করোনায় মৃত দেহ নেওয়া হচ্ছে অটোর পাদানিতে শুইয়ে !!
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
করোনায় মৃতদেহের সৎকার নিয়ে অনেক অনাকাঙ্খিত ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছি আমরা! কোথাও আঁকশি দিয়ে টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামানো হচ্ছে দেহ, কোথাও আবার পলিথিনবন্দি করেই ফেলে দেওয়া হচ্ছে বর্জ্যে। এবার সামনে এল করোনায় মৃত রোগীর দেহ বহনের আরো এক কদর্য ছবি। কোনো অ্যাম্বুলেন্স নয়, মরদেহবাহি গাড়িও নয়, মৃতদেহ বহন করে নিয়ে এল অটো! সেটাও পাদানি-তে শুইয়ে! কোনো স্বাস্থ্যকর্মী তো দূর, অটোচালকের পরনে ছিল না পিপিই-ও।
তেলেঙ্গনার নিজামাবাদের সরকারি হাসপাতালের এই চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনার হাড়হিম করা ছবি আরো একবার কাঠগড়ায় দাঁড় করাল মানবিকতাকে। একই সঙ্গে কাঠগড়ায় সরকারি হাসপাতালের অসতর্কতামূলক আচরণও।
যেখানে করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আইসিএমআর-এর নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, সেখানে সরকারি হাসপাতাল কিভাবে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীনতার নজির রাখল?
সাধারণত পিপিই পরিহিত স্বাস্থ্যকর্মীরাই করোনা আক্রান্ত দেহ সৎকার করে থাকেন। ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কার কারণে লাশ থেকে দূরে রাখা হয় পরিবারকেও। তবে নিজামাবাদের ঘটনায় এমন কোনো নির্দেশিকা মানা হয়নি। অটোর পাদানিতে করে মরদেহ নিয়ে আসার ছবি একদিকে যেমন 'অমানবিক' অন্যদিকে ভয়ঙ্কর শঙ্কাজনকও।
এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে আসা মাত্রই নড়েচড়ে বসে তেলেঙ্গনা প্রশাসন। সরকারের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানা গেছে। রাজ্যের মেডিক্যাল এডুকেশনের ডিরেক্টর ডঃ রমেশ রেড্ডি এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, কভিড আক্রান্তের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের ক্ষেত্রে কেন এমন অনিয়ম করা হল, তার জন্য গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। হাসপাতাল কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে ফৌজদারি মামলাও। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে সাফাই দেওয়া হয়েছে, রোগীর পরিবারের ইচ্ছাতেই শবদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
হাসপাতালের সুপার ডঃ রাও জানিয়েছেন, 'রোগীর পরিজন যিনি এই হাসপাতালেই কাজ করেন তার আর্জির পরই গতকাল মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়। তিনি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা না করে অটোতে করেই মৃতদেহ নিয়ে চলে যান। হাসপাতাল মর্গের এক কর্মী তাকে মৃতদেহ নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।'
কোন মন্তব্য নেই