এরপর রাজস্থান-মহারাষ্ট্র-ঝাড়খণ্ড !!
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর কংগ্রেসের অবক্ষয়ের সূচনা হয়েছিল দৃষ্টিকটূভাবে সনিয়া-গান্ধীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এক চূড়ান্ত মেধাহীন নিম্নস্তরের কুচক্রী ভাঁড় নেতাদের একের পর এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্তকে দু’হাত তুলে সমর্থনের কারণে। সনিয়াকে সুপরামর্শ দানের চেষ্টা করতে গিয়ে দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন প্রণব মুখার্জীর মতো ‘চাণক্য’ নেতাও। প্রণবের দুটি মারাত্মক ‘অযোগ্যতা’ ছিল যার একটি হলো তিনি বাঙালি এবং দ্বিতীয়টি হলো তাঁর গভীর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা।
তাঁর এই দূরদর্শিতা প্রসূত রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সঙ্কেতকে একেবারেই পছন্দ করতেন না এআইসিসি’র সংখ্যাগরিষ্ঠ অবাঙালি নেতারা--তারা নিরবিচ্ছিন্নভাবে সনিয়ার কান ভারি করে গেছেন অক্লান্ত ভাবে। বাঙালির মেধা ব্যক্তিত্ব রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দক্ষতাকে দিল্লীর অবাঙালি নেতারা চিরকাল ভয় পেয়ে এসেছে। তাই প্রণবের বদলে রাবারস্ট্যাম্প মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছেন--তুখোর প্রতিবাদী নেত্রী প্রদেশ সভানেত্রী হতে পারেন নি--ফলে তাঁকে দল ছাড়তে হয়েছে। রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা হু-হু করে কমেছে। প্রায় প্রতিটি প্রদেশ ইউনিট সাবালকত্ব হারিয়ে নাবালক হয়ে গিয়ে আঞ্চলিক দলগুলোর অভিভাবকত্বের নিচে চাপা পড়ে গেছে।
প্রণবের বদলে মনমোহনকে প্রধানমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব দেওয়ার দিন থেকেই কংগ্রেসের অবক্ষয় দ্রুত গতি পেয়েছিল--সনিয়া বোঝেন নি এবং তাকে বুঝতে দেওয়াও হয় নি। রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসকে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আঞ্চলিক দলগুলোর দরজায় দরজায় কৌটো হাতে দাঁড়াতে হয়েছে। কেন্দ্রে তবুও দু’বার জোট সরকারকে নেতৃত্ব দিতে পেরেছে কংগ্রেস ইন্দিরা-রাজীবের ভাবমূর্তি বিক্রি করেই। কিন্তু দু’বারের জোট সরকারের নেতৃত্বে থেকেও কংগ্রেস লাগামহীন দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নি। শরিকদের ব্ল্যাকমেলিং ও লাগাতার হুমকি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে কোনরকম পদক্ষেপ নিতে পারে নি। ফলে যত দিন গেছে কংগ্রেসের কঙ্কালসার চেহারাটা তত প্রকট হয়েছে। হতে হতে এখন তো প্রায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
১৮’র নির্বাচনে বিজেপি’র কানের পাশ দিয়ে ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনাটা বেরিয়ে গেছে। আমি তখনই বলেছিলাম--রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে বিজেপি’র ফিরে আসাটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তখন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক বৌদ্ধিকরা দু’হাত তুলে নাচতে নাচতে চিৎকার করেছেন--বিজেপি ফিনিশ ! আসলে বিজেপিকে ফিনিশ করাটা যে এখন আর কোনোভাবেই একা কংগ্রেসের পক্ষে সম্ভব নয় সেটা বুঝেও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো না বোঝার ন্যাকা ন্যাকা রাজনীতি করে চলেছেন নিজের নিজের আঞ্চলিক ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই। তাদের একমাত্র অগ্রাধিকার রাজ্যটাকে যে কোনো মূল্যে হাতের মুঠোয় রেখে কেন্দ্রে কী ভাবে জোট সরকারকে ব্ল্যাকমেলিং করার মতো প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠা যায়। ফলে সব দলের নেতা-নেত্রীরাই বুভুক্ষুর দৃষ্টি মেলে প্রধানমন্ত্রীত্বের চেয়ারের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কেউ কাউকেই ঐ চেয়ার ছাড়তে প্রস্তুত থাকেন বলেই বিরোধিতাটা প্রকৃত বিরোধিতার জায়গায় যেতে পারে না--অদূর ভবিষ্যতে যাবে বলেও মনে হয় না। সুতরাং ময়দান ফাঁকা করার প্রকৃত ‘চাণক্যীয় রাজনীতি’ বিজেপিই করবে এবং করেও চলেছে।
