকায় সংক্রমণ আরো ছড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে। ইদানীং টিকল হাসপাতালে বিমান যাত্রীদের সাথে ঘটে যাওয়া বিশৃঙ্খলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে বিমান,রেল বা স্থলপথে যারাই বরাকে আসছেন অবিলম্বে তাদের কোভিড পরীক্ষার সুব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। 

বিডিএফ যুব ফ্রন্টের ‌আহ্বায়ক কল্পার্নব গুপ্ত বলেন যে গতবছর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শিলচরে যে ৮০০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল  স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার কি হল ? শিলচরের মাননীয় সাংসদ রাজদীপ রায় যেহেতু সর্বাদাই প্রাক্তন স্বাস্থ‌্যমন্ত্রীকে করিৎকর্মা বলে উল্লেখ করে থাকেন এমনকি উনিশে মে পরীক্ষা দিনবদলের কৃতিত্বও তার  - এইসব বড় বড় কথা বলছেন তিনি এই ব্যাপারে চুপ কেন ? যদি তার এই উপত্যাকার লোকেদের প্রতি বিন্দুমাত্র দরদ থেকে থাকে তাহলে মন্ত্রীর সাথে কথা বলে অবিলম্বে এই কাজটি বাস্তবায়িত করে দেখান। তিনি বলেন যুবফ্রন্ট কোভিড হাসপাতাল এর ব্যাপারে তার বক্তব্য শোনার জন্য অপেক্ষা করে আছে।

প্রদীপ দত্তরায় এদিন উপত্যাকার জনগণকে নিজেদের স্বার্থে সব ধরনের কোভিড প্রটোকল মেনে চলার আবেদন জানিয়েছেন। তার বক্তব্য সরকারের উপর ভরসা না রেখে নিজেদেরই সাবধান থাকতে হবে।সব রাজনৈতিক দল ,সংগঠনকেও সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.