Header Ads

গৃহনির্যাতন বন্ধ করুন-- জাতিসংঘ !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় 
 
করোনা ভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট বাড়ার আশঙ্কার মধ্যে গৃহনির্যাতন, বিশেষ করে নারীদের প্রতি সহিংসতা মারাত্মাক মাত্রায় বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
রোববার রাতে এক ভাষণে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘‘অনেক নারী ও মেয়েদের ক্ষেত্রে যেখানে নিজ বাড়িতে তাদের সবচেয়ে নিরাপদে থাকার কথা ছিল, সেখানেই তারা সবচেয়ে বড় হুমকিতে রয়েছেন।
 
‘‘তাই আমি আজ আপনাদের কাছে বাড়িতে শান্তি এবং সারা বিশ্বের সব বাড়ির ভেতর নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখার নতুন একটি আবেদন নিয়ে এসেছি।''
দেশের নাম প্রকাশ না করে তিনি আরো বলেন, ‘‘এই সময়ে কয়েকটি দেশে নারীদের সহায়তা কেন্দ্রে ফোন করে সাহায্যের আবেদন করার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে।''
করোনা সংকট মোকাবেলায় সব দেশেই স্বাস্থ্যসেবাদানকারী এবং পুলিশ সদস্যদের দিনরাত এক করে কাজ করতে হচ্ছে, দেখা দিয়েছে কর্মী সংকট৷ লকডাউনের কারণে স্থানীয়ভাবে সহায়তা দেওয়া দাতব্য সংস্থাগুলোও কাজ করতে পারছে না। অনেকেই তহবিল সংকটে পড়েছে। গৃহনির্যাতনের শিকারদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যেগুলো খোলা সেগুলোতে উপচে পড়া ভিড়৷ গুতেরেস বলেন, ‘‘আমি সব সরকারের কাছে অনুরাধ করছি, আপনারা কোভিড-১৯ মোকাবেলায় জাতীয় পর্যায়ে যে পরিকল্পনা করছেন সেখানে নারীদের গৃহে নির্যাতনের শিকার হওয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকারের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিন।''
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, করোনা ভাইরাস সংকট শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে গৃহনিপীড়ন প্রতিরোধে কাজ করা অনলাইন সার্ভিসগুলোতে ফোন অনেক বেড়ে গেছে।
করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে ভারতে করফিউ জারির প্রথম সপ্তাহে দেশজুড়ে লিঙ্গভিত্তিক নৃশংসতার ঘটনা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তুরস্কে গত ১১ মার্চ থেকে জনগণকে ঘরে অবস্থানের নির্দেশ জারি করা হয়। তারপর সেখানে গৃহনির্যাতন এবং নারীদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার হার ভয়াবহ মাত্রায় বেড়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় লকডাউনের প্রথম সপ্তাহে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার প্রায় ৯০ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় অনলাইনে গৃহনির্যাতনের বিরুদ্ধে সহায়তা দান করা প্রতিষ্ঠানের খোঁজ আগের তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে খোদ দেশটির সরকার।
ফ্রান্সের এক মন্ত্রী জানান, দেশটিতে লকডাউনের প্রথম সপ্তাহে দেশজুড়ে গৃহনির্যাতন ৩২ শতাংশ বেড়ে গেছে। রাজধানী প্যারিসে এই হার আরো বেশি, প্রায় ৩৬ শতাংশ !
আশঙ্কাজনক এই পরিস্থিতিতে গুতেরেস বলেন, ‘‘যেভাবে আমরা একজোট হয়ে করোনা ভাইরাসকে হারাতে লড়াই করছি, ঠিক একই ভাবে একসঙ্গে কাজ করে আমরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মানুষের বাড়ি, সব জায়গায় নৃশংসতাকে প্রতিরোধ করতে পারবো, আমাদের পারতেই হবে।''
এর আগে গত ২৩ মার্চ সারা বিশ্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন গুতেরেস।
 
 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.