Header Ads

অবাক করে নয়া রূপ ধারণ করল কভিড, ভাইরাসে ‘করোনা’ নেই !!

 বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়

সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলেছে করোনা। যে কারণে এই ভাইরাসের নাম করোনা ভাইরাস সেই ‘করোনা’ই এবার বদলে গেল ! এই ভাইরাসের যে ছবি ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে দেখা যেত তা হলো ভাইরাসের বাইরের অংশে স্পাইকের মতো বলয়। কিন্তু সম্প্রতি যে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তা ঘুম উড়িয়েছে গবেষকদের। দেখা গেছে মানবদেহে প্রবেশ করে নিজের এই করোনা ‘স্টাইল’কে বদলে দিচ্ছে ভাইরাস। বরং স্পাইককে গুটিয়ে দিয়ে ‘চুলের কাঁটার’ (হেয়ারপিন স্ট্রাকচার) আকার নিচ্ছে এই মারণভাইরাস।

ভাইরাসের বিশাল জগতে করোনা স্বাতন্ত্র্য তার এই স্পাইক প্রোটিন চরিত্রের জন্য। আর শক্তিবৃদ্ধির নেপথ্যেও এই রূপ। ভাইরাসটির বাইরের আবরণে কাঁটার মতো প্রোটিনের একটি আস্তরণ রয়েছে। যাকে দেখতে অনেকটা মুকুটের মত। এই গ্লাইকোপ্রোটিনই হলো করোনার স্পাইক প্রোটিন। মানবদেহে প্রবেশ করে এই স্পাইক প্রোটিনই কোষের দেওয়ালের অ্যাসিটাইলকোলিন-২ রিসেপ্টরের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে কোষের মধ্যে প্রবেশ করে। এরপর সেখানে নিজের জিনের উপাদানগুলো ছড়িয়ে দিয়ে একাধিক ভাইরাস তৈরি করে।
ক্রায়োজেনিক ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ পদ্ধতি ব্যবহার করে ডা. চেন এবং সহকারীরা দু’রকমের ছবি তোলেন ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের। একটি দেহে প্রবেশের আগে এবং অপরটি কোষ প্রোটিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর সময়। আর এই ছবিতে ধরা পড়ল ভাইরাসটির এক নাটকীয় পরিবর্তনের। দেখা যাচ্ছে অ্যাসিটাইল কোলিন রিসেপ্টরের সঙ্গে কাজ করার সময় বদলে যাচ্ছে করোনার সেই স্পাইক রূপ। পরিবর্তে হেয়ার পিনের আকার নিচ্ছে এই ভাইরাস। গবেষকদের মত, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগে এই রূপ পরিবর্তনের খবর জানা প্রয়োজন ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের।
ডা. চেন বলেন, যেহেতু এটি আরএনএ ভাইরাস তাই এর চরিত্র বদল সম্ভব। কিন্তু রূপে বদলের বিষয়টি এই প্রথম। এর ফলে যেটা হবে সারস-কভ-২ ভাইরাসকে ভেঙে ফেলা খুব কঠিন হবে। স্টাডিতে দেখা যাচ্ছে এর ফলে ভাইরাসের কার্যকারিতা অনেকদিন থেকে যাচ্ছে শরীরে। গবেষকরা মনে করছেন, এই নয়া রূপ মানবদেহের সহজাত রোগপ্রতিরোধী ক্ষমতাকে আটকে দিচ্ছে। যা চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে করোনা ঝড়ের এই আবহে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের পাঠানো এক মেইলের জবাবে ডা. চেন বলেন, এই পোস্টফিউশন স্টেটের যে ভাইরাসের চেহারা তাকে আটকাতে পারছে না অ্যান্টিবডি। অনেকটা এভাবেই কাজ করে এইচআইভি ভাইরাস।
বর্তমানে এই স্পাইক প্রোটিনের বিষয়টি মাথায় রেখেই শুরু হয়েছে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ। সেই আবহে এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে কার্যকরী ভূমিকা নেবে এমনটাই মত বিজ্ঞানীদের।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.