Header Ads

ইতিহাসের গহ্বরে প্রতি ১০০ বছরে একটি মারণ মহামারীর ১৩২০ সালের দ্য ব্ল্যাক ডেথ অব বুবোনিক প্লেগ !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়

মহামারির প্রাদুর্ভাবের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয়ের এই ধারাবাহিক ইতিহাসের কালচিত্র পর্যালোচনা যদি খুব নিকট অতীত থেকেও শুরু করা যায় তবে ফিরে তাকাতে হবে ১৩২০ সালের প্রেক্ষাপটে। যে সময় সারা বিশ্বব্যাপী এক ভয়াল প্লেগের প্রাদুর্ভাবের ফলে শুধু ইউরেশিয়া অঞ্চলেই মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ২০০ মিলিয়ন মানুষের। যার নাম ‘দ্য ব্ল্যাক ডেথ অব বুবোনিক প্লেগ’।

১৩২০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্লেগের প্রাদুর্ভাব ক্রমে মহামারি রূপ ধারণ করে প্রকট হয়ে ওঠে। আর এর প্রভাবে ১৩৪৬-১৩৫৩ সালের মধ্যে ইউরোপ এবং এশিয়া মহাদেশের (ইউরেশিয়া) ৭৫ থেকে ২০০ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করে। ‘কালো মৃত্যু’র কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন তত্ত্ব রয়েছে। ২০১০ এবং ২০১১ সালে বিশেষজ্ঞরা এই মহামারির শিকার হওয়া উত্তর ও দক্ষিণ ইউরোপের অধিবাসীদের ডিএনএন বিশ্লেষণ প্রকাশ করেন। এতে ইয়েরসিনিয়া পেস্টিস ব্যাকটেরিয়া’র (প্লেগ রোগ বিশেষ) জন্য রোগ সংক্রামক জীবাণু প্যাথোজেন’কে দায়ী করা হয়।
মধ্য এশিয়ার সমভূমিতে এই রোগের উৎপত্তি বলে ধারণা করা হয়। এরপর এটি সিল্ক রোড হয়ে ১৩৪৩ সালের দিকে ক্রিমিয়া পর্যন্ত পৌঁছায়। মূলত বণিকদের জাহাজে বসবাস করা ‘কালো ইঁদুর’ ও ‘ইঁদুর মাছি’ নামক দু’টি প্রজাতির প্রাণির মাধ্যমে এটি ভূমধ্যসাগর এবং ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
ইউরোপের মোট জনসংখ্যার ৩০-৬০ ভাগ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এই মহামারির কবলে পড়ে ১৪০০ শতাব্দীতে বিশ্বের জনসংখ্যা ৪৫০ মিলিয়ন থেকে ৩৫০-৩৭৫ মিলিয়নে নেমে আসে। ১৭০০ শতক পর্যন্ত প্লেগ পরবর্তী সময়েও এই সংখ্যা আর পুনরুদ্ধার হয়নি। এমনকি ১৯ শতকেও এটি ইউরোপের কিছু কিছু জায়গায় দেখা গিয়েছিল। এই মহামারি ইউরোপের ইতিহাসে ব্যাপক ধর্মীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.