জ্যোতিরাদত্যি সিন্ধিয়া আশা করেছিলেন তিনি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হবেন। এই আশা কোনবিচারেই দূরাশা ছিল না। কারণ, মধ্যপ্রদেশেই নয় গোটা কংগ্রেস দলেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো যুব-আইকনকে হতাশ করার মূল্য যে দিতে হবে তা আমি আগেই লিখেছিলাম। কমলনাথ বহুবিতর্কিত বর্ষীয়ান নেতা--গোটা মধ্যপ্রদেশে তার গ্রহণযোগ্যতা জ্যোতিরাদিত্য’র তুলনায় অনেক কম--এটা জেনে বুঝেও সনিয়া-রাহুল তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করলেন। জ্যোতিরাদিত্যকে রাজ্যসভার টিকিটও দিলেন না--তাঁর উন্নয়নমূলক কোনও পরামর্শেও কান দিলেন না কমলনাথ-সনিয়া। ফলে যা হবার তাই হল।
জানি, কিছু হতাশ ব্যর্থ রাজনীতিক বা পণ্ডিত বলবেন--জ্যোতিরাদিত্য অনৈতিক কাজ করলেন। তিনি লোভের ফাঁদে পা দিলেন--তিনি ক্ষমতার লোভে অন্তর্ঘাত করলেন। দলত্যাগের এক সেকেণ্ড আগেও তাঁর সততা এবং শুদ্ধতা নিয়ে যাদের কোনো প্রশ্নই ছিল না তারাই এখন বলবেন তিনি একজন মাফিয়া--বলছেনও কেউ কেউ ! অথচ এসব বলার আগে নিজেদের গোপন খাতাটি খুলে একবার চোখ বুলিয়ে নেবেন না। জনগণকেও দেখাবেন না! কাজেই এইসব কথাবার্তায় মানুষ আর এখন কান দেয় না--তুলসী গাছ দেখলেই কুকুরের যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় এখন মানুষেরও সেই রকমেরই প্রতিক্রিয়া হয়। নির্বোধ মেধাহীন অন্ধ স্তাবকতায় বিবেক বিক্রি করে দেওয়া কিছু লোকজন ছাড়া আর কেউ এসব কথা নিয়ে মাথা ঘামায় না।
সুতরাং মধ্যপ্রদেশের পর সচিন পাইলটকে সামনে রেখে বিজেপি যদি কংগ্রেসকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। মহারাষ্ট্রের আকাশেও বিজেপি মেঘ ক্রমশঃ ঘনীভূত হচ্ছে। বিক্রয়যোগ্য ঘোড়া নিয়েই যাদের রাজনৈতিক কারবার তাদের ঘোড়া তো বিক্রি হয়ে যাবেই--কপাল চাপড়িয়ে কোনো লাভ হবে না। এই সংস্কৃতিতে তো সবাই আকণ্ঠ ডুবে আছে--কে কার দিকে আঙুল তুলবে !
রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর কংগ্রেসের অবক্ষয়ের সূচনা হয়েছিল দৃষ্টিকটূভাবে সনিয়া-গান্ধীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এক চূড়ান্ত মেধাহীন নিম্নস্তরের কুচক্রী ভাঁড় নেতাদের একের পর এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্তকে দু’হাত তুলে সমর্থনের কারণে। সনিয়াকে সুপরামর্শ দানের চেষ্টা করতে গিয়ে দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন প্রণব মুখার্জীর মতো ‘চাণক্য’ নেতাও। প্রণবের দুটি মারাত্মক ‘অযোগ্যতা’ ছিল যার একটি হলো তিনি বাঙালি এবং দ্বিতীয়টি হলো তাঁর গভীর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা।
তাঁর এই দূরদর্শিতা প্রসূত রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সঙ্কেতকে একেবারেই পছন্দ করতেন না এআইসিসি’র সংখ্যাগরিষ্ঠ অবাঙালি নেতারা--তারা নিরবিচ্ছিন্নভাবে সনিয়ার কান ভারি করে গেছেন অক্লান্ত ভাবে। বাঙালির মেধা ব্যক্তিত্ব রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দক্ষতাকে দিল্লীর অবাঙালি নেতারা চিরকাল ভয় পেয়ে এসেছে। তাই প্রণবের বদলে রাবারস্ট্যাম্প মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছেন--তুখোর প্রতিবাদী নেত্রী প্রদেশ সভানেত্রী হতে পারেন নি--ফলে তাঁকে দল ছাড়তে হয়েছে। রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা হু-হু করে কমেছে। প্রায় প্রতিটি প্রদেশ ইউনিট সাবালকত্ব হারিয়ে নাবালক হয়ে গিয়ে আঞ্চলিক দলগুলোর অভিভাবকত্বের নিচে চাপা পড়ে গেছে।
