Header Ads

পেপার মিল নিয়ে বিধানসভায় বিতর্কে বিজেপি বিধায়করা বিস্ময়করভাবে চুপ করে বসে ছিলেন



অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : বরাকের একমাত্র বড় শিল্পদ্যোগ কাছার পেপার মিলের শেষ যাত্রার খবর শুনিয়ে দিলেন শিল্প বাণিজ্যমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারী  সরকার যে আর চালাতে পারবে না, তা ঠারে ঠরে জানিয়ে দিলেন। রাষ্ট্রায়ত্ত সন্থা হিন্দুস্থান পেপার কর্পোরেশনের অধীন জাগিরোড এবং কাছার পেপার মিল দুটি প্রায় পাঁচ বছর থেকে বন্ধ বেতনহীন অভুক্ত কর্মচারীদের মধ্যে মৃত্যু মিছিল চলছে আজ বিধানসভাতে বিরোধী দলপতি দেবব্রত শইকিয়া অভিযোগ করলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৯০০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী সংসদে বলেছিলেন মিল দুটিকে হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে  বেতন বঞ্চিত কর্মচারীদের মধ্যে প্রায় ৭০  জন মারা গেছেন। দুবাইয়ের এক কোম্পানি মিলটি অধিগ্রহণ করবে বলে শোনা গিয়েছিল। জানা গেছে, আগামী ১৪  সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি মাত্র এক কোটি টাকায় বিক্রি করে দিতে চাইছে। ১৪ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল পি পি পি মডেলে মিল দুটি চালাবে বলে শোনা যাচ্ছে। কমলাখ্য দে পুরকায়স্থ বলেন, গত ২০১৬ সাল থেকে তারা শিল্প মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেই যাচ্ছে। মন্ত্রী একই আশ্বাস দিয়ে বলে যাচ্ছেন, কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, মিল দুটি খুলবে। মন্ত্রী কোনোদিন না বলেননি। আজ অভিযোগ করেন, ৪০ মাস থেকে কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। ৫৩ জন মারা গেছেন। কয়েকজন সুইসাইড করেছেন। তিনি বলেন, কেরালার পেপার মিলটি কিন্তু বন্ধ করা হয়নি। সরকারের কাছে কাতর অনুরোধ করে বলেন, হাতজোড় করে বলছি, মিল দুটি খুলতে কিছু একটা করুন। অন্তত অভুক্ত বেতন বঞ্চিত কর্মচারীদের বকেয়া বেতনের কিছু একটা দিন কর্মচারীদের বাঁচান। দু-তিন মাস অন্তর কর্মচারীদের মৃত্যুর খবর আসছে। বরাকের পেপার মিল বরাকের সম্পদ। আজ বিধানসভাতে বরাকের বিজেপি বিধায়করা কিন্তু মুখ বন্ধ করে বসে ছিলেন। একটা শব্দ খরচ করেননি। আজ বিধানসভাতে আসাম মাইক্রো, স্মল, মিডিয়াম ওয়ার্কার্স এন্টারপ্রাইজসের বিল উত্থাপনের সময় বিরোধী দলপতি দেবব্রত শইকিয়া পেপার মিল দুটি খোলার দাবি জানান। জবাবে শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারী আগের মত নানা ফিরিস্তি অজুহাত দিয়ে অসহায়তা ব্যক্ত করে জানিয়ে দিলেন, তাদের কিছু করার নেই। তিনি বলেন, মিজোরাম থেকে বাঁশ এনে মিলটি চালানোর চেষ্টা হয়েছিল সেখানে মুলি বাঁশ চার বছর শুকিয়ে যায় পরে ত্রিপুরা থেকে বাঁশ আনার চেষ্টা হয়েছিল শেষ পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে কাঠের টুকরো আমদানি করে মিল দুটি চালানো হয়েছিল  জাগিরোড পেপার মিলের টাকায় কাছার পেপার মিল চালানোর চেষ্টা হয়েছিল কাছার পেপার মিলের কর্মচারীদের বকেয়া বেতনের জন্যে অর্থ মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছ থেকে ৩৫ কোটি নেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, কলকাতায় বসে থাকা তিন-চারজন অফিসার কোনো হেল্প করেনি। কেন্দ্র এইচ পি সি-র প্রধান কার্যালয় কলকাতা থেকে গুয়াহাটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের সাংসদদের নিয়ে দিল্লিতে ধরনা দেন ফলে এখানে অফিস হলো না। তারা গুয়াহাটিতে এক কার্যালয় স্থাপনের সব বাবস্থা করেছিল। তিনি বলেন, মিল দুটি চালু করার জন্যে প্রধানমন্ত্রী ১৯০০  কোটি টাকার ব্যবস্থা করেছিলেন। ক্যাবিনেট মেমোরেন্ডাম রেডি হয়েছিল। প্রতি বুধবারে ক্যাবিনেট বসে, ক্যাবিনেট বসার তিনদিন আগে এক ব্যবসায়ী ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনালের কাছে এক কোটি টাকা বকেয়া আছে অভিযোগ করে অভিযোগ দায়ের করেন। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়ে ট্রাইব্যুনাল চলে।  ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ পেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এব্যাপারে স্ট্যাটাস বা স্পষ্টীকরণ চেয়ে বসে। তাই স্বাভাবিকভাবে পরেরদিন ক্যাবিনেট ১৯০০ কোটি প্যাকেজ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আর টাকা পাওয়া গেলো না। কংগ্রেসের প্রশ্ন, এক কোটি টাকা কি মিটিয়ে দিতে পারতো না কেন্দ্র?

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.