Header Ads

চীনা প্রেসিডেন্ট প্রসঙ্গে ট্রাম্প : ওর সঙ্গে আমি কথা বলতে চাই না !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
করোনা সংকটের জের ধরে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে চলছে বাকযুদ্ধ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দিয়ে বলেছেন, 'শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো আগ্রহ তাঁর নেই।' এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশেই দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে।

করোনা সংকটের প্রথম পর্যায়ে চীনের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বর্তমানে সে দেশের বিরুদ্ধে তোপ দেগে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকায় করোনা সংকটের দায় যতটা সম্ভব চীনের উপর চাপানোর চেষ্টা করে চলেছেন তিনি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত ও উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। এমনই প্রেক্ষাপটে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করার প্রচ্ছন্ন হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, 'এই মুহূর্তে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে কথা বলার কোনো আগ্রহ তাঁর নেই। গত জানুয়ারি মাসে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিকে বড় সাফল্য হিসেবে তুলে ধরলেও সে দেশ যেভাবে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, তার ফলে তিনি অত্যন্ত হতাশ হয়েছেন, বলেন ট্রাম্প। তাঁর মতে, চীনাদের কখনোই এমনটা হতে দেওয়া উচিত হয়নি।
চীনের এমন নেতিবাচক ভূমিকার প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমেরিকার কিছু রাজনীতিক শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দাবি করছেন। যেমন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু ক্ষেত্রে চীনা ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ করার ডাক দিয়েছেন এক সংসদ। সেই সব দাবি সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, 'অনেক কিছুই করা সম্ভব। আমরা এমনকি গোটা সম্পর্কই ছিন্ন করতে পারি। এমনটা করলে আমেরিকার পাঁচ লাখ কোটি ডলার বেঁচে যাবে।
উল্লেখ্য, চীন থেকে আমেরিকার আমদানির এই আনুমানিক অঙ্ককে ট্রাম্প 'লস্ট মানি' বা হারানো অর্থ' বলে বর্ণনা করেন। মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী স্টিভ মনুশিন বলেন, করোনাভাইরাস সম্পর্কে চীনের আরো অনেক তথ্য দেওয়া উচিত। তাঁর মতে, ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ সম্পর্কে ভাবনাচিন্তা করছেন। গোটা প্রশাসন আমেরিকার অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও মানুষের স্বাস্থ্যের উপর এই ভাইরাসের প্রভাব নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভূগছে। প্রেসিডেন্ট অর্থনীতি ও আমেরিকার কর্মীদের সুরক্ষার জন্য সব কিছু করবেন, বলেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী।
চীন অবশ্য শুরু থেকে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। করোনা সংকট সম্পর্কে সে দেশ যথেষ্ট স্বচ্ছ মনোভাব
দেখিয়েছে বলে দাবি করছে। ওয়াশিংটনের লাগাতার অভিযোগের মুখে কোণঠাসা বেইজিংও পালটা অভিযোগ করে চলেছে। দুই
পক্ষই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় প্রকাশ
করছে।
এদিকে, চীনা অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড-এর বিশেষজ্ঞ কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান লি ইয়ং বলেন, তার দেশ এখনো আশা করে বাণিজ্যের বিষয়টি আমেরিকা রাজনীতিকীকরণ করবে না। কারণ তা কোনো পক্ষের জন্যই মঙ্গলজনক হবে না।
চীনের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ ছিন্ন করার উদ্যোগকে অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করছেন। বিশেষ করে বর্তমান সংকটের সমাধান করতে হলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য বলে তাঁরা মনে করেন। তাছাড়া চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করলে আখেরে মার্কিন অর্থনীতিরই মারাত্মক ক্ষতি হবে বলে অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.