Header Ads

স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতি বিজড়িত হাতরসে দলিত কন্যা হত্যা, পরিবারের সদস্য চিতা থেকে সংগ্ৰহ করে আধপোড়া হাড়গোর

 

ছবি, সৌঃ আন্তর্জাল


অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি


 পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের হাতরস রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে যেতে হবে বুলগরহির গ্রামের বাল্মীকি পরিবারে, সেই পরিবারের দলিত কন্যাকে উচ্চবর্ণের কয়েকজন যুবক ১৪ সেপ্টেম্বর কৃষি ক্ষেতে ধর্ষণ করে ফেলে যায়। গত তিন দিন আগে দিল্লির এক হাসপাতালে মারা যান নির্যাতিতা দলিত কন্যা। হাতরসের সরকারি প্রশাসন পরিবারের মানুষদের কাছে ঘেঁষতে না দিয়ে দলিত কন্যার শেষকৃত্য সম্পন্ন করে পুলিশ। কন্যার মুখ দেখার অনুমতি পাননি জন্মদাত্রী মাও। তিনদিন বাদ আজ অর্থাৎ শনিবার চিতা থেকে অস্থি সংগ্রহের অধিকার পান পরিজনেরা। চিতা থেকে বেশ কয়েকটি হাড়ের আধ পোড়া টুকরো সংগ্রহ করা হয়। ঘটনার দিন রাত দুটোর সময় গ্রামের শ্মশানে তড়িঘড়ি করে ডিজেল ঢেলে  শিরদাঁড়া ভেঙে দেওয়া ক্ষত বিক্ষত দলিত কন্যার দেহ জ্বালিয়ে ছাই করতে পারেনি, দেহের অবশিষ্ট অংশ অক্ষত ছিল, তাই আজ সংগ্রহ করা হয়। অসমে, কলকাতা, দিল্লি শিলচর প্রভৃতি জায়গাতে দলিত কন্যার হত্যার প্রতিবাদে মিছিল, প্রতিবাদ সভা, মশাল মিছিল প্রভৃতি অনুষ্ঠিত হয়।

  আজ গুয়াহাটিতে মহিলা নির্যাতন বিরোধী ঐক্য মঞ্চ, নিখিল ভারত মহিলা সমিতি, অসম মহিলা সংঘ, প্রগতিশীল নারী সংস্থা প্রভৃতি সংগঠনগুলো একজোট হয়ে গুয়াহাটি প্রেস ক্লাব থেকে এক প্রতিবাদ মিছিল বেড় করে। সরকারের বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও কর্মসূচি যে কত মিথ্যা প্রহসন, তা হাতরস ঘটনায় দোষীদের ফাঁসি দেবার  দাবি সহ নানা দাবি সম্বলিত ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বেড় করে। পুলিশ তাদের বাধা দেয়। কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশাল মিছিল করে বিজেপি সরকারকে তুলোধনা করেন। বলেন, উত্তরপ্রদেশ সরকার দুর্গাপুজো করতে দেয় না, রাতের আঁধারে দলিত কন্যাকে জ্বালিয়ে দেয়,  নির্বাচন এলেই পাকিস্তান,আর যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা, দেশে দলিত সমাজের কোনও নিরাপত্তা নেই, মহিলাদের কোনও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারছে না।  আজ কলকাতায় বামপন্থী আর কংগ্রেসের যৌথ প্রতিবাদ মিছিল বেড় হয়। হাতরাস যাবার অনুমতি পেয়েছেন কংগ্ৰেস নেতা রাহুল গান্ধী, বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, অধীর রঞ্জন চৌধুরী সমেত ৫ জন। এদিন সন্ধ্যে ৭ টার পর রাহুল প্ৰিয়াঙ্কা হাতরসে নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন। এদিকে, হাতরসের ডেপুটি কমিশনার ও পুলিশ সুপারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আজও দলিত পরিবারে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাংবাদিকদের আজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়েছিল। পরিবারের মানুষ অভিযোগ করেছেন ডেপুটি কমিশনার হুমকি দিয়ে বলেছিল, দলিত কন্যার করোনা হলে কি করতে? মৃতদেহ দেখার অধিকার থাকতো না, পোস্টমর্টেমের নথি দেখতে চাইলে বলা হয় তোমারা মূর্খ এসব বুঝবে না। আজও এই বাড়ির ছাদে ও চারপাশে পুলিশ পুলিশে ছয় লাপ, আজও পুলিশ অফিসাররা হুমকি দিয়েছে সাংবাদিকদের সঙ্গে যেন মন খুলে কথা বলা না হয়। উত্তরপ্রদেশের এই হাতরস স্টেশন সম্পর্কে এক নতুন তথ্য সামনে এসেছে। এই স্টেশনে ১৩০ বছর আগে এসিস্টেন্ট স্টেশন মাস্টার পদে ছিলেন শরৎ চন্দ্র গুপ্ত , তিনি প্লাটফর্মে ভবঘুরের মত এক সন্ন্যাসীকে দেখেন, পরিচয় হয়, রেল কোয়ার্টারে নিয়ে যান রাতের জন্য, সেখানে অবাক হয়ে যান এই সন্ন্যাসী আর কেউ নন, তিনি নরেন্দ্রনাথ দত্ত। দেশ ঘুরতে বেড়িয়েছেন, সে কথা জানার পর শরৎ চন্দ্র গুপ্ত আর দেরি করেন নি,পরদিন রেলের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে নরেন্দ্র দত্ত ওরফে স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গ ধরে চলে যান। পরবর্তীতে এই শরৎ গুপ্ত রামকৃষ্ণ মঠের সন্যাসী হন, তাঁর নাম হয় সারদা নন্দ স্বামী। কে এল তামতা নামে এক আই পি এস অবসরপ্রাপ্ত অফিসার এই তথ্য জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের এক হোয়াটস আপ গ্রুপ থেকে তা জানা গেছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.