Header Ads

সংক্রমণের 'পিক' পেরিয়ে এসেছে মুম্বাই-দিল্লি !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়

আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে বিশ্বে ভারতের অবস্থান তৃতীয়। সামনে আছে কেবল আমেরিকা ও ব্রাজিল। ভারতে করোনা রোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ছুঁতে চলেছে। তবে আশার কথা--প্রধান দুই শহর দিল্লি ও মুম্বাই এরই মধ্যে সংক্রমণের 'পিক' পেরিয়ে এসেছে বা ছুঁয়ে ফেলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
দেখা গেছে দিল্লিতে সোমবার থেকে ও মুম্বাইতে মঙ্গলবার থেকে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজারের চেয়েও নিচে নেমেছে--যে ঘটনা গত বেশ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবার ঘটল।

মুম্বাইতে 'করোনা হটস্পট' বলে বহু ঘিঞ্জি বস্তি এলাকাও এখন ধীরে ধীরে ভাইরাসমুক্ত হওয়ার পথে এগোচ্ছে বলে বলা হচ্ছে।
তবে ভারতের অন্যান্য বহু অংশেই অবশ্য সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত রয়েছে। ফলে ভারতের এক এক জায়গায় 'পিক' যে এক এক সময়ে আসছে তা নিয়েও বিশেষ দ্বিমত নেই বিশেষজ্ঞদের।
ভারতের যে মেট্রো শহর ভারতে প্রথম অঘোষিত 'করোনা ক্যাপিটালে'র তকমা পেয়েছিল, সেটা ছিল দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই খেতাব চলে আসে রাজধানী দিল্লির কব্জায়, দিল্লির করোনা সঙ্কট কার্যত সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরেই চলে যায়।
তবে মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বুলেটিনে দেখা গেছে,
তার আগের চব্বিশ ঘণ্টায় দিল্লিতে মোট শনাক্তের সংখ্যা মাত্র ৯৫৪-জন। দিল্লিতে এই সংখ্যা হাজারের নিচে নেমে আসার ঘটনা প্রায় ৫০ দিনের ভেতর প্রথমবার ঘটল, আর তাতে অনেক বিশেষজ্ঞই একটা আশার রেখা দেখছেন।
ভারতের প্রিমিয়ার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এইমসের কর্মকর্তা রণদীপ গুলেরিয়ার কথায়, 'আমার ধারণা দেশের বেশ কিছু জায়গা এর মধ্যেই সংক্রমণের পিক স্পর্শ করে ফেলেছে। এর অন্যতম অবশ্যই দিল্লি, কারণ সেখানে নতুন কেস হু হু করে কমছে। তবে কয়েকটা রাজ্যে কেস আবার বাড়ছেও, সেখানে পিক আসতে এখনো কিছুটা দেরি হবে।'
এখনও পর্যন্ত ভারতে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রে, তবে সেই রাজ্যের রাজধানী মুম্বাইয়ের পরিস্থিতি কিন্তু ক্রমশ উন্নতির দিকেই যাচ্ছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় মুম্বাইতে নতুন কেস পাওয়া গেছে ৯৯৫টি, আর শহরের যে ধারাভি বস্তিতে প্রথম করোনা হানা দিয়েছিল সেখানেও পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণেই বলেই জানা যাচ্ছে। এশিয়ার বৃহত্তম ও ঘিঞ্জি এই বস্তি যেভাবে করোনা ভাইরাস রুখেছে, সেই 'ধারাভি মডেলে'র উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।
বৃহত্তর মুম্বাই পৌর কর্পোরেশনের সহকারী কমিশনার কিরণ দীঘাওকর বলছিলেন, 'আসলে আমরা ধারাভিতে যত বেশি সম্ভব মানুষকে স্ক্রিন করেছি এবং সন্দেহভাজন আক্রান্তদের সোজা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়েছি। এই জন্য আমরা এলাকার বহু স্কুল-কলেজ, স্পোর্টস কমপ্লেক্স বা বিয়েবাড়ির হল অধিগ্রহণ করে সেখানে কোয়ারেন্টিন সেন্টার বানিয়েছি। এটা বিরাট পার্থক্য গড়ে দিয়েছে যে তারা সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টিনে ছিলেন, হোম কোয়ারেন্টিনে নন।'
তবে এতদিন ভারতে করোনা মোকাবেলার মূল ফোকাস মুম্বাই ও দিল্লি এই দুই শহরে থাকলেও এখন ব্যাঙ্গালোর, সুরাট, পুনে, গুয়াহাটি বা কলকাতার মতো আরো নানা শহরে সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.