Header Ads

মাসাধিককালের লড়াই শেষ, কোভিড-মুক্ত এশিয়ান গেমসে স্বৰ্ণজয়ী মণিপুরের বক্সার ডিঙ্কো সিং

ইমফল (মণিপুর), ৪ জুলাইঃ  করোনা-যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছেন ১৯৯৮ সালে ব্যাঙ্কক এশিয়ান গেমসে স্বৰ্ণ পদক বিজেতা, ২০১৩ সালে পদ্মশ্ৰী সম্মানে ভূষিত মণিপুরের প্রথিতযশা প্রাক্তন বক্সার ৪১ বছরের নাংগম ডিঙ্কো সিং। প্রায় মাসাধিককাল করোনার সঙ্গে লড়াই করে বিজয়ী হয়েছেন, টুইট করে খবরটি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নংথমবাম বীরেন সিং। করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়ার খবরে ডিঙ্কো সিংহের অনুরাগীরা হাফ ছেড়েছেন, বইছে আনন্দের জোয়ার।


একটি ছবি সহ টুইটে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, দিল্লি থেকে আসার পর করোনায় সংক্রমিত এশিয়ান গেমসে স্বর্ণজয়ী বক্সিং আইকন ডিঙ্কো সিঙের সর্বশেষের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে শুনে তিনি খুব আনন্দিত, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর টুইট আপডেটে লিখেছেন। তাঁকে সুস্থ করে তোলার কৃতিত্ব রিমস্-এর ডাক্তার ও সংশ্লিষ্ট সকলকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিঙ্কোর যত্ন নেওয়ার জন্যও তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে নাংগম ডিঙ্কো সিং বলেন, আজ তিনি খুব সুখ অনুভব করছেন। এমনিতেই দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। এর এক মানসিক চাপ রয়েছে। তার ওপর কোভিডের সংক্রমণ। বিষয়টি নিয়ে তিনি খুব উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাকি পাঁচ বার কোভিড নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তখন তিনি আর বাঁচবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। ডিঙ্কো বলেন, তাঁর পর হাসপাতালে ভরতি হয়ে অনেকে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে যে যার বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে ঈশ্বরের অসীম কৃপায় এ যাত্রায় উতরে গেছেন। এর সব কৃতিত্ব ডাক্তার ও নার্সদের দিয়ে তাঁদের সকলকে তাঁর আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান বক্সার ডিঙ্কো সিং।


ডিঙ্কো মূলত দূরারোগ্য লিভার ক্যানসারের রোগী। গত ২৩ মে দিল্লি থেকে আসার পর তাঁর সোয়াব পরীক্ষায় তিনি কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন বলে এখানকার দ্য রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েস (রিমস্)-এ চিকিৎসার জন্য ভরতি করা হয়েছিল। ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে মাঝে মাঝে কেমেথেরাপির জন্য তাঁকে নয়াদিল্লির ইনস্টিটিউট অব লিভার অ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সে যেতে হয়। রুটিন কেমোথেরাপি করাতে গত এপ্রিলে তাঁর নয়াদিল্লি যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে গোটা দেশে জারি হয়ে যায় লকডাউন। কিন্তু কোনও অবস্থায় তাঁর দিল্লি যাওয়া হচ্ছিল না। অবশেষে বিষয়টি তিনি কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজুর নজরে নিয়ে তাঁর সাহায্য চান। সহায়তা করেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রিজিজু। তাঁর হস্তক্ষেপে সর্বভারতীয় বক্সিং সংস্থার উদ্যোগে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ২৫ এপ্র্রিল ইমফল থেকে নাংগম ডিঙ্কো সিংহকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়।

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনি জন্ডিসে আক্রান্ত বলে দিল্লিতে এ যাত্রায় তাঁর কেমোথেরাপি হয়নি। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন দিল্লি থেকে বাড়ি চলে আসবেন। দিল্লি থাকলে করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন, এই আশঙ্কা ও ভয়ে তিনি ইমফল ফিরে আসতে অস্থির হয়ে ওঠেন। এর পর একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সড়কপথে দু-দিন যাত্রা করে নাংগম ডিঙ্কোকে নিয়ে পত্নী বাবাই সিংহ গত ২৩ মে গৃহশহরে ফেরেন। এখানে আসার পর তাঁকে মণিপুর সরকারের তত্ত্বাবধানে একটি হোটেলে কোয়ারেন্টাইন করা হয়। নেওয়া হয় সোয়াব। কিন্তু প্রথম টেস্টে রেজাল্ট নেগেটিভ আসে। পরবর্তীতে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা এবং প্রচণ্ড জ্বরের উপসর্গ দেখা দিলে ফের সোয়াব টেস্ট করা হয়। এই টেস্টের রেজাল্ট কোভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়ে ডিঙ্কোর শরীরে। প্রসঙ্গত দিল্লিতেও তাঁর কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছিল। সেখানে এবং এখানে আসার পরও নেগেটিভ আসে। কিন্তু কী করে আবার পজিটিভ ধরা পড়েছে তা ভেবে পাচ্ছিলেন না তাঁর ডাক্তার ও পরিবারের সদস্যরা।


সৌজন্যে হিন্দুস্থান সমাচার

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.