Header Ads

চিনের ধূর্ত আগ্রাসনের নেপথ্যে জিনপিং-এর 'তখত' !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়

শুধু ভারতের লাদাখ নয়, এর আগে অরুণাচল সহ উত্তরপূর্বের চিনের লাগোয়া বহু অংশকেই পাখির চোখ করে দেখেছে জিনপিং শাসিত চিন। এদিকে, চিন শুধু ভারতের অংশ নয়, ভুটান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান সহ একাধিক দেশের ভূখণ্ডে নিজের দখলদারির 'অহং' প্রকাশ করে চলেছে। কিন্তু জিনপিং শাসিত চিনে কেন এমন আগ্রাসনের রাস্তায় যেতে চাইছে? সে উত্তর পেতে বেজিংর কূটনীতির অন্দরমহলে একবার উঁকি দিয়ে দেখা যেতে পারে।

গত সপ্তাহে চিনে সেদেশের বিদেশমন্ত্রক একটি রিসার্চ সেন্টার উদ্বোধন করেছে। সেখানে প্রেসিডেন্ট জিনপিং-এর ভাবনা চিন্তা নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট কিভাবে বিভিন্ন কূটনীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, বিদেশনীতির ক্ষেত্রে জিনপিং এর ভাবধারা কী, তা নিয়ে এবার বার্তা চিনের সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই এমন রিসার্চ সেন্টার খোলা হয়েছে।
যে দক্ষিণ চিন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ নিয়ে বারবার চিনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছে একাধিক দেশের--সেই দ্বীপ নির্মাণের ভাবনা জিনপিংএর মস্তিষ্ক প্রসূত। ক্রমাগত একছত্র ক্ষমতা তিনি চিনের বুকে সমস্ত বাধা পেরিয়ে ভোগ করার পর , এবার সেই ক্ষমতার স্পৃহা সঙ্গে নিয়েই তিনি তিন সাগরে আস্ফালন দেখাতে তৈরি হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ক্ষমতা জিনপিং উপভোগ করেন। আর সেই উপভোগের ভাবনা থেকেই এমনভাবে আগ্রাসনকে কাজে লাগাচ্ছে চিন।
চিনের বুকে ইতিমধ্যেই জিনপিং মাও সেতুং এর সঙ্গে তুলনার জায়গায় চলে গিয়েছেন। এক ব্যবসায়ী এই প্রসঙ্গ তুলে সমালোচনা করায় তাঁর করুণ পরিণতি হয়। তবে বিশ্বের কূটনৈতিক মহলের দাবি, মাওয়ের পর চিনের কমিউনিস্ট পার্টিতে জিনপিং ই প্রথম
নেতা যিনি বিশ্ব রাজনীতির মানচিত্রে বারবার বলিষ্ঠ আত্মপ্রকাশ করছেন। আর তাঁর 'অহং' এর প্রকাশ তাঁর দখলের রাজনীতির মাধ্যমে হচ্ছে।
বিশাল নির্মাণ সাম্রাজ্যের মালিক রেন ঝিকিয়াং। চিনের এই ব্যবসায়ী চিনা কমিউনিস্ট পার্টিরও সদস্য ছিলেন এবং পার্টিতে থেকেই তিনি দেশের সর্বেসর্বা শি জিনপিংয়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলার 'আস্পর্ধা' দেখান ! রেনকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়। রেনকে
বলা হয়, তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত। আর সেই কারণেই বহিষ্কার। উল্লেখ্য, চিনে কেউই জিনপিং এর বিরুদ্ধে মুখ খুললে এমনই পরিস্থিতি হচ্ছে।
জিনপিং মূলত দেশের অন্দরে ক্রমাগত দম্ভের আস্ফালন দেখাতে গিয়ে কোণঠাসাও হচ্ছেন। একছত্র ক্ষমতা তাঁকে মানুষর কাছে অপ্রিয় করছে। আর সে কারণে বিভিন্ন জায়গায় বিস্তার-বাজের নীতির মাধ্যমে প্রতিবেশীর ভূখণ্ড কেড়ে নিয়ে রাজনৈতিক নজর ঘোরানোর চেষ্টায় রয়েছেন। এদিকে, মার্কিন মুলুকের সঙ্গে যে রেষারেষি বাণিজ্য ময়দানে তিনি শুরু করেন, তা বর্তমানে যুদ্ধের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। আর এই কারণেই আপাতত 'মুখ বাঁচানোর' লড়াইতে জিনপিং ক্রমাগত সামরিক আস্ফালনের দিকে ঝুঁকছেন। এমনই মত ততক্ষশীলা ইনস্টিটিউটের চাইনিজ স্টাডিজের সদস্যদের।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.