দলের শিরায় শিরায় দুর্নীতির বাসা, বুমেরাং হবে একুশে, মমতাকে সাবধান করলেন পি কে !!
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
আমাকে
যেসব ধান্ধাবাজ দুর্নীতিগ্রস্ত যে কোনো মূল্যে টিকিট ও পদ-প্রত্যাশীদের কেউ কেউ
ইতিমধ্যেই বিজেপি’র দলদাস হিসেবে চিহ্নিত করে নিজেদের বেজায় দলপ্রেমী
হিসেবে তুমুল প্রচারে মেতেছেন তাদের জন্যে এ খবর কতটা সুখপ্রদ হবে আমার জানা নেই।
আমি লাগাতার তৃণমূলের বিভীষণদের বিরুদ্ধেই লিখে আসছি এবং সে কারণেই আমি নিরপেক্ষ
সাংবাদিক নই। যদিও এ ধরণের চামচিকেদের কোনো অভিযোগেই আমার কিছু যায় আসে না! শেষ পর্যন্ত
বিশাল ভরসার প্রশান্ত কিশোরও বললেন--তৃণণমূল কংগ্রেসের শিরায় শিরায় বাসা বেঁধেছে
দুর্নীতি ও অপরাধমূলক কাজের প্রবণতা। ২০২১-এর আগে তা বুমেরাং হতে পারে তৃণমূলের
পক্ষে। তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের দলের প্রচার পরিকল্পনার
দায়িত্বে থাকা প্রশান্ত কিশোরের সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই প্রবণতা। মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও তা রিপোর্ট আকারে তুলে ধরেছেন তিনি। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা দুর্নীতি ও অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন।
বিশেষত লকডাউন চলাকালীন এবং ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ফলে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ বিতরণ
নিয়ে বিস্তর দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে তৃণমূল কংগ্রেসে। এই পরিস্থিতিতে মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ও কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি
প্রকাশ্যেই তাঁর দলের দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলেন, নিজেকে
দূরে সরিয়ে রাখুন নতুবা অবিলম্বে নিজেদের সংশোধন করুন, তা না
হলে রেয়াত করা হবে না কাউকেই। তৃণমূলের নেতাদের দুর্নীতি ও অন্যান্য অপকর্মে লিপ্ত
থাকতে দেখা গেলে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে, জনসমক্ষে
সতর্কতা জারি করেন মমতা। তাঁর দলের বিধায়ক ও
সাংসদদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার সময় মমতা সতর্ক করে দেন দলের সকল শ্রেণির
নেতাদের। তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোনওমতেই
দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। যাঁরা দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকবেন, তাঁদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাটমানি-কাণ্ডের পরও দুর্নীতির থাবা অতীতেও তিনি
তাঁর দলের নেতাকর্মীদের একইভাবে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু সেই অর্থে তেমন কোনো
ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি কখনোই। তিনি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বাংলায় সিন্ডিকেটরাজ
চালানোর বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন। গত বছর লোকসভা ভোটে তৃণমূলের বিপর্যয়ের পরে তৃণমূল
সুপ্রিমো দলের নেতাদের কাটমানির টাকা ফিরিয়ে দিতে বলেছিলেন। তৃণমূল নেতারা শোধরান
নি। তাঁরা এখনও দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তা নিয়েই উষ্মাপ্রকাশ করেছেন প্রশান্ত
কিশোর। তিনি একপ্রকার জানিয়েই দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা এই পথ থেকে সরে না
এলে বুমেরাং হয়ে যাবে। আর কোনওভাবেই তৃণমূলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়া যাবে না। রাজনৈতিক কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
দলের দায়িত্ব নিয়েই 'দিদিকে বলো' প্রচার
অভিযান চালিয়েছিলেন। তাতে প্রভূত সাফল্যও মিলেছিল। তা থিতিয়ে যাওয়ার পর ফের
দুর্নীতিতে ডুবে যাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। বিশেষ করে পুর-পঞ্চায়েত স্তরে ব্যাপক
দুর্নীতি চলছে। মানুষের অভিযোগ দূর করতে দিদিকে বলোতে প্রচার চালালেও তৃণমূলের
বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং আরও অনেক অপকর্মের অভিযোগে বিভ্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।
দ্রুত সমর্থনও হারাচ্ছে দল।
কোন মন্তব্য নেই