Header Ads

'আমি বন্দি'--জানালেন পাকিস্তানের পরমাণু বোমার জনক !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির স্থপতি ডঃ আবদুল কাদির খান তাঁর 'বন্দিদশা' থেকে মুক্তির জন্য দেশটির শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছেন। আদালতে দাখিল করা আবেদনে পাকিস্তানের পরমাণু বোমার জনক জানান, তিনি সরকারী সংস্থাগুলোর দ্বারা বন্দি রয়েছেন এবং তাঁর চলাচলের স্বাধীনতার জন্য করা মামলায় আদালতে উপস্থিত থেকে সওয়াল করার অনুমতি তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না।

২০০৪ সালে টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যের মাধ্যমে কাদির খান ইরান, উত্তর কোরিয়া ও লিবিয়ায় পারমাণবিক তথ্য পাচারের কথা স্বীকার করেন। যদিও পরে কাদের খান তাঁর এ বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। এরপর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ তাঁকে ক্ষমা করে দিলেও গৃহবন্দী করে রাখেন। পরে ২০০৯ সালে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত তাকে মুক্তির আদেশ দিলেও তিনি মুক্তি পাননি। সে সময় থেকে তিনি ইসলামাবাদের একটি সুরক্ষিত এলাকায় কঠোর পাহারার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন।
১৪ মে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া একটি হাতে লেখা নোটে ডঃ খান বলেছেন, 'আমাকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছিল যাতে কারো সাথে মুক্তভাবে চলাচল বা কারো সাথে সাক্ষাৎ করতে না পারি। গৃহবন্দীর আদেশ সরকারিভাবে ২০০৯ সালে তুলে নেয়া হলেও এখনো নিরাপত্তা কর্মীর বেষ্টনী ছাড়া কোথাও চলাচলের সুযোগ পাই না। এধরনের অবরুদ্ধ জীবন মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী।'
প্রাক্তন পারমাণবিক বিজ্ঞানী গত বছর একটি পিটিশন দায়ের করেছিলেন যে, পূর্বের আদালতের আদেশের পরেও তাকে সম্মতিযুক্ত শর্তাবলীতে চলাফেরার স্বাধীনতা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া সত্ত্বেও তাকে এখনো বন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছে। ফলে তিনি শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার তিনি তার মামলার শুনানি করা বিচারকদের কাছে একটি নোট প্রেরণ করে বলেছেন যে, তিনি গত শুনানির দিন তাদের সামনে হাজির হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগের (এসপিডি) এজেন্টরা তাকে আদালত ভবনে আনার পরেও আদালতের কক্ষে নিয়ে যাননি। ডঃ খানের আবেদনের জবাব দিতে আদালত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
পাকিস্তানের অ্যাটর্নি-জেনারেল খালিদ জাভেদ খান রয়টার্সকে বলেন, 'আমরা এখনো নোটিশ পাইনি তবে তা আসবে, আদালতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা নিয়মিত শুনানির জন্য আবেদনটি গ্রহণ করবে কিনা।'
উল্লেখ্য, গত ১৬ বছর ধরে পাকিস্তানের পরমাণু বোমার জনককে কঠোর নিরাপত্তার বেষ্টনীতে থাকতে হচ্ছে। প্রিয়জন, বন্ধু-বান্ধব কিংবা স্বজনের সঙ্গে চাইলেই তিনি দেখা করতে পারেন না। তারাও কাদির খানের কাছে হুট করে চলে আসতে পারেন না। একাকী অনেকটা বন্দী এই জীবনে হাঁফিয়ে উঠেছেন এই পরমাণু বিজ্ঞানী। ২০০৪ সালে ইরান, লিবিয়া ও উত্তর কোরিয়ার কাছে পারমানবিক বোমা বানানোর কৌশল জানিয়েছেন একথা তিনি স্বীকার করার পর তাঁকে এমন গৃহবন্দী অবস্থায় থাকতে হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.