Header Ads

বিউবনিক প্লেগ--নতুন মহামারির আতঙ্কে চিন !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় 
 
করোনার পর বিউবনিক প্লেগ। নতুন মহামারির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে চিনে। মঙ্গোলিয়ায় হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
রবিবার উত্তর চিনের মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে বিউবনিক প্লেগে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এর আগে দক্ষিণ মঙ্গোলিয়াতেও দুই জনের শরীরে বিউবনিক প্লেগের জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল। রবিবারের ঘটনার পরে গোটা প্রদেশে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত এই অ্যালার্ট জারি থাকবে। কারণ, বিউবনিক প্লেগ সংক্রমক। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে।
 
গত শনিবার উত্তর চিনের মঙ্গোলিয়ার একটি হাসপাতালে অজানা রোগ নিয়ে ভর্তি হন এক রোগী। শনিবার সন্ধ্যায় চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন, ওই রোগী বিউবনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়েছেন। বিউবনিক প্লেগ একটি সংক্রমক এবং ভয়াবহ অসুখ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে। বিউবনিক প্লেগ বোঝার পরেই চিকিৎসকরা স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দেন। রবিবার তারই জেরে প্রশাসন তৃতীয় স্তরের হাই অ্যালার্ট জারি করে।
 
চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থার দাবি, গত ১ জুলাই দক্ষিণ মঙ্গোলিয়াতেও দু-জনের শরীরে বিউবনিক প্লেগের জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল। এক জনের বয়স ২৭, অন্য জনের বয়স ১৭। জানা গিয়েছে, তাঁরা ম্যারমোটের মাংস খেয়েছিলেন। ম্যারমোট হলো এক ধরনের পাহাড়ি মূষিক। মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে অনেকেই এর মাংস খেয়ে থাকেন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বন্য ইঁদুর এবং ইঁদুরজাতীয় প্রাণীর শরীরে এক ধরনের পোকা জন্মায়। সেই পোকার মাধ্যমেই বিউবনিক প্লেগের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয়। দ্রুত এই ব্যাকটেরিয়া এক জনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন বলছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা না হলে এই রোগ থেকে মৃত্যু হতে পারে। বিউবনিক প্লেগে আক্রান্ত হওয়ার পরে হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছে মঙ্গোলিয়ায়। বলা হয়েছে, সামান্য অসুস্থতা থাকলেও চিকিৎসকদের কাছে যেতে হবে। শরীরে কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বাড়িতে বসে থাকা যাবে না।
এ দিকে, বিউবনিক প্লেগ ছাড়াও আরও এক অসুখ নিয়ে চিন্তিত চিন। শূকরের শরীর থেকে একটি নতুন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। নতুন এই ভাইরাসটি থেকেও মহামারি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সম্প্রতি চিনের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নতুন এই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসটির সন্ধান পেয়েছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, জেনোটাইপ চারের এই ভাইরাসটি মানুষের শরীরে সহজেই প্রবেশ করতে পারে। শরীরের কোষের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে এই ভাইরাসটি রোগ ছড়ায়। দেশের বিভিন্ন শূকরের খামার থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চিনের উহান প্রদেশ থেকে প্রথম করোনা ছড়িয়ে পড়েছিল। পরে যা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। আপাতত করোনার প্রকোপ খানিক কমলেও দ্বিতীয় দফায় করোনা ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। তারই মধ্যে নতুন দুই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটায়, আশঙ্কায় চিন। আশঙ্কায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। করোনাতে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ধসে পড়েছে। ফের কোনও মহামারির প্রাদুর্ভাব ঘটলে বিশ্বের চেহারা ভয়াবহ হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
 
 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.