Header Ads

'বাংলার ৯৯ শতাংশ প্রায় শেষ,দুই ২৪ পরগনা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে'--বিষাদের সুর বিষন্ন মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে !!

 বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
ভারতে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়েছে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা। অন্তত ১০-১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, 'এটা ডিজাস্টার, আমরা শকড'। বাংলায় প্রায় কয়েক লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি তছনছ হয়ে গিয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। চাষের ক্ষেত , থেকে নদীর ব্রিজ সমস্ত ভেঙে গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে আম্ফানের জেরে।

ঝড়টি পুরোটাই পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। এতে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা ‘ধ্বংস’ হয়ে গেছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে, প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, একটা আফটার শক তো থাকবেই। এখনই সমস্ত মিটবে না। পুরুলিয়া , বাঁকুড়ার মতো জায়গায় আফটার শক দেখা যেতে পারে বলে তিনি জানান। দুই ২৪ পরগনা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে এদিন মমতা বলেন , ৫ লক্ষ মানুষকে ত্রাণ দিতে পারা গিয়েছে বলে খানিকটা স্বস্তি হয়তো বাংলা পেয়েছে। তবে এখনই যেন কেউ বাড়ি থেকে না বের হন।
এদিন নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে মমতা সাফ বলেন,যে সকলকেই বাংলার উন্নয়নের কাজে যোগ দিতে হবে। কাল থেকেই এই আম্ফানের তাণ্ডবে ভেঙে পড়া রাজ্যকে কীভাবে ফের পুরনো দিনে ফিরিয়ে দেওয়া যায় তার রূপরেখা তৈরি হবে। এই জন্য আগামীকাল বিশেষ মিটিং রয়েছে নবান্নে।
বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভূমিতে ঢুকে পড়তে শুরু করে এবং সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন উপকূলে আছড়ে পড়ে আমফান। কলকাতায় ঘণ্টায় প্রায় ১৩৩ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায় ঝড়ো হাওয়া। এর জেরে লণ্ডভণ্ড হয় কলকাতা-সহ দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর। হাওড়া, হুগলি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরেরও হাজার হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি এবং গাছপালা ভেঙেছে। ক্ষয়ক্ষতি আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত ঝড়ে তিন জনের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে।
হাওড়ার শালিমারে ঝড়ে উড়ে যাওয়া টিনের আঘাতে মারা গেছে ১৩ বছরের এক কিশোরী। মিনাখাঁয় মাথায় গাছ পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। ওদিকে, বসিরহাটে বাড়ির উঠোনে গাছ ভেঙে পড়ে মারা গেছে ২০ বছরের এক তরুণ।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, “মৃতের সংখ্যাটা এখনি বলা যাচ্ছে না। ১০-১২ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি।” রাত ৮টার পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও, এখনও বিপদ কাটেনি বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
উপকূলীয় সুন্দরবন,দিঘাসহ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বহু এলাকা,মন্দারমণি, শংকরপুর, তাজপুর, কুলপি, কাকদ্বীপ মিনাখাঁ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, হাসনাবাদ, হাড়োয়া-সহ উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ অংশ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। জলের তোড়ে ভেসে গেছে সড়ক, সেতু, বাড়িঘর।
আমফানের প্রভাবে সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস বেড়েছে। ঝড়ের দাপট বিকেলের পর থেকে বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল থেকেই ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে।
পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ের দাপট বাড়ে। দিঘায় সকাল থেকেই সমুদ্র ছিল উত্তাল। প্রবল জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। সমুদ্রবাঁধও কিছু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। উপকূলীয় অনেক জায়গাতেই বাঁধ ভেঙে সমুদ্রের জল ঢুকে পড়ে।
বিভিন্ন জায়গা থেকে এখনো ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে। কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়েছে অনেক জায়গায়। কলকাতার মানুষ বহু বছর এমন ভয়াবহ ঝড় দেখে নি। শত শত গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় যোগাযোগ কার্যত বন্ধ। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে গোটা শহর।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.