Header Ads

চৈতালি বেলা শেষে...এক বাংলাদেশী কন্যের গপ্প.. চতুর্থ পর্ব (৪)

দেবাশীষ মুখাৰ্জী

টাঙ্গাইল শহর....বাংলাদেশ....
এই টাঙ্গাইলের ভারতেশ্বরী হোমস....এই মহিলা স্কুলের নাম গোটা বিশ্বের কাছে সমাদৃত...বলা চলে নারী শিক্ষায় এ এক নতুন দিগন্ত....
ভোলা থেকে বেরিয়ে এসে এই স্কুলে ক্লাস নাইনে ভর্তি হয় মৌলি....কিন্তু স্কুলের নিয়মানুবর্তিতা কেড়ে নিয়েছিলো তার জীবনের ছন্দটাকে...স্কুলের হোম থেকে বেরুনো ছিলো একেবারেই নিষিদ্ধ...
ভোলা শহরে সে ছিলো গৃহবন্দি...কিন্তু টাঙ্গাইলের এই স্কুল তার কাছে জেলখানা ছাড়া আর অন্য কিছু মনে হয়নি....ভেতরে ভেতরে প্রতিদিন ভাঙতে থাকে মৌলি...
 
ভোলা শহরে থাকাকালীন রাস্তায় হয়তো বেরুতে পারতো না...কিন্তু বাড়ির ছাদে উঠে আকাশটাকে দেখতে পেতো...আর এখানে সেই আকাশ দেখা ছাদটাকেই কেড়ে নেওয়া হলো মৌলির কাছ থেকে...
ছুটিছাটাতে কোথাও যাওয়া বলতে ছিলো ঝালোকাঠির ডুমুরিয়া গ্রামে....
ব্যাস এইটুকুর মধ্যেই নিয়ন্ত্রিত তার গতিবিধি....
কিন্তু এখানে তার শ্বাসপ্রশ্বাসটাই হয়ে গেলো নিয়ন্ত্রিত...এভাবে দমবন্ধ হয়ে রোজ মরতে সে আর পারছিলো না....
একদিন বাবা স্কুলে দেখা করতে এলে সরাসরি বাবাকে জানায় মৌলি...আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো...আমি আর এখানে থাকতে পারছি না...অঝোর কান্নায় তার দুই চোখ বেয়ে তখন বয়ে চলেছে অশ্রুধারা...বুক ভরে যেখানে নিশ্বাস নিতে পারছি না সেখানে আমি বাঁচতে পারবো না বাবা....
ভোলা থেকে টাঙ্গাইল....কিন্তু টাঙ্গাইল থেকে কোথায়...দিশেহারা হয়ে ওঠে মৌলির বাবা মা...এক ভয়ঙ্কর সংকটের সামনে তখন মৌলির পরিবার...
ভোলায় যা পরিস্থিতি তাতে সেখানে ফিরে যাওয়ার উপায় নেই...এদিকে টাঙ্গাইলে মৌলির দমবন্ধ করা পরিস্থিতি...
এবার নিজেই এগিয়ে আসে এই সমস্যার সমাধানে মৌলি....
বাবাকে বলে...আমাকে ইন্ডিয়ায় জেঠুর বাড়ি পাঠিয়ে দাও...ওখান থেকেই আমি পড়াশোনা করবো....
প্রথমেই যে মৌলির বাবা এমনটা মেনে নিয়েছিলেন তেমন নয়...বোঝাতে চেষ্টা করেছেন মেয়েকে জেঠুর বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করতে ভীষন অসুবিধে হবে তার....জেঠুকে নিয়ে অসুবিধা নয়...অসুবিধা জেঠিমাকে নিয়ে...এ কথাও বোঝান মৌলিকে....
কিন্তু মৌলি আর থাকতেই রাজী নয় এখানে...এখান থেকে বেরুতে পারলে সে বাঁচে...
একাকি আর নিঃসঙ্গতায় এভাবে দমবন্ধ হয়ে বাঁচার চেয়ে মানুষের সাথে বাঁচা ভালো...সে যে রকমই মানুষ হোক....
ভারতেশ্বরী হোমস থেকে টিসি নিয়ে বেরিয়ে আসে মৌলি....
এখান থেকে তার যাত্রাপথ আর কোথাও না থেমে সোজা ইন্ডিয়ার ব্যারাকপুর...এই ব্যারাকপুরেই মৌলির জেঠুর বাড়ি....
এই ব্যারাকপুরে একটা স্কুলে ক্লাই এইটে ভর্তি হয় মৌলি....
পিছনে পড়ে থাকে...ভোলা শহর...টাঙ্গাইলের ভারতেশ্বরী হোমস...ভোলায় বাবা মা আর পড়ে থাকে
দুদেশের মধ্যেকার একটা মানুষে টানা সীমা....
শুরু করতে হয় মৌলিকে প্রায় শুন্য থেকে....এখান থেকেই শুরু হয় মৌলির নতুন জীবনের পথচলা....
কেমন ছিলো ভারতে আসার পর মৌলি...কেটেছিলো তার বন্দিজীবন...??? তার সাথে কেমন ব্যাবহার করতেন তার জেঠিমা সেতো প্রথম পর্বেই বলেছি....
বাকি পর্বগুলোতে নিয়ে আসছি...তার ইন্ডিয়াতে বন্দিদশা নিয়ে...
হ্যাঁ এখানেও সে বন্দি হয়েছিলো....
তুমি অনেক কথা যাও যে বলে
কোন কথা না বলি
তোমার ভাষা বোঝার আশা
দিয়েছি জলাঞ্জলি
চলবে....

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.