Header Ads

'স্বাধীনতার আগে প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভর ছিল ভারত’ কিন্তু--নাম না করে কংগ্রেসকে ফের তোপ মোদীর !!

 বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
করোনা সংকটের পাশাপাশি লাদাখে প্রবলভাবে চিনা আগ্রাসন দেখা গিয়েছে। আর এমন এক আবহে 'মন কি বাত অনুষ্ঠান' থেকে কার্যত একের পর এক তোপ দাগলেন মোদী। চিনকে কাঠ গড়ায় রেখে শক্তিশেল দাগার পাশাপাশি এদিন মোদী, কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও নাম না করে তোপ দাগেন। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা প্রসঙ্গে এমন কড়া বক্তব্য রাখেন মোদী।

মোদী এদিন প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা বাড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। স্বাধীনতার আগে প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভরতার ইতিহাসের কথাও স্মরণ করেছেন মোদী--যা স্বাধীনতার পরবর্তী পর্যায়ে আর  ধরে রাখতে পারেনি ভারত, বলে ব্যাখ্যা করেন মোদী।
'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে মোদী বলেন, ভারতের প্রাক স্বাধীনতা যুগে যে দেশগুলি পিছিয়ে ছিল প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে, তারা পরবর্তী পর্যায়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। যেমন ভারত প্রাক স্বাধীনতা যুগে গান ফ্যাক্টারি , শেল ফ্য়াক্টরি তৈরি করেছে, যা সেই সময় অন্যদেশ ভাবতেও পারেনি। আর স্বাধীনতার পরবর্তীস্তরে তা ধরে রাখতে পারেনি ভারত। তবে প্রযুক্তির ওপর ভর করে ভারত আগামী দিনে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা ধরে রাখতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মোদী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকমহলের দাবি, এদিনের অনুষ্ঠানে মোদী নাম না করে ফের প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভরতা প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়েছেন। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পরবর্তী পর্যায়ে কংগ্রেস সরকার দিল্লির মসনদে বসে। ভারতের প্রথম কেন্দ্রীয় সরকার গঠিত হয় কংগ্রেসের জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে। আর মোদী এদিন সাফ বার্তায় জানান, স্বাধীনতার পূর্বে ভারতে প্রতিরক্ষা খাতে যে আত্মনির্ভরতা ছিল, তা পরে নষ্ট হয়। ফলে স্বভাবতই এই মর্মে মোদী যে কংগ্রেসকে নাম না করে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তা বলাই বাহুল্য।
এদিন মোদী সাফ বার্তায় জানান, দেশকে আত্মনির্ভর করতে তিনি বদ্ধপরিকর। এক্ষেত্রে সকলের যোগদান প্রয়োজন। লাদাখে শহিদদের কুর্নিশ জানানোর জন্য একমাত্র উপযুক্ত উপায় হল ভারতের আত্মনির্ভরতা।
অন্যদিকে, করোনার গ্রাসে যখন গোটা দেশকে প্রবল ধরাশায়ী পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে, ঠিক তখনই দেশের লাদাখ সীমান্তে চিনা আগ্রাসন দেখা গিয়েছে। যার যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারত। আর এর প্রেক্ষিতেই এদিন 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছেন নরেন্দ্র মোদী।
'৬ -৭ মাস আগে আমরা তো বুঝতেই পারিনি যে করোনা আসবে।' এরপরই মোদী বলেন করোনা অন্য দেশের থেকে আসা একটি বিপদ। এদিন 'মন কী বাত' অনুষ্ঠানের শুরু তেই মোদী দাবি করেন যে অনেকেই বলছেন ২০২০ সাল অত্যন্ত খারাপ সময়। সেই নিরাশার অবস্থান থেকে সরে এসে দেশবাসীকে এগিয়ে যাওয়ার মন্ত্র এদিন 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে দেন মোদী।
পূর্ব লাদাখে চিন-ভারত সংঘর্ষের পরিস্থিতি এদিন প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। এদিন মোদী বলেন, ভারতে বিভিন্ন সময় হামলা ও আক্রমণ হয়েছে। তবে সেই চ্যালেঞ্জ সঙ্গে নিয়ে তা অতিক্রম করে দেশের সাহিত্য সংস্কৃতি এগিয়েছে। তিনি বলেন,সংকটের সময়েও ভারত লড়েছে। সাহিত্য সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। সংকটই ভারতের সাফল্যের সিঁড়ি। সংকটের সঙ্গে মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে।
নাম না করে এদিন, চিনকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন,'ভারতের দিকে চোখ তুলে যারা তাকিয়েছে, তাদের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে। ভারত যেমন বন্ধুত্ব রক্ষা করতে জানে ভারত আবার চোখে চোখ রেখে জবাব দিতেও
জানে।'
মোদী বলেন, গোটা বিশ্বে শান্তি স্থাপনে ভারত কতটা উদ্যোগী তা দেখেছে আন্তর্জাতিকমহল। আবার বিশ্ব এটাও জানে যে ভারতের সীমান্তে র দিকে তাকালে কী পরিস্থিতি হতে পারে। এদিন তিনি লাদাখে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন। পাশপাাশি তিনি বলেন, 'প্রতিবেশীদের আচরণ আমরা দেখেছি। তা প্রতিরোধও করেছি।'
লাদাখের যুদ্ধে শহিদদের পরিবারের মনোবল এখনও চাঙ্গা। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বাকি সন্তান ও পৌত্রদেরও যুদ্ধে পাঠানোর জন্য় অঙ্গীকার বদ্ধ হয়েছেন। এমনই কথা এদিন মোদী জানান 'মন কী বাত' অনুষ্ঠানে।
শহিদ পরিবারের এই সংকল্পকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে, বলে দাবি করেছেন মোদী। তিনি বলেন সীমানা রক্ষায় শক্তিশালী হতে হবে ভারতকে। আর সে কারণে আত্মনির্ভরতাও বাড়াতে হবে। যাতে দেশ এগিয়ে যেতে পারে। দেশের নির্মিত জিনিসই ব্যবহারের বার্তা দিয়েছেন মোদী। তিনি বলেন, ভারত আত্মনির্ভরতার দিকে যাচ্ছে। এজন্য গোটা দেশের সমস্ত নাগরিককে একজোট হতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.