ক্ষতিপূরনের দাবিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পাহাড় লাইনে অনিদৃষ্টকালের রেল অবরোধের ডাক দিল ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম
বিপ্লব দেব, হাফলং ১ ফেব্রুয়ারিঃ 
লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ রেলপথ অবরোধের ডাক 
দিল এন সি হিলস ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যে 
নিউহাফলং থেকে নিউহারাঙ্গাজাওয় পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের 
ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে না দিলে ১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৫ টা থেকে ডিমা হাসাও 
জেলায় অনিদৃষ্টকালের জন্য রেল অবরোধ গড়ে তোলা হবে বলে শনিবার হাফলঙে এক 
সাংবাদিক সন্মেলন করে এখবর জানান এন সি হিলস ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরামের
 সভাপতি ডেভিড কেভম। দীর্ঘদিন থেকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে 
ছাত্র সংগঠনটি কিন্তু উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণের ইস্যু
 নিয়ে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। সাংবাদিক সম্মেলনে ডেভিড কেভম 
ক্ষোভের সঙ্গে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল দু দু’বার রেলের 
সঙ্গে বৈঠক করে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলে আজ পর্যন্ত উত্তর 
পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ এনিয়ে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে গুরুতর 
অভিযোগ উত্থাপন করেন।
 সাংবাদিক সন্মেলনে ডেভিড কেভম বলেন ২০১৯ সালের ৭ মার্চ 
ক্ষতিপূরণের দাবিতে ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম ডিমা হাসাও জেলায় রেল 
অবোরধ গড়ে তোলার দরুন তিনদিন পাহাড় লাইনে রেল চলাচল সম্পূর্ণ অচল হয়ে 
পড়েছিল। কিন্তু সেই সময় অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল এই 
ক্ষতিপূরণের ইস্যু নিয়ে ২০১৯ সালের ১১ মার্চ বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ জানানোর 
পর ছাত্র সংগঠন রেল অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়ে ১১ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী উত্তর
 পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ও ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরামের বৈঠকে ক্ষোধ
 মুখ্যমন্ত্রী রেল কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলে উত্তর
 পূর্ব সীমান্ত রেল এতে রাজি হয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ২৯ জুন ডিমা হাসাও 
জেলাপ্রশাসন উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদের রাজস্ব বিভাগের প্রতিনিধি ও 
ছাত্র সংগঠনটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে যৌথ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা 
পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জরিপ করে এক রিপোর্ট দাখিল করার পর ২০১৯ 
সালে পার্বত্য পরিষদের রাজস্ব বিভাগ ও জেলাপ্রশাসন ক্ষতিগ্রস্থ 
গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরন বাবদ ৪ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য রেলের
 জিএমকে পত্র পাঠানোর পর ও রেল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়া নিয়ে কোনও
 ধরণের পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। পরবর্তীতে গত বছরের ২১ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী ও
 উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের সঙ্গে ক্ষতিপূরণের ইস্যু ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস
 ফোরামের সঙ্গে আরেক দফা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল ক্ষতিগ্রস্থ
 গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ রেল কর্তৃপক্ষকে দেওয়ার পর 
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল এখন পর্যন্ত এই ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেয়নি। তাই আগামী
 ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যদি উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ 
বাবদ গ্রামবাসীদের ৪ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা মিটিয়ে না দেয় তাহলে ১৭ ফেব্রুয়ারি 
সকাল থেকে পাহাড় লাইনে রেল পরিষেবা সম্পূর্ণ অচল করে দেওয়ার হুমকি দেন 
ডেভিড কেভম। তবে এবার আর আলোচনায় বা আশ্বাসে বরফ গলবে না বলে সাংবাদিক 
সন্মেলনে সোজা সাপ্টা জানিয়ে দিয়েছেন ডেভিড কেভম। এবার ক্ষতিপূরণের টাকা 
মিটিয়ে দেওয়া না পর্যন্ত রেল অবরোধ কার্যসূচী প্রত্যাহার করা হবে না কোনও 
অবস্থায় বলে সাংবাদিক সন্মেলনে মন্তব্য করেন ছাত্র সংগঠনটির সভাপতি ডেভিড 
কেভম। 
উল্লেখ্য লামডিং-শিলচর ব্রজগেজ নির্মান কাজ করতে গিয়ে নিউহাফলং থেকে 
নিউহারাঙ্গাজাও পর্যন্ত প্রায় ৫০ টি গ্রামের কয়েকশো পরিবারের কৃষি জমি ঘর 
বাড়ি নষ্ট হয়ে যায় তারপর থেকেই ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসছে এসব 
ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামের গ্রামবাসীরা। এনিয়ে বেশ কয়েকবার রেল অবরোধ করা হলে 
প্রতিবারই উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়া নিয়ে 
ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের আশ্বাস দিয়ে জিরাত ভ্যালু বাবদ ১ কোটি ৭৮ লক্ষ 
টাকা মিটিয়ে দিলে ও ল্যান্ড ডেভলপম্যান্ট বাবদ ৪ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা এখন 
পর্যন্ত মিটিয়ে দেয়নি এবং এনিয়ে টালবাহানা করে চলছে উত্তর পূর্ব সীমান্ত 
রেল কর্তৃপক্ষ বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। 









  
  
কোন মন্তব্য নেই