Header Ads

অসমে ৪ হাজার ছাড়াল কোভিড আক্ৰান্তের সংখ্যা, গণ সংক্ৰমণের আতঙ্কে গুয়াহাটিবাসী

নয়া ঠাহর ওয়েব ডেস্ক, ১৫ জুনঃ গুয়াহাটিতে অতিমারি কোভিড-১৯ এর গণ সংক্ৰমণ নিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। রবিবারের মধ্যে রাজ্যে করোনা আক্ৰান্তের সংখ্যা ৪ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। সোমবার দুপুরের মধ্যে করোনা আক্ৰান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৪১৫৯ জনে। জুনের ৪ তারিখে কোভিড-১৯ এ আক্ৰান্তের সংখ্যা ২ হাজার ছিল। ১০ দিনের মধ্যে সেই সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। মাৰ্চের ৩১ তারিখ অসমে প্ৰথম করোনা আক্ৰান্ত রোগী ধরা পড়ে। তারপর কোভিড কেস এক হাজারের কোটায় পৌঁছতে প্ৰায় দু মাস সময় লেগেছিল। মে মাসের ৪ তারিখ থেকে যখন কেন্দ্ৰ সরকার রাজ্যগুলিতে যান বাহন পরিবহন ব্যবস্থা চালু করার অনুমতি দেওয়ার পর থেকে ভিন রাজ্য থেকে যাত্ৰীরা আসতে শুরু করল। তারপর থেকেই হু হু করে রাজ্যে কোভিড আক্ৰান্তের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করল। এব্যাপারে সচেতন মহলের ধারনা, মাৰ্চের ২৫ তারিখ থেকে কেন্দ্ৰ যখন লকডাউন লাগু করল, তখন যদি অন্তত এক সপ্তাহ সময় দিয়ে ভিন রাজ্যে আটকে থাকা মানুষগুলোকে নিজের নিজের রাজ্যে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হত তাহলে হয়তো কোভিড-১৯ এর সংক্ৰমণ এতোটা ছড়াতো না। অন্যদিকে ভিন রাজ্যে আটকে থাকা মানুষগুলোও নিজের পরিবারের সঙ্গে শান্তিতে দিন কাটাতে পারতো। তবে একটি বিষয় লক্ষ্যনীয়, রাজ্যে কোভিড আক্ৰান্তের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি বহু রোগী কোভিড থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।  


শনিবার স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেই দিয়েছেন- আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রাজ্যে ট্ৰেনে করে আরও ২৫ হাজার যাত্ৰী ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে। ১৭ টি ট্ৰেনের মধ্যে কয়েকটি কেরল এবং ২টি ট্ৰেন কৰ্নাটক থেকে অসমে ঢুকবে।
ভিন রাজ্য থেকে আসার যাত্ৰীদের ভিড়ে উত্তরপূৰ্বাঞ্চলের ত্ৰিপুরা সমেত অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও কোভিড আক্ৰান্তের সংখ্যা বেড়েছে। ত্ৰিপুরায় ১০৭৯ জন কোভিডে আক্ৰান্ত হয়েছে। পাশাপাশি রবিবার পৰ্যন্ত মণিপুরে ৪৫৮ জন কোভিডে আক্ৰান্ত হয়েছে। নাগাল্যান্ডে আক্ৰান্তের সংখ্যা ১৬৮, মিজোরামে আক্ৰান্তের সংখ্যা ১১৭, অরুনাচলপ্ৰদেশে আক্ৰান্তের সংখ্যা ৯১ এবং মেঘালয়ে আক্ৰান্তের সংখ্যা ৪৪।

এদিকে গুয়াহাটিতে ২৫ জনেরও বেশি লোকের শরীরে কোভিড পজিটিভ ধরা পড়েছে। যাদের কোনও ভ্ৰমণ বৃত্তান্ত নেই। ফলে এ নিয়ে শনিবার গভীর উদ্বেগ প্ৰকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা। ১৫ জুন থেকে জুনের শেষ অবধি প্ৰত্যেকদিন ৫০ হাজার কোভিড টেস্ট করার কথা তিনি জানিয়েছেন। মহানগরের বিভিন্ন পেট্ৰেল পাম্প, সামগ্ৰী বোঝাই ট্ৰাক বাইরের থেকে এসে যেখানে থামানো হয় সেইসব জায়গাগুলিতে কোভিড টেস্ট করা হবে। তাছাড়াও পাৰ্কিং প্লেসগুলিতে টেস্ট করা হবে। জাতীয় সড়কের পাশে ধাবাগুলিতে কোভিড টেস্ট করার কথা তিনি উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও গুয়াহাটিবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন যদি কেউ মনে করেন যে তার করোনা উপসৰ্গ দেখা দিয়েছে তাহলে তিনি স্বেচ্ছায় মহানগরে ব্যবস্থা করা হয়েছে এমন ১২টি স্বাস্থ্য কেন্দ্ৰে গিয়ে নিজে থেকেই কোভিড টেস্ট করিয়ে নিতে পারবেন। তিনি এও বলেছেন যদি দেখা যাচ্ছে পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে তবে মহানগরবাসীকে আরও একবার লকডাউনের জন্য প্ৰস্তুতি নিতে বলেছেন। কোভিড সংক্ৰমণ ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নিতেও সরকার পিছ পা হবে না উল্লেখ করেছেন তিনি।    

এদিকে মহানগরের কোভিড আক্ৰান্তের সংখ্যা ক্ৰমশ বাড়ছে দেখে আটগাঁও এলাকায় সোমবার থেকে সাত দিনের জন্য সমস্ত দোকান পাট বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকার ব্যবসায়ীরা। এই কদিন এটি রোড ফ্লাই ওভার থেকে শুরু করে মারোয়ারি হাসপাতাল পৰ্যন্ত সমস্ত দোকান পাট বন্ধ করে থাকবে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে বৰ্তমানে আটগাঁওয়ের স্টিল হাউস, ধনুকা অ্যাপাৰ্টমেন্ট, সাগর অ্যাপাৰ্টমেন্ট এবং বৃন্দাবন ল্যানে কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে ফ্যান্সি বাজারের তিওয়ারি মাৰ্কেট ও ১৪ জুন থেকে বন্ধ রয়েছে। ২০ জুন পৰ্যন্ত বন্ধ রাখবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বার বার বলা হচ্ছে সবাই যেন কোভিড-১৯ এর সরকারের বেধে দেওয়া সমস্ত প্ৰোটোকল মেনে চলে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাকে অভ্যাসে পরিণত করার কথা বলা হচ্ছে। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.