প্রণবের বদলে মনমোহনকে প্রধানমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব দেওয়ার দিন থেকেই কংগ্রেসের অবক্ষয় দ্রুত গতি পেয়েছিল--সনিয়া বোঝেন নি এবং তাকে বুঝতে দেওয়াও হয় নি। রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসকে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আঞ্চলিক দলগুলোর দরজায় দরজায় কৌটো হাতে দাঁড়াতে হয়েছে। কেন্দ্রে তবুও দু’বার জোট সরকারকে নেতৃত্ব দিতে পেরেছে কংগ্রেস ইন্দিরা-রাজীবের ভাবমূর্তি বিক্রি করেই। কিন্তু দু’বারের জোট সরকারের নেতৃত্বে থেকেও কংগ্রেস লাগামহীন দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নি। শরিকদের ব্ল্যাকমেলিং ও লাগাতার হুমকি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে কোনরকম পদক্ষেপ নিতে পারে নি। ফলে যত দিন গেছে কংগ্রেসের কঙ্কালসার চেহারাটা তত প্রকট হয়েছে। হতে হতে এখন তো প্রায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
১৮’র নির্বাচনে বিজেপি’র কানের পাশ দিয়ে ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনাটা বেরিয়ে গেছে। আমি তখনই বলেছিলাম--রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে বিজেপি’র ফিরে আসাটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তখন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক বৌদ্ধিকরা দু’হাত তুলে নাচতে নাচতে চিৎকার করেছেন--বিজেপি ফিনিশ ! আসলে বিজেপিকে ফিনিশ করাটা যে এখন আর কোনোভাবেই একা কংগ্রেসের পক্ষে সম্ভব নয় সেটা বুঝেও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো না বোঝার ন্যাকা ন্যাকা রাজনীতি করে চলেছেন নিজের নিজের আঞ্চলিক ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই। তাদের একমাত্র অগ্রাধিকার রাজ্যটাকে যে কোনো মূল্যে হাতের মুঠোয় রেখে কেন্দ্রে কী ভাবে জোট সরকারকে ব্ল্যাকমেলিং করার মতো প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠা যায়। ফলে সব দলের নেতা-নেত্রীরাই বুভুক্ষুর দৃষ্টি মেলে প্রধানমন্ত্রীত্বের চেয়ারের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কেউ কাউকেই ঐ চেয়ার ছাড়তে প্রস্তুত থাকেন বলেই বিরোধিতাটা প্রকৃত বিরোধিতার জায়গায় যেতে পারে না--অদূর ভবিষ্যতে যাবে বলেও মনে হয় না। সুতরাং ময়দান ফাঁকা করার প্রকৃত ‘চাণক্যীয় রাজনীতি’ বিজেপিই করবে এবং করেও চলেছে।
জ্যোতিরাদত্যি সিন্ধিয়া আশা করেছিলেন তিনি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হবেন। এই আশা কোনবিচারেই দূরাশা ছিল না। কারণ, মধ্যপ্রদেশেই নয় গোটা কংগ্রেস দলেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো যুব-আইকনকে হতাশ করার মূল্য যে দিতে হবে তা আমি আগেই লিখেছিলাম। কমলনাথ বহুবিতর্কিত বর্ষীয়ান নেতা--গোটা মধ্যপ্রদেশে তার গ্রহণযোগ্যতা জ্যোতিরাদিত্য’র তুলনায় অনেক কম--এটা জেনে বুঝেও সনিয়া-রাহুল তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করলেন। জ্যোতিরাদিত্যকে রাজ্যসভার টিকিটও দিলেন না--তাঁর উন্নয়নমূলক কোনও পরামর্শেও কান দিলেন না কমলনাথ-সনিয়া। ফলে যা হবার তাই হল।
জানি, কিছু হতাশ ব্যর্থ রাজনীতিক বা পণ্ডিত বলবেন--জ্যোতিরাদিত্য অনৈতিক কাজ করলেন। তিনি লোভের ফাঁদে পা দিলেন--তিনি ক্ষমতার লোভে অন্তর্ঘাত করলেন। দলত্যাগের এক সেকেণ্ড আগেও তাঁর সততা এবং শুদ্ধতা নিয়ে যাদের কোনো প্রশ্নই ছিল না তারাই এখন বলবেন তিনি একজন মাফিয়া--বলছেনও কেউ কেউ ! অথচ এসব বলার আগে নিজেদের গোপন খাতাটি খুলে একবার চোখ বুলিয়ে নেবেন না। জনগণকেও দেখাবেন না! কাজেই এইসব কথাবার্তায় মানুষ আর এখন কান দেয় না--তুলসী গাছ দেখলেই কুকুরের যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় এখন মানুষেরও সেই রকমেরই প্রতিক্রিয়া হয়। নির্বোধ মেধাহীন অন্ধ স্তাবকতায় বিবেক বিক্রি করে দেওয়া কিছু লোকজন ছাড়া আর কেউ এসব কথা নিয়ে মাথা ঘামায় না।
সুতরাং মধ্যপ্রদেশের পর সচিন পাইলটকে সামনে রেখে বিজেপি যদি কংগ্রেসকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। মহারাষ্ট্রের আকাশেও বিজেপি মেঘ ক্রমশঃ ঘনীভূত হচ্ছে। বিক্রয়যোগ্য ঘোড়া নিয়েই যাদের রাজনৈতিক কারবার তাদের ঘোড়া তো বিক্রি হয়ে যাবেই--কপাল চাপড়িয়ে কোনো লাভ হবে না। এই সংস্কৃতিতে তো সবাই আকণ্ঠ ডুবে আছে--কে কার দিকে আঙুল তুলবে !
কোন মন্তব্য নেই