Header Ads

মমতার অভিষেক-বাৎসল্যে তৃণমলে বিমুখ বহু পুরনো যোদ্ধা, বুমেরাং হতে পারে একুশে !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় 
 
মমতার অভিষেক-স্নেহ বাৎসল্য কি দলের ক্ষতি করছে? ২০২১-এর আগে এই প্রশ্ন উঠ পড়েছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূলের অনেক দলত্যাগীই অভিষেকের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। এমনকী মুকুল রায়েরও তৃণমূল ছাড়ার নেপথ্যে ছিলেন অভিষেক--এমনটাই মনে করেন অনেকে। তৃণমূলে অভিষেকের উত্থানে অনেকেই বিমুখ হয়ে গিয়েছেন। তার প্রভাব পড়ছে সংগঠনেও--মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও। 
 
রাজনৈতিক মহল মনে করে, মুকুল রায় থেকে সৌমিত্র খান, অর্জুন সিং-সহ অনেক নেতাকে অভিষেকের কারণে হারাতে হয়েছে। আবার শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতাও তৃণমূলে থেকেও যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না, তাঁদের গুরুত্বের আসনে বসতে দেওয়া হচ্ছে না, ওই অভিষেকের কারণেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেকের গুরুত্ব বাড়াতে গিয়ে আদতে দলেরই ক্ষতি করছেন বলে আঙুল তুলেছেন অনেকে।
বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খান তো প্রতিদিনই নিয়ম করে বিঁধছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পিছন থেকে অভিষেককে তুলে ধরতে চাইছেন, দলে যোগ্যতার কোনও মান নেই। যোগ্য ব্যক্তিরা কোনও গুরুত্ব পাচ্ছেন না দলে। তাই তাঁরা হয় নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন, নতুবা দল ছেড়ে দিচ্ছেন।
সম্প্রতি অর্জুন সিংও একহাত নিলেন অভিষেককে। তিনি অভিষেককে নেতা মানতে তাঁর আপত্তির কথা এখন খুল্লামখুল্লা জানাচ্ছেন বিজেপিতে যোগ দিয়ে। তৃণমূলে থাকাকালীন তিনি মুখ বুজে ছিলেন। এখন তাঁর আর কোনও বাধা নেই। তিনি এজন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করেছেন। তাঁর অভিযোগ, অভিষেককে গুরুত্ব দিতে গিয়ে তিনি অন্যদের কথা ভাবেননি।
মুকুল রায়ের তৃণমূল ছাড়ার নেপথ্যেও ছিলেন অভিষেক। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৬-র আগে থেকেই মুকুলকে সরিয়ে সেকেন্ড ইন কম্যান্ড বানাতে চেয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যিনি তৃণূলের চাণক্য রূপে কাজ করতেন, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল পিছনের সারিতে। তারপর মুকুলের দলত্যাগ করা ছাড়া আর অন্য কোনও পথ খোলা ছিল না।
আর এখন দলে থেকেই সমান্তরাল জনসংযোগ চালাতে হচ্ছে কেন শুভেন্দু অধিকারীকে ! তার জন্যও দায়ী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি পর্যবেক্ষক পদ তুলে শুভেন্দুর হাত থেকে এক লহমায় অনেক দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে প্রকারান্তরে অভিষেককে মহাপর্যবেক্ষক বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ছাড়াও অনেক কমিটিতে রয়েছেন তিনি।
আর শুভেন্দুকে দলীয় কোনও বড় পদে আনা হয়নি। এখন তিনি অনেক সহ সভাপতির মধ্যে একজন। আর এবার সমন্বয় ও কোর কমিটিতে তাঁকে রাখা হয়েছে। কিন্তু ২০২১-এর আগে শুভেন্দু অধিকারীকে আরও বড় কোনও পদ দেওয়া উচিত ছিল। তাহলে তাঁকে গোটা রাজ্যেই আরও ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারত তৃণমূল। কিন্তু মমতার কোনও পরিকল্পনাই নেই তাঁকে নিয়ে। তাঁর ভাবনায় শুধু ভাইপো অভিষেকই, রাজনৈতিক মহলে এমনই আলোচনা চলছে প্রতিনিয়ত। সোশ্যাল মিডিয়াতেও উঠেছে ঝড়।



কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.