Header Ads

বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, তাও ভারতে শুরু যাত্রীবাহী ট্রেন !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় 
 
মঙ্গলবার থেকে ভারতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে যাচ্ছে। আপাতত দিল্লি ও নির্দিষ্ট কিছু স্টেশনের মধ্যে ট্রেন চলবে। যখন করোনার প্রকোপ কম ছিলো, তখন ট্রেন, বিমান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো। আর যখন করোনায় সংক্রমণ বেশি হচ্ছে, তখনই চালু করে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীবাহী ট্রেন। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে দেশের ভিতর ট্রেন চলাচল। আপাতত দিল্লি থেকে নির্দিষ্ট কিছু রাজ্যে ১৫টি ট্রেন যাবে এবং সমান সংখ্যক ট্রেন দিল্লিতে ফিরবে। দিল্লি থেকে হাওড়ার মধ্যেও ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। এ ছাড়া আগরতলা, পাটনা, ডিব্রুগড়, বিলাসপুর, রাঁচি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, মুম্বই, আমদাবাদ, ভুবনেশ্বর, জম্মু, সেকেন্দ্রাবাদ, রাঁচির মতো একাধিক শহরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। সারা দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন চার হাজার ২১৩ জন। এক দিনেএখনও পর্যন্ত রেকর্ড বৃদ্ধি। মোট মারা গিয়েছেন দুই হাজার ২০৬ জন। দিল্লি, মুম্বই, আমদাবাদ, কলকাতার মতো শহরগুলির অবস্থা ভালো নয়। প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আমদাবাদে ১৫ মে পর্যন্ত কার্ফু জারি হয়েছে। কিন্তু রেলমন্ত্রক এই সমস্ত জায়গাতেই ট্রেন যোগাযোগ চালু করে দিচ্ছে। ফলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
 
রেলমন্ত্রক থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, যথেষ্ট সতর্কতা নিয়ে ট্রেন চালানো হবে। প্রত্যেক যাত্রীকে মাস্ক পরতে হবে। ট্রেনে ওঠার আগে তাঁদের পরীক্ষা করা হবে। যে সব যাত্রীর মধ্যে করোনার লক্ষণ নেই, তাঁদেরই যেতে দেওয়া হবে। এই সব ট্রেনে শুধু এসি কোচ থাকবে এবং সব স্টেশনে তা থামবে না। মুশকিল হলো, এখন অধিকাংশ রোগীর আগের মতো করোনার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সরকারি হিসাবই বলছে, প্রায় ৮০ শতাংশ রোগীর শরীরে করোনার উপসর্গ মেলেনি। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাঁদের করোনা হয়েছে। সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়ার পাঁচ জন পাইলটের করোনা ধরা পড়েছে। তাঁদেরও আগে থেকে কোনও লক্ষণ ছিলো না।
মাত্র চার ঘণ্টার নোটিশে সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করে ট্রেন, প্লেন, বাস সহ সব যানবাহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকরা ভয়ঙ্কর কষ্টের মধ্যে পড়েছেন। তাঁরা হেঁটে ফিরতে গিয়ে মারা গিয়েছেন। এখনও যাচ্ছেন। সাইকেলে করে হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে গিয়ে একজন মারা গিয়েছেন। এখন অবশ্য পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ট্রেন চালু হয়েছে। তবে তা নিয়েও পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর বিতর্ক হচ্ছে। অমিত শাহ চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেছেন, রাজ্য সরকার শ্রমিকদের ফেরাচ্ছে না। তারপর রাজ্য সরকার দশটি ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। তৃণমূল অভিযোগ করেছে, কেন্দ্র রাজনীতি করছে।
কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, ভারতের মতো বিশাল দেশে এই ভাবে সব যানবাহন বন্ধ করে রাখা যায় না। রাখলে লোকের দুর্গতির সীমা থাকে না। তাই রেল ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। ট্রেন চলাচল শুরু হওয়াটা জরুরি ছিলো। এখন যা অবস্থা, তাতে খুব জরুরি না হলে কেউ সফর করবেন না। এতদিন ধরে লকডাউনের পরেও তো করোনাকে ঠেকানো যায়নি। ফলে অর্থনৈতিক কাজকর্ম শুরু করা হয়েছে। রাজ্যগুলির ভিতরে সবুজ ও কমলা এলাকায় বাস চলাচল শুরু হয়েছে। এ বার ট্রেনও চলতে শুরু করবে।
বাকি থাকলো কেবল বিমান চলাচল। একটা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। যে শহরগুলিতে করোনা কম, সেখানে বিমান চলাচল শুরু হোক। মুশকিল হলো, দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, আমদাবাদের মতো শহরকে বাদ দিয়ে বিমান চলাচল করলে তাতে বিমানে যাত্রী হবে তো?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ দিনই মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে লকডাউন নিয়ে বৈঠক করছেন। তারপর বোঝা যাবে, মুখ্যমন্ত্রীরা কী চান এবং প্রধানমন্ত্রীর মনোভাবটাই বা কী? তবে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে লকডাউনের কড়াকড়ি বড় শহরগুলিতেই প্রধানত আছে। দেশের সবুজ এলাকা প্রায় পুরোপুরি সচল। কমলা এলাকাতেও কড়াকড়ি কম। কেবলমাত্র লাল এলাকাগুলিতে তুলনামূলকভাবে লকডাউন নিয়ে কড়াকড়ি আছে। সেটাও কি এই বার শিথিল করবে সরকার?

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.