মুখ্যমন্ত্রীর কাতর আবেদনের পরেও লকডাউন মানা হচ্ছে না, কাল থেকে ব্যাপক ধর পাকর শুরু হবে, অর্থমন্ত্রী আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানালেন
অমল গুপ্ত : না, রাজ্যের একাংশ
করোনা ভাইরাস উদ্ভূত ভয়ংকর পরিস্থিতির পরও লকডাউন সংঘাতিকভাবে অমান্য করছে, মুখ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী আজও লকডাউন
মেনে চলার জন্য বার বার আবেদন করে বলেছেন, নিজের জন্য, নিজের পরিবারের জন্য, দেশকে জাতিকে ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতী কোভিড ভাইরাস ১৯ থেকে বাঁচাতে ২১ দিন পথে নামবেন না, ঘরবন্দী হয়ে থাকুন।
প্রধানমন্ত্রী বার বার একই আবেদন করে বলছেন, ২১ দিন লকডাউন মেনে চলুন, না মানলে ২১ বছর পিছিয়ে যাবেন, পরিবার ধ্বংস হয়ে
যাবে। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল আজ তেজপুর ও লখিমপুরে ডেপুটি কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকে এবং
বেতার বার্তায় রাজ্যবাসীর প্রতি কাতরভাবে আবেদন করে বলেন, আপনারা ঘরের মধ্যে থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায়
রাখুন, বরাক ব্রহ্মপুত্র, পাহাড় সমতল সব শ্রেণীর মানুষ প্রধানমন্ত্রীর
আবেদন মেনে মারাত্মক করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য সজাগ ও সচেতন হন। সামাজিক, মানবীয় দায়িত্ব পালন করুন। নিজে বাঁচুন, সমাজকে বাঁচান, রাষ্ট্রকে বাঁচান। দুর্ভাগ্য মুখ্যমন্ত্রীর এই
কাতর আবেদনের পরও আজ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের ভীড় দেখা গেল, নগাঁও জেলার রূপহিহাট এলাকার জুরিয়াতেহাট বসেছিল, যোরহাট, তিনসুকিয়া, হাইলাকান্দি এমনকি গুয়াহাটির প্রধান ব্যাবসা
কেন্দ্র ফেন্সি বাজারে কেনা বেচায় ব্যস্ত শয়ে শয়ে মানুষ, তিনসুকিয়ার মেরাপানিতে রীতিমতো বিয়ের আসরে ভোজ
সভা চলছিল, পুলিশ সব ভেঙে দেয়, উজান অসমের দুলিয়াজানে দেশি মদের ঘাঁটি ভেঙে
দেয় পুলিশ, ঢেকিয়াজুলিতে এক ক্লাবে
মদের আসর ভেস্তে দেয় পুলিশ। গুয়াহাটি আই আই টি-র এক ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল, পুলিশ বাধা দেয়।
এই সব দেখে অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা অসন্তোষ প্রকাশ করে আগামীকাল থেকে
ব্যাপক হারে ধর পাকর শুরু করার জন্য পুলিশকে কড়া নির্দেশ দেন। স্বাস্থ্য প্রতি
মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকা আজ করজোড়ে লকডাউন মানার জন্য রাজ্যবাসীর
কাছে আবেদন জানান। নিজের ঘরকে, পরিবারকে, দেশকে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচাতে ঘরে থাকুন, বাইরে বেরোবেন না। এই বিপদের দিনে কয়েকটি সংগঠন, ক্লাব গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। করিমগঞ্জ
প্রেসক্লাব দুঃস্থ মানুষদের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেয়। এই সময় সব হোটেল রেস্টুরেন্টে
বন্ধ, রাস্তার কুকুর, বিড়াল সব অভুক্ত
অবস্থায় থাকে, গুয়াহাটি, ধুবড়ি, করিমগঞ্জের সমাজসেবী সংগঠন কুকুরদের খাদ্য সরবরাহ
করতে দেখা গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা আজ সরুসোজাই ময়দানে গিয়ে ৭০০ বেডের কযরেন্টিন স্থাপনের প্রস্তুতি দেখেন। তিনি জানান, শ্রীরামপুর এবং
বক্সিরহাট গেটে আটক বাইরে থেকে আসা ব্যাক্তিদের সরুসোজাই কয়রেন্টিনে রাখা হবে। এছাড়া, বাইরে থেকে আসা বহু ব্যাক্তি নিজেদের ঘরে হোম
কোয়ারেন্টিনে আছেন, তাদেরকে এখানে
আনা হবে। জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে
নির্মাণ কাজ সম্পর্ণ হবে। এর জন্যে ২০০ টি শৌচালয় নির্মাণ করা হবে। যারা থাকবে তাদের
থাকা খাওয়া, ঔষধপত্র সব সরকার দেবে।
তিনি জানান, চূড়ান্ত বছরের এম বি বি এস-এর ৭০০ ছাত্রকে করোনা ভাইরাস নিয়ে ট্রেনিং দেওয়া হবে এবং নার্সিং-এর চূড়ান্ত বর্ষের ২০০ নার্সকে একই ট্রেনিং দিয়ে এই রোগ নিরাময়ে কাজে
লাগানো হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে করোনা ভাইরাস রোগ
নিরাময়ে রূপান্তর করা হবে। সাধারণ রুগীদের এস এম সিভিল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা
হবে। রাজ্যে আজ পৰ্যন্ত একটিও পজিটিভ কেস ধরা পড়েনি। তা না ধরা না
পড়লেও স্বাস্থ্য বিভাগ এই ভয়ঙ্কর রোগ প্রতিরোধে ব্যপক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ৮ থেকে ১০ টি হাসপাতাল, অনেক হোটেল দু-তিনটি স্টেডিয়ামকে রেডি করছে, তার জন্যে বহু
টাকা দরকার, তাই অর্থ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী
হিমন্তবিশ্ব শর্মা আজ টুইট করে অসম আরোগ্য নিধি নামে এক তহবিল গঠন করে আর্থিক সহায়তা
দেবার আহ্বান জানান। স্টেট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর
32124810101 আই এফ সি নম্বর এস বি আই এন 0010755 নম্বরে অর্থ পাঠাবার আবেদন করা
হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই