Header Ads

ভারত বন্ধ সফল করার আহ্বান হাইলাকান্দির অল ইন্ডিয়া কিষাণ, ক্ষেতমজুর সংগঠন গুলো-র

জপমালা চক্রবর্তী, হাইলাকান্দি : দিল্লীতে আন্দোলনরত কৃষকদের ডাকে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে আগামী ৮ ই ডিসেম্বর ভারত বন্ধ কে সফল করার জন্য সর্বস্তরের জনগণের কাছে আহ্বান জানায় অল ইন্ডিয়া কিষাণ ও ক্ষেতমজুর সংগঠন এবং অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন এর হাইলাকান্দি ইউনিট। প্রসঙ্গত, এই আইন অনুযায়ী চাল, ডাল, আটা, আলু, চিনি, পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং মজুত করার ঊর্ধসীমা ও তুলে দেওয়া হয়েছে। ১৯৫৫ সালে এই আইনের উদ্দেশ্যই ছিল অভাবের সময় সরকার সরাসরি কৃষকদের থেকে খাদ্যশস্য কিনে তা গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করবেন। এখন থেকে কৃষকদের থেকে এই সয়স্ত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় করার জন্য সরকার আর বাধ্য না, সাথে কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা এখন থেকে যত ইচ্ছা দ্রব্যাদি অনির্দিষ্টকালের জন্য গুদামজাত করে কৃত্রিমভাবে বাজারের মূল্য নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।

দ্বিতীয়ত, আইনটি The Farmers Agreement of Price Assurance and Farm Services Bill 2020, যার নাম দেওয়া হয়েছে মূল্য নিশ্চয়তা। এই বিল নাকি কৃষকদের আয় নিশ্চিত করবে ! কৃষকদের সাথে সরাসরি পেপসিকো, আদানি, রিলায়েন্স এর মত বড় বড় কোম্পানিরা চুক্তি করতে পারবে। সেইসঙ্গে বড় বড় কোম্পানি গুলোর সাথে কৃষকদের চুক্তি হওয়ার পর কোনো কারণে উৎপন্ন ফসল পছন্দ না হলে তা কিনতে কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে ফসল নষ্ট হলে সেই আর্থিক ক্ষতির দায় নিতে কোম্পানিগুলো বাধ্য থাকবে না। এদিকে সরকার বলছে সেক্ষেত্রে ক্ষতির মূল্য পেতে চাষীরা আইনের সাহায্য নিতে পারেন। কিন্তু ধনকুবের পেপসিকো-দের সাথে দেশের গরীব খেটে খাওয়া চাষীদের কোর্টের আইনি লড়াই লড়ার মতো অর্থ না থাকার কারণে তারা তাদের ন্যায্য বিচার পেতে অক্ষম। 

তৃতীয়ত, The Farmers Produce Trade and Commerce Bill 2020, এর ফলে ক্রেতা ব্যবসায়িক সংস্থাগুলির সাথে কৃষকরা স্বাধীনভাবে সরাসরি কেনাবেচা করতে পারবে। এক্ষেত্রে সরকার আর কোনোরকম হস্তক্ষেপ করবে না। স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ মেনে খরচের দেড় গুণ দাম কৃষকদের জন্য সুনিশ্চিত করতে হবে সেই দায়ভার থেকে সরকার হাত তুলে নিলো। এমনকি এই বিলে বিদ্যুতের সরবরাহ সম্পূর্ণ বেসরকারিকরণ, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি এবং বিদ্যুতে কৃষককে ভর্তূকি বন্ধ করার ব্যবস্থার ও উল্লেখ আছে।

চতুর্থত, যে দেশের জনসংখ্যার শতকরা ৫২ ভাগ পরিবার কৃষির উপর নির্ভরশীল, যে দেশের কৃষিকাজের সাথে যুক্ত ১৪.৬৫ কোটি পরিবারের মধ্যে ৫৪.৬০ শতাংশ পরিবার ভূমিহীন, যে দেশের সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ২০১৬ সালের পর থেকে কৃষক  আত্মহত্যার রিপোর্ট প্রকাশ করা বন্ধ করে দেয়। দেশের নিপীড়িত শোষিত অন্নদাতা এই কোটি কোটি কৃষকরা আদৌও ওই কর্পোরেটদের সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতে পারবে কি? প্রত্যেক ১২ মিনিট ৩৭ সেকেণ্ডে আমাদের দেশে একজন করে কৃষক আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। এই দেশে কোটি কোটি টাকার কর্পোরেট ঋণ মুকুব হলেও কৃষি ঋণ আর মুকুব হয়না। কৃষকদের পরিবারগুলোর একটু ভালো করে বাঁচতে চাওয়ার স্বপ্নগুলো আর সত্যি হয়না। তার বদলে উল্টো এভাবেই সরকার নতুন নতুন বিল এনে প্রতিদিন প্রতিমূহুর্তে তাদের পায়ের তলায় পিষে মারতে চায় বলে মত প্রকাশ করেন সংগঠনের কর্মকর্তারা।  এই খবরটি বিশেষ সূত্রের।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.