Header Ads

মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দপ্তরের উপর বিরক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানিয়েছেন : প্রদীপ দত্ত রায়

শিলচর : মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দপ্তরের উপর বিরক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানিয়েছেন বলে আজ এক বিবৃতিতে প্রদীপ দত্ত রায় অভিযোগ করে বলেছেন, বরাক সহ সারা আসামে করোনা পরিস্থিত সামাল দেওয়ার নামে অন্তত এক হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে। তবে এব্যাপারে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল কিছুই জানেন না। আমার কাছে খবর রয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দপ্তরের উপর বিরক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানিয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমি অনুরোধ করছি, করোনা নিয়ে আসামে এপর্যন্ত কত কোটি টাকা এসেছে এবং কি কি খাতে খরচ হয়েছে তার একটা হিসাব সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হোক। আমার ধারণা হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে। কেন্দ্র সরকার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে প্রত্যেকটা রাজ্যকে। এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টরের সাহায্য এসবের স্বচ্ছ তদন্ত করা হোক। 
আমরা জানতে পারলাম বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বরাক উপত্যকার তিন জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এই লকডাউনের অর্থ আমরা বুঝতে পারছি না, যখন একদিকে সারাদেশে আনলক প্রক্রিয়া চলছে, হঠাৎ করে বরাক উপত্যকার তিন জেলায় পুনরায় লকডাউন জারি করার মত এমন কি আলাদা অবস্থা হয়েছে, এটা স্পষ্ট করুক সরকার। যদি কারণ থেকেও থাকে, এতে প্রমাণ হয় সরকার এবং প্রশাসন করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেই ব্যর্থতার দায় জনসাধারণের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে লকডাউন জারি করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কষ্ট, দুর্দশা সবকিছুতে এই লকডাউনের প্রভাব পড়বে। এর দায় কে নেবে, প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যর্থতার জন্য আজকে সারা রাজ্যের শুধুমাত্র বরাক উপত্যকায় লকডাউন দেওয়া হচ্ছে, এর পিছনে কী যুক্তি থাকতে পারে? জনসাধারণের কথায় নয় গোটাকয়েক ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে শুরু করে দিয়েছে। আলু ৩৫ টাকা থেকে এক লাফে ৫২ টাকায় পৌঁছে গেছে। পেঁয়াজ ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা হয়ে গেছে। প্রতিটি জিনিসের দ্রব্যমূল্য বাড়তে শুরু করে দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা এই সুযোগে মুনাফা লুটবেন, তাদের স্বার্থেই লকডাউন দেওয়া হয়েছে। 
তবে আমার মনে হয় সাধারন মানুষ এখন বুঝে গেছেন এই লকডাউনের পিছনে কার কি স্বার্থ রয়েছে। আমি মনে করি, তারা এই লকডাউন কোনভাবেই মেনে নেবেন না। সাধারণ মানুষ এই লকডাউনকে ব্যর্থ করে সরকারকে বুঝিয়ে দেবেন যে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও কিছু করা যায় না। ১৩ আগস্ট সর্বদলীয় সভায় স্থানীয় সাংসদ, বিধায়ক এবং সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, উপত্যকায় কোনও ধরনের লকডাউন দেওয়া হবে না, তারপর কিভাবে গোপনে রাতের অন্ধকারে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়? এর কোনও হিসেব আমি খুঁজে পাচ্ছিনা। 
শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুর্দশার কথা বলে লাভ নেই। হাসপাতালটি একটা চূড়ান্ত অবহেলার স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি বুঝতে পারছি না কেন মাননীয় জেলাশাসক জেলার সমস্ত নার্সিংহোমকে কোভিড হাসপাতলে রূপান্তরিত করছেন না? আমাদের সাংসদ রাজদীপ রায়ের জীবনজ্যোতি হাসপাতাল নামের একটি বিরাট প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেটাকে কেন কোভিড সেন্টারে পরিণত করা হচ্ছেনা। সাংসদকে দেখা যায় সকাল-বিকেল শুধু খাবারের ফটো পোস্ট করছেন এবং লকডাউনের সমর্থনে কথা বলছেন। জনপ্রতিনিধি হয়ে তিনি জনগণকেই বিভ্রান্ত করছেন। অথচ উনাকে কোনও করোনা আক্রান্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। বাড়িতে বসে একের পর এক বিবৃতি দিয়ে চলেছেন। 
২০ জুলাইয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছিলেন শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠে ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি কোভিড কেয়ার সেন্টার গড়ে তোলা হবে। জরুরী ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর সাহায্য নিয়ে প্রয়োজনে কাজটি করা হবে, বলেছিলেন তিনি। এছাড়া মেহেরপুরে একটি ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পাশাপাশি মন্ত্রী পীযুষ হাজারিকা করিমগঞ্জে এসে ঘোষণা করেছিলেন ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি করোনা হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। এত প্রতিশ্রুতির একটাও পালন করা হয়নি, এর জবাব কি তারা দিতে পারবেন? আগামী দিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জনগণের কাছে এর জবাব দিতে হবে। ইতিমধ্যে বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ ঘোষণা করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাকে এলে তাকে কালো পতাকা দেখানো হবে। আমি মনে করি রাজ্য সরকারের কাছে এখনও সময় রয়েছে, ২৭ তারিখের আগে তারা এই লকডাউন প্রত্যাহারের ঘোষণা করুন, না হলে আগামীতে জনসাধারণ এর যোগ্য জবাব দেবেন। 


প্রদীপ দত্ত রায়
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, আকসা
আইনজীবী, গোহাটি হাই কোর্ট

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.