Header Ads

মেঘালয়ে বাঙালিদের উপর নির্যাতন বন্ধের দাবিতে শিলচরে বিক্ষোভ “আমরা বাঙালি” সংগঠনের

 


নয়া ঠাহর প্রতিবেদন, গুয়াহাটি : মেঘালয়ের ইস্ট খাসি হিলস জেলার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী বাঙালিদের সুরক্ষার দাবিতে আমরা বাঙালি আজ শিলচর শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সংগঠনের প্রধান সাধন পুরকায়স্থ এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।

মেঘালয়ে বাঙালি জনগোষ্ঠীর উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বুধবার কাছাড় জেলা সদর শিলচরে ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে 'আমরা বাঙ্গালী'। আজ বেলা ১২টা ৩০ মিনিট থেকে সংগঠিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে 'দুনিয়ার বাঙালিদের এক হওয়ার' ডাক দিয়ে 'আমরা বাঙ্গালী'র কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মকর্তারা মেঘালয়ে বাঙালিদের উপর নির্যাতনকারীদের শাস্তি এবং অবিলম্বে নির্যাতন বন্ধের জোরালো দাবির পাশাপাশি অন্যথায় অসম-মেঘালয় সীমান্তে এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দিয়েছে 'আমরা বাঙ্গালী'

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে 'আমরা বাঙ্গালী'র অসম প্রদেশ কমিটির সচিব সাধন পুরকায়স্থ বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে বলেন, মেঘালয়ে ইস্ট খাসি হিলস জেলার সোহরা সাব-ডিভিশনের শেল্লা থানার অধীন ইছামতি, ভোলাগঞ্জ, কালিবাড়ি, কালাটেক প্রভৃতি অঞ্চলে বাঙালি জনগোষ্ঠীর উপর অমানবিক অত্যাচার সংগঠিত হচ্ছে। এর ফলে অসংখ্য বাঙালির ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। ঘরবন্দি অবস্থায় কার্যত অর্থনৈতিক অবরোধের সম্মুখিন হয়ে পড়ায় বাঙালি শিশু মহিলারা অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। অথচ কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার রয়েছে। পাশাপাশি মেঘালয়েও বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতাসীন। বিজেপির নীতি ও আদর্শের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হিন্দু জনগণের সুরক্ষা ও সার্বিক বিকাশের প্রচার করা হলেও মেঘালয়ের বাস্তব চিত্র বিপরীত কথা বলছে।

সাধন পুরকায়স্থ বলেন, ইদানীংকালে মেঘালয়ে বিভিন্নভাবে বাঙালিদের উপর ব্যাপকহারে শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক অত্যাচার চলছে। অথচ বিজেপি সরকার রহস্যজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করছে। তাই এই স্পর্শকাতর ইস্যুতে কেন্দ্র এবং মেঘালয় সরকারের উদাসীনতায় 'আমরা বাঙ্গালী'র অসম প্রদেশ কমিটির সচিব সাধন পুরকায়স্থ উদ্বেগ ব্যক্ত করে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি শীঘ্র বাঙালি জনগণের উপর নির্যাতন বন্ধ করার দাবি জানান। পাশাপাশি উভয় সরকারের এ বিষয়ে স্থিতি পরিষ্কার করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণেরও আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, বাঙালি জনগণ অনেক নির্যাতন সহ্য করেছেন, অনেক প্রতিবাদও করেছেন। এবার প্রতিরোধের পালা। ভারত ভূখণ্ডে অবস্থিত মেঘালয় রাজ্যে বাঙালিদের উপর অত্যাচার 'আমরা বাঙ্গালী' সহ্য করবে না। অবিলম্বে মেঘালয়ে যদি বাঙালি-নির্যাতন বন্ধ না হয়, তা হলে অগ্নিযুগের আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন নির্যাতিত বাঙালি জনগণ। মেঘালয়ে অসংখ্য বাঙালি শিশু মহিলা না খেয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে রামকৃষ্ণ মিশনের পক্ষে চাল ডাল ইত্যাদি নানা জাতীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ভারত সরকারের শিশু সুরক্ষা কমিশন থেকে ৭ অক্টোবরের মধ্যে মেঘালয় সরকারের কাছে বাঙালি নির্যাতনের প্রেক্ষিতে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে বলে জানান তিনি।

এদিকে এই অমানবিক নির্যাতন বন্ধ না হলে পাহাড়-সমতলের জনগণের মধ্যে অপ্রত্যাশিত সংঘাত সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটার পরিস্থিতি দেখা দেবে এবং এই পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন সাধন পুরকায়স্থ। শীঘ্র অসম-মেঘালয় সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিগরখাল ও মালিডহরে বাঙালি নির্যাতনের প্রতিবাদে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য পেশ করেছেন 'আমরা বাঙ্গালী'র কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেত্রী অনিতা চন্দ, অমল দাস, আজমল হুসেন চৌধুরী, পান্না রায়, দেবাশিস রায়চৌধুরী, বাঙালি ছাত্রযুব সমাজের আহ্বায়ক পার্থপ্রতীম দেব, নিত্যানন্দ দাস, অর্চনা ধর, সমর পাল, মণিপুরের জিরিবাম থেকে আগত আহমদ আলি, বাপ্পা রায় প্রমুখ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.