Header Ads

চৈতালি বেলাশেষে...এক বাংলাদেশী মেয়ের গপ্প.. ষষ্টদশ পর্ব(১৬)

দেবাশীষ মুখাৰ্জী 

মানুষের যখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায় মানুষ তখন নিজেই প্রতিবাদ করতে শিখে যায়...প্রতিবাদের ভাষ তখন তার আচরণে ফুটে ওঠে....
পরদিন সকালে উঠে নিলয় কিছু না খেয়েই বেরিয়ে যায়...মৌলি তখন অন্য কাজে ব্যাস্ত....মৌলি এসব নিয়ে আর খুব একটা ভাবে না...খিদে পেলে মানুষ খেয়ে নেবেই...
তবে মৌলি নিজেকে প্রস্তুত রাখে...ডানা ছাটার পর্বটা
যখন তখন শুরু হতে পারে...
 
এদিকে সানি মাঝে মাঝেই ফোন করে মৌলিকে...মৌলি এখন হুইস্পারিং করে কথা বলতে শিখে গেছে ফোনে....নিলয় দোকানে থাকলে তখনই ফোন আসে সানির....মৌলি এই বন্ধুত্ত্বটা খুব উপভোগ করে...তার দিক থেকে এটা বন্ধুত্ত্ব ছাড়া আর কিছু নয়...এতোদিনে পুরুষ সম্বন্ধে একটা তিক্ত ধারনা তার মনে এসে গেছে...তবে সমাজে বাঁচতে গেলে একটা পুরুষ লাগে...একা মেয়েমানুষ হয়ে চলাফেরায় অনেক প্রতিবন্ধকতা আসে....
নিলয় সেদিন শীতের জামাকাপড়ের অর্ডার দিতে কলকাতায় গেছে....শীতের শুরু সবে হচ্ছে....সকালে বেরিয়ে গেছে ফিরতে ফিরতে সেই রাত...এটা জেনেছে সানি নিলয়ের কাছ থেকে....
দুপুরে খাওয়াদাওয়া সেরে একটু গড়িয়ে নেবার জন্য বিছানায় শুয়েছে...এমন সময় ফোন আসে সানির....
এককথা দুকথার পর সানি বলে...কাল রাতে আপনাকে নিয়ে একটা স্বপ্ন দেখলাম....
মৌলি বলে....ভোররাতে দেখলে সেই স্বপ্ন সফল হয়..রাত দেখেছেন তাই সত্যি হবার সম্ভবনা কম...
সানি বলে স্বপ্নটাতো শুনুন....
মৌলি বলে...বলুন শুনছি....
এবারে দোলের দিন শান্তিনিকেতনের বসন্তউৎসবে আমি আর আপনি দোল খেলছি...
কথাটা শুনে হো হো করে হেসে ওঠে মৌলি...দেখুন স্বপ্ন যখন দেখছেন তখন আর একটু বেশী করেই ঘি ঢেলে দেখুন না মশাই....শান্তিনিকেতন না দেখে মরিশাস দেখলেন না কেন....বটে আপনার দিবাস্বপ্ন...
মৌলির কথা শুনে কথার খেই হারায় সানির...কি বলবে আর বুঝে উঠতে পারেনা....এই মহিলা এমন যে ধরা দিয়েও ধরা দিতে চায় না...পুরুষকে আপারহ্যান্ড নেওয়াটা প্রায় অভ্যাসে পরিণত করেছেন ইনি....এনাকে কিছু বলা মানে দেওয়ালকে বলা....
সানির মনে অনেক কিছু চলতে থাকে এসব নিয়ে...
ফোনের এ প্রান্ত থেকে মৌলি বলে কি হলো চুপ করে গেলেন কেন...
সানি আমতা আমতা করে বলে...না মানে কি বলবো তাই ভাবছি....আচ্ছা আপনার এমন কোন স্বপ্ন নেই..?
মৌলি বলে আছে তো...তবে সেটা কারুর সাথে নয়...আর এটা ঠিক স্বপ্ন নয় বলা যেতে পারে এটা আমার একটা অবশেশন...যদিও কাউকে কোনদিন বলিনি....
আমাকে বলবেন...? সানি বলে....
মৌলি কিছুটা ভেবে জবাব দেয়....হুঁ...বলতে পারি...
সানি কিছুটা রিকুয়েস্ট এর সুরে বলে...বলুন না প্লিজ...
মৌলি বলতে শুরু করে....আমার অবশেশন...বৃষ্টি ভেজা একটা রাতে...একটা ওভার কোট পড়ে...একাকি রাস্তায় হাঁটবো একটা সিগারেট খেতে খেতে....
সানি অবাক হয়ে বলে....ব্যাস এই টুকু...!!!
মৌলি বলে....এই টুকুটাই এখনো পুরন হয়নি...তাই আমার কাছে এটা এইটুকু নয়...অনেক অনেক বড়..
ওদের কথার মাঝেই কল ওয়েটিং অপশনে একটা কল আসছিলো মৌলির ফোনে...
মৌলি সানিকে বলে আমার একটা কল আসছে...আপনাকে পরে ফোন করবো বলে কল কেটে দেয় সানির....
ফোনটা ছিলো নিলয়ের....
ফোন করেই নিলয়ের প্রথম প্রশ্ন...কি ব্যাপার কোথায় এতো ব্যাস্ত ছিলে....
মৌলিকে নিজেকে বাঁচাবার জন্য বলতে হয়...দিদি ফোন করেছিলো....
নিলয় বলে...তোমার দিদি আমি বাড়িতে না থাকলেই বেশী ফোন করে...কেন বলতো...যাক যেটার জন্য ফোন করছিলাম....
তোমার একটা পছন্দের রঙ বলো....এখানে দারুন সব শাড়ির কালেকশন এসেছে....তোমার জন্য একটা নেবো ভাবছি....
মৌলি অবাক হয় ভেবে...বিয়ের প্রায় পাঁচ বছর হতে চলল এখনো তার পছন্দের রঙ জানা নেই নিলয়ের...
মৌলি বলে সাদা নিও...
নিলয় হেসে বলে...সাদা কেন...তুমি তো বিবাহিত...
মৌলি চুপ করে যায়...বলে যা ইচ্ছে নাও..
ফোন কেটে মৌলি মনে মনে বলে....আমার দুর্ভাগ্য যে আমি তোমার কারনে বিবাহিত....
চলবে....


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.