২০২০ বছর, বিষ-বিষ, অশুভ বছর নয়, আমাদের নতুন পথ দেখাবে, মনের কথা প্রধানমন্ত্রীর
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : ভয়ঙ্কর মারণ রোগ করোনা সংক্রমণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমফান, নিসর্গ, ভূমিকম্প, পঙ্গপালের তাণ্ডব
প্রভৃতি এ সব কিছুর জন্য ২০২০, জোড়া বিষ-কে দায়ী করা হচ্ছে। এই সাল অশুভ নয়। মানুষের সামনে সংকট এসেছে, চ্যালেঞ্জ এসেছে ঠিকই, তা সাময়িক, তা ক্ষণস্থায়ী সালকে দোষারোপ করা উচিত নয়- এই তাত্পর্যপূর্ণ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ রবিবার তার “মন কি বাত” শীর্ষক নামে বেতার বার্তায় বলেছেন, সামনে ভালো দিন আসছে। দেশবাসী সংকট থেকে মুক্ত হবেন। তিনি গঙ্গা নদীর সঙ্গে জীবনধারার তুলনা করে বলেন, কলকল রবে, পূর্ণ প্রবাহের মাঝে কোনো বাধা আসতে পারে না। গঙ্গার নুড়ি পাথর কি এই স্রোতকে আটকাতে পারে? অন্তকালের প্রবাহ, অচিরেই জোড়া বিষ ২০২০-এর সংকট থেকে মুক্তি পাবো। সুদিন আসবেই। তিনি বলেন, লাদাকে আমাদের সেনারা চীন-এর সেনাদের চোখে চোখ রেখে কড়া জবাব দিয়েছে। চীনাদের উচিত শিক্ষা দিয়েছে। ২০ জন বীর সেনা জীবন আহুতি দিয়েছেন। এই বলিদান ব্যর্থ হতে দেব না। দেশের জন্য প্রাণ আহুতি দেওয়া সেনা জওয়ানের অবিভাবকরা আজ তাদের পুত্রদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়ে কড়া জবাব দিতে চাইছেন। তিনি স্বীকার করেন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে লাভ ওঠানো যায়নি। এখন প্রযুক্তিগত অত্যাধুনিক ব্যাবহার করে ভারত সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি এই কাজে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি সম্ভবত বিরোধী দলের সহযোগিতার কথা বলতে চাইলেন। স্থানীয় বা লোকালকে ব্যবহার করে অত্মনির্ভরশীল মজবুত ভারত গড়ার লক্ষ্যে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে মিত্রতা গড়ার উপর জোর দিলেন। করোনা ভাইরাসকে পরাভূত করতে সব সময় মাস্ক পড়া ও দুগজ দূরে থেকে জমায়েতকে পরিহার করে করোনাকে জয় করার আহ্বান জানালেন। আনলক ওয়ান অনেক সম্ভাবনার রাস্তা খুলে দিয়েছে বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খনি শিল্পে, মহাকাশ, প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে লাভ হয়েছে। তিনি অরুণাচল প্রদেশের সিয়াং জেলার মানুষের করোনা মোকাবিলার কাজের কথা জানিয়ে বলেন, করোনা আক্রান্তদের জন্য গ্রামের বাইরে ১৪ জন রুগীর জন্য ১৪টি কুটির নির্মাণ করে, পৃথক টয়লেট নির্মাণ করে সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছেন। উত্তর প্রদেশের বারাবাঁকি জেলার কয়রেন্টিনে থাকা মানুষ প্রকৃতি পরিবেশ রক্ষা করতে শ্রমদান করেছেন। আমাদের দেশের চিরাচরিত হলুদ, আদা, লবঙ্গ প্রভৃতি ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। লন্ডন-এর ফিনান্সিয়াল টাইমস ভারতের এই মসলা ব্যবহার করে ব্রিটেনের মানুষ করোনা থেকে বাঁচতে ইমিউনিটি বাড়াতে এই সব ভারতীয় মসলা ব্যবহার করছে। এই রোগ মানুষকে চরম শিক্ষা দিল। জীবনকে নতুন করে ফিরে পেলাম। পরিবেশ প্রকৃতি জলের প্রয়োজন উপলব্ধি করতে পারছি। দূষণমুক্ত পরিবেশ ফিরে পেয়েছি। কর্ণাটকের ৮০,৮৫ বছরের কামগৌরী সারাজীবন পরিশ্রম করে ১৪টি পুকুর তৈরি করেছেন। এই বৃদ্ধ সারাজীবন জল সংরক্ষণের জন্য কাজ করছেন। গুজরাটের বরোদা জেলা প্রশাসন ১০০টি বিদ্যালয়ে জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। প্রধানমন্ত্রী এর আগের মন কি বাত-এ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, দেশে মাত্র ৮ শতাংশ জল সংরক্ষণ করা হয়। তিনি রেনহার্ভাস্টিং-এর উপর জোর দেন। মহারাষ্ট্রে গণেশ পুজোর সময় বিসর্জনের সময় নদীগুলির জল দূষিত হয়, তা বন্ধ করে ইকো ফ্রেন্ডলি গণেশ তৈরি করার পরামর্শ দেন। বর্ষা আসছে, এই সময় সতর্ক থাকা, গরম জল খাওয়ার পরামর্শ দেন। ২৮ জুন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নর সিং রাও-এর জন্ম শতবার্ষিকী, তার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী পুনরায় আশা ব্যাক্ত করে বলেন, ২০২০ বছর আমাদের নতুন পথ বা দিশা দেখাবে।
কোন মন্তব্য নেই