Header Ads

শত বছরের বন্ধু 'কান্দি বান্ধব' কথা রেখেছে, আজও উজ্জ্বল ব্যতিক্রম শক্ত জমিতে দাঁড়িয়ে

 


অমল গুপ্ত, কান্দি, মুর্শিদাবাদ : কেউ কথা রাখে না কথা দিয়েও নয়শুধুই মিথ্যা আশ্বাস কান্দিতে রেল হবে, কান্দির মানুষ ট্রেনে চেপে শহরে পৌঁছবে, কান্দির মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জল পাবেন, গঙ্গার জল এনে খাওয়ানো হবে স্বাস্থ্যসেবা, বাস পরিবহন, রাস্তা-ঘাট পরিকাঠামো উন্নত হবে? কোথায় সব আশ্বাস? কান্দি সদর শহর বহরমপুর যাবার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছেকেন রণগ্রাম সেতু বার বার ভাঙছে? এর পিছনে রাজনীতি, লাভ লোকসানের হিসাব আছে বলে অধিকাংশ ভুক্তভোগী মনে করেন। কেন সাইথিয়া পর্যন্ত রাস্তা ভালো করা হলো না?  কেউ কথা রাখে না, হ্যাঁ কথা রেখেছে কান্দির মত ছোট শহর থেকে প্রায় একশো বছর থেকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রকাশিত বাংলা সাপ্তাহিক কান্দি বান্ধব কিন্তু কথা রেখেছে, অনেক ঝড়-ঝাপটা, আর্থিক দুরবস্থার মাঝে ১৯২১ সালের কান্দি বান্ধব আজও শক্ত জমিতে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। যা কলকাতার মত নগর মুর্শিদাবাদের মত জেলাতেও দ্বিতীয়টি নেই। একশো বছর অতিক্রম করতে চলেছে ঝড়, মুর্শিদাবাদ বীক্ষণ, প্রভৃতি সংবাদপত্র চলছে। দাদা ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত জঙ্গিপুর সংবাদ পত্রেরও পর্যন্ত অকাল মৃত্যু হল জেলার বুদ্ধিজীবী, নেতা, উপনেতার অভাব নেই বড় লজ্জার ও পরিতাপের কথা জেলার উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব শরৎ পণ্ডিত ওরফে দাদা ঠাকুরের একমাত্র স্মৃতি তার সংবাদপত্রটি রক্ষা করতে পারলেন না। রঘুনাথগঞ্জ শহরের কেন্দ্রে দেখলাম দাদা সায়েবের মূর্তি বড় অনাদরে বৃষ্টিতে ভিজছে। সংবাদপত্রের দুর্দিন চলেছে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম কান্দি বান্ধব, এককভাবে লড়ে যাচ্ছে। ১৯২১ সালে গোপাল চন্দ্র সিনহার হাত ধরে কান্দি বান্ধব আলোর মুখ দেখেছিল পরবর্তিতে দেবেন্দ্র নারায়ণ রায় সম্পদকের দায়িত্ব পালন করে ছিলেন। তারপর সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায় সম্পদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর আর পিছনে তাকাতে হয়নি তিনি পত্রিকা সম্পাদনায় কারো সঙ্গে আপোষ করেননি। রাজনীতিকে প্রশয় দেননি। নিরপেক্ষভাবে কাগজটি চালিয়েছেন।

কান্দি শহরের সাহিত্য, কৃষ্টি, নানা সৃষ্টিশীল লেখনীর ধারক বাহক কান্দি বান্ধব, কান্দিবাসীর অভাব অভিযোগ জানাবার ঠিকানা কান্দি রাজবাড়ী পথে বাণী প্রেস আগে ছিল বাসন্তী প্রেস, মুস্তাফা সিরাজ, পূলকেন্দু সিংহ, বলরাম রায় চৌধুরী, বিজয় গুপ্ত, প্রফুল্ল গুপ্ত, দীপক গুপ্ত, অসীম নাথ, রাজীব চৌধুরী, অনাদি আচার্য্য, বিশ্বজিৎ সিংহ, অমল রায়, সুহাস দাস, অপূর্ব গাঙ্গুলি প্রমুখ অসংখ্য মানুষ তাদের সৃষ্টিশীল লেখনী তুলে ধরেছেন। ত্রিদীব চৌধুরীর মত সাংসদ, বিমল চন্দ্র সিংহ, রাজ্যের মন্ত্রী, জগদীশ সিংহ, গোলবদন ত্রিবেদী প্রমুখ জেলার নেতারা কান্দি বান্ধবকে নানাভাবে সেবা করেছেন। বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ, প্রভাস গুপ্ত, আব্দুল রেজ্জাক, লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী, আব্দুল রেজ্জাক, শম্ভু দাস, পঙ্কজ ভুশন সেন প্রমুখ বহু ব্যক্তির নাম লিখে শেষ করা যাবে না। যারা নানাভাবে কান্দি বান্ধবকে আলো দেখিয়েছেন, সমৃদ্ধ করেছেন। কান্দি বান্ধবের বর্তমান সম্পাদক নব কুমার মুখ্যাপাধ্যায় সত্যনারায়ণ মুখ্যাপাধ্যায়ের সুযোগ্য সন্তান সংবাদপত্রটির উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেনতারই উদ্যোগে লোকায়ত শিল্পী সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয়পাঁচথুপির পুলকেন্দু সিংহকে দায়িত্ব দেওয় হয়। এই সংসদের লোক শিল্পীরা দেশ-বিদেশে গিয়ে জেলার মুখ উজ্জল করেছেন। আগামী বছর কান্দি বান্ধব শতবর্ষ পূর্ণ করবে যা ভাবা যায় নাসম্পাদক নবকুমার মুখপাধ্যায় জানান, শতবর্ষ পালন করার জন্য উচ্চ পর্যায়ে এক কমিটি গঠন করা হবে। জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। তিনি জানান, দেশ-বিদেশের প্রায় ৫০০ ব্যক্তির নামে পত্রিকাটি ডাক যোগে পাঠানো হয়। সহ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন শুভজিত মুখপাধ্যায়। কান্দি বান্ধব জেলার নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে কথা রেখেছে কেউ কথা রাখে না, দলের মধ্যে কান্দি বান্ধব পড়ে না। তাই শত বছরের উজ্জ্বল ব্যতিক্রম কান্দিবাসীর অকৃত্রিম বন্ধু কান্দি বান্ধব।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.