এমন একটি ছবি যা কষ্টে সকলের বুক ভেঙে দিচ্ছে !!
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
করোনার উপসর্গ নিয়ে ময়মনসিংহের এস কে হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে ড. দেবাশীষ দাস (৫২) নামে এক গার্মেন্টস কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। তার স্ত্রী উমা দাস ময়মনসিংহের সহকারী জেলা ও দায়রা জজ। ড. দেবাশীষ ঢাকার ফকিরা গ্রুপের গার্মেন্টস বিভাগের এইচআর বিভাগের প্রধান ছিলেন। তার বাড়ি সাভারের শিমুলিয়ায়। মৃত্যুর পর দেবাশীষের পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
স্বামীর মৃত্যুর পর রীতিমতো বেকায়দায় পড়েন উমা দেবী। শশ্মানে তাঁকে শেষকৃত্য করার মতো পরিবারের কিংবা নিকটজন কেউ আসেনি! সৎকারে সাহায্য নিতে হয়েছে মুসলামান ভাইদের। সৎকার করতে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন সমাজকর্মী ইউছুফ আলীসহ কয়েকজন সমাজকর্মী। উমা দাস এবং দেবাশীষ দাসের একটি মাত্র সন্তান, সেই পুত্রের হাতের ছোঁয়া কাঠি এনে উমা দাস নিজেই তাঁর স্বামীর স্নান সহ মুখাগ্নি করলেন!
উমা দাসের স্বামীর মুখাগ্নি করার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এমন মর্মস্পর্শী ছবি ছড়িয়ে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে সকলেই গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে। বলছেন, 'করোনা আমাদের অমানবিক করে দিয়ে গেল।'
সত্যি, করোনা আমাদের পরিচিত পৃথিবীটাকেই বদলে দিচ্ছে প্রতিদিন! দেবাশীষের শেষযাত্রায় এমন অমানবিক হতে হবে,
কাউকে সাথে পাওয়া যাবে না,
এমন দৃশ্যগুলো যে শুধু উমা দাসের সঙ্গেই ঘটছে তা নয়। এমন প্রচুর ঘটনা ঘটছে যা সত্যিই মর্মান্তিক বলে মনে করছেন নেটিজেনরা। উমার এই ছবি যতই ছড়াচ্ছে ততই বুক ভেঙে যাচ্ছে মানুষের। একা একজন স্ত্রীকে তার স্বামীর সৎকারের দায়িত্ব তুলে নিতে হল,
অথচ এমনটি কখনোই হবার কথা ছিল না।
শ্মশানে পুড়ছে স্বামীর দেহ--চিৎকার করে বলছেন উমা দাস,
'এখনো যে স্বামীর কাছ থেকে বিয়ের সার্টিফিকেট নিলাম না অথচ তার আগেই তাঁর ডেথ সার্টিফিকেট নিতে হবে আমাকে! আমার সন্তান ওর বাবাকে খুঁজলে আমি কি জবাব দেব?
কেন সে আমাকে একা ফেলে চলে গেল?' উমা দাসের কান্নায় শ্মশানের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে আসে। উমার এই ছবি ও ঘটনা শেয়ার করে নেটিজেনরা বলছেন, ছবিটা আমাদের কষ্টে বুক ভেঙে দিচ্ছে!
কোন মন্তব্য নেই