Header Ads

সান ফ্রান্সিসকো কনস্যুলেটে লুকিয়ে চিনা বিজ্ঞানী !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
 
হিউস্টনে চিনা কনস্যুলেট বন্ধের নির্দেশ দেয়ার পর এবার সান ফ্রান্সিসকোতে অবস্থিত চিনের আরেক কনস্যুলেটকে টার্গেট করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। দেশটির শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই বলছে, সান ফ্রান্সিসকো কনস্যুলেটের ভেতরে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত এক বিজ্ঞানীকে লুকিয়ে রেখেছে চিনারা।
হিউস্টন কনস্যুলেটের ভেতরে চিনাদের বিরুদ্ধে নথি পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগও তুলেছে মার্কিন সরকার। সেই সঙ্গে নিজেদের মেধাস্বত্ব ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার কারণ দেখিয়ে বেইজিংকে কনস্যুলেটটি বন্ধের নির্দেশ দেয় ওয়াশিংটন। দুই দেশের মধ্যে যখন এ নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে তখন সামনে চলে এল আরেক কনস্যুলেট। 
 
জানা গেছে, ফেডারেল প্রসিকিউটররা এক চিনা বিজ্ঞানীকে খুঁজছেন, যার বিরুদ্ধে ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে এবং সান ফ্রান্সিসকোয় চিনা কনস্যুলেটের ভেতরে তাকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে সন্দেহ করছে এফবিআই।
প্রসিকিউটররা অভিযোগ করছেন, ট্যাং জুয়ান নামের গবেষক কাজ করেন জীববিজ্ঞান নিয়ে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার কাজ সহজ করতে চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথাটি গোপন করেন এবং বিষয়টি প্রকাশের পর থেকেই গ্রেফতার এড়াতে পশ্চিম তীরের কূটনৈতিক মিশনে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন। 
 
কোর্টের নথি বলছে, ভিসা জালিয়াতির কারণে ২৩ জুন ট্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন করা হয়। প্রসিকিউটররা বলছেন, এই নারী ভিসার আবেদন করার সময় সেনাবাহিনীর সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা গোপন রাখেন। যদিও তদন্তকারীরা চিনা সেনাবাহিনীর ক্যাডারের পোশাক পরিহিত এ নারীর ছবি চিহ্নিত করতে সমর্থ হয়, যিনি ফোর্থ মিলিটারি মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে (এফএমএমইউ) একজন গবেষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত।
এ অভিযোগ ২০ জুলাই আদালতে নথিভুক্ত করার পর অ্যাটর্নি বলেন, ‘গত ২০ জুন এফবিআই এজেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন ট্যাং এবং তার সৈনিকের ইউনিফর্মের নামচিহ্ন কীভাবে হয়েছে তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেন। অথচ এফএমএমইউতে অংশগ্রহণ করতে হলে এই ইউনিফর্ম লাগে।’
যদিও ট্যাংয়ের বাসা ও তার ইলেট্রনিক ডিভাইস তল্লাশির সময় চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায় এজেন্টরা। ওই সাক্ষাৎকারের পরই ট্যাং পালিয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে এবং এফবিআই সন্দেহ করছে, তিনি সান ফ্রান্সিসকো কনস্যুলেটের ভেতরেই আছেন।
আরো কতিপয় চিনা বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রসিকিউটররা মনে করেন, চিনা সেনাবাহিনীর হয়ে ‘নির্দিষ্ট কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য’ নিয়েই এসব সামরিক বিজ্ঞানীরা ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন।
প্রসিকিউশন বলছে, ‘চিনা সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমেরিকান প্রতিষ্ঠান থেকে সামরিক বিজ্ঞানীদের তথ্য চুরি কিংবা নকল করার একাধিক প্রমাণ রয়েছে। আরো প্রমাণ রয়েছে, চিন সরকারের নির্দেশে এসব ব্যক্তি নথিপত্র ধ্বংস করেন এবং সমন্বিত প্রচেষ্টায় এরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলে যান।’
গত ৭ জুন ওয়াশিংটনে অভিযোগপত্র গঠন করা হয় জিন ওয়াংয়ের বিরুদ্ধে। লস অ্যাঞ্জেলেস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে গত মাসে গ্রেফতার করা হয় ওয়াংকে। তার বিরুদ্ধে ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ।
এ বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিচার বিভাগ, এফবিআই ও চিনা পররাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছে সিএনএন। ওয়াংয়ের গ্রেফতার নিয়ে চিনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইয়াং একে ‘পরিষ্কার রাজনৈতিক নিপীড়ন’ বলে দাবি করেন।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.