আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে কাল রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাজ্যে ৭২ জনের মৃত্যু আমফানে
কলকাতা : আমফানের পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে আগামীকাল রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হেলিকপ্টারে এলাকা পরিদর্শন করার কথা নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একসঙ্গে আকাশপথে রাজ্যের আমফান দুগর্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী। আকাশপথে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর প্রশাসনিক বৈঠক। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আমফানের ফলে সুন্দরবন এলাকায় বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি। আর সেই ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণের জন্যই প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন। আমফানের জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি রাজ্য জুড়ে। সুপার সাইক্লোনের দাপটে প্রাণ হারিয়েছে বহু মানুষ। বৃহস্পতিবার রাজ্যে আমফানে মৃতদের পরিবারকে আড়াই লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'এই দুর্যোগে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারকে সহানুভূতি জানানোর ভাষা নেই আমার। তবু যদি এই টাকাগুলো পেয়ে কিছুটা উপকার হয়।' একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও বিপর্যয়ে রাজ্যকে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। কেন্দ্রের তরফে দ্রুত বিপর্যয় মোকাবিলা ফান্ড পাঠানোর আর্জি মমতার। রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে গুড়িয়ে গিয়েছে দুই পরগণা। তছনছ কলকাতা। এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে ৭২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সাইক্লোন আমফানের জেরে খোদ কলকাতার বুকে ১৫ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। খাস কলকাতায় রিজেন্ট পার্ক এলাকায় সাইক্লোনের সময় গাছ উপড়ে মা -ছেলের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে ৭২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মৃত ৭, উত্তর ২৪ পরগনায় আমফানে ১৭ জনের মৃত্যু, হাওড়ায় মৃত্যু ৩ জনের, হুগলিতে মৃত্যু ৪ জনের, পূর্ব মেদিনীপুরে আমফানের বলি ৬। পশ্চিম মেদিনীপুর থেকেও ২ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। পূর্ব বর্ধমানে আমফানের বলি ১, নদিয়ায় আমফানের জেরে ৪ জনের মৃত্যু, সুন্দরবনে ৪ জনের মৃত্যু, ডায়মন্ড হারবার থেকে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে,পূর্ব মেদিনীপুর ৬, রানাঘাট থেকে ৬ ও বারুইপুর থেকে ৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। গ্রাম থেকে শহর, আমফানের জেরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভয়ঙ্কর এই ঘূর্ণিঝড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে শহর কলকাতা। দিন আলো ফুটতেই ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহ রূপ হাজির চোখের সামনে। এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা রাজ্যে কত ক্ষয়ক্ষতি আধিকারিকদের তার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে, রাজ্যকে সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি ট্যুইট করেন। সেখানে বাংলার প্রতি নিজের গভীর দুশ্চিন্তা ও আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে বলেন, 'দেশ পশ্চিমবঙ্গের পাশে আছে। আমফানের তাণ্ডবের ছবি দেখেছি। সঙ্কটের সময়ে পাশে রয়েছি। রাজ্যের সব মানুষের সুস্থতা কামনা করি। বাংলায় যত শীঘ্র সম্ভব স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর চেষ্টা চলছে।'
কোন মন্তব্য নেই