Header Ads

কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি থেকে তিন তালাক চটজলদি কেন দরকার ছিল! ঝোড়ো ব্যাটিং-এ জবাব মোদীর !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় 

গদিতে তিনি বসেছেন একবছরও হয়নি। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিপুল মোদী সুনামিতে ভর করে দেশের শাসনভার দ্বিতীয়বারের জন্য গ্রহণ করেছে মোদী সরকার।দ্বিতীয়বার শাসনকালের শুরু থেকেই তিন তালাক, কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির মতো একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েছে মোদী সরকার। প্রশ্ন উঠেছে এই সমস্ত সিদ্ধান্ত এত তাড়াহুড়ো করে করবার কী দরকার ছিল? কেন এত চটজলদি তাঁর সরকার কাজ করেছে, তা এদিন সংসদে বলে দিলেন মোদী।

'আমাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এত চাড়া কিসের? সব কাজ চটজলদি করার কী দরকার ছিল?' এমন বক্তব্যের পর মোদী সংসদে বলেন, ' মানুষ শুধু সরকারই বদলে দেয়নি, মানু, নিজের ভাবধারা পাল্টেছে '। আর সেই কারণেই দরকার ছিল এই চটজলদি পদক্ষেপ।
মোদীর কটাক্ষ’র নিশানায় এদিন প্রথম থেকেই ছিলেন কংগ্রেস সহ বিরোধী নেতারা। আর সেই সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা যদি আগের সরকারগুলোর রাস্তায় হাঁটতাম , তাহলে আর্টিক্যাল ৩৭০ অবলুপ্তি হত না স্বাধীনতার ৭০ বছরেও। মুসলিম মহিলারা ক্রমাগত তিন তালাক নিয়ে সমস্যায় পড়তেন।' উল্লেখ্য়, গত ৭০ বছরে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি নিয়ে কংগ্রেস সরকারের দুর্বলতাকে যেভাবে মোদী এযাবৎকালে কটাক্ষ করেছেন , আজকের নিশানা ছিল তার চেয়েও ধারালো।
'আমরা একটা নতুন পথে চলতে চাইছি। ..স্বাধীনতার পর ৭০ বছর কেটে গিয়েছে, ভারত আর উন্নয়নের জন্য অপেক্ষায় মুখিয়ে থাকতে পারছে না। আমাদের গতি ও কাজের পরিমাণ সমহারে চাই।' এভাবেই এদিন তিনি নিজের সরকারের কার্যপ্রক্রিয়ার গতিবিধি বর্ণনা করেন।
করতারপুর করিডর থেকে শুরু করে রামমন্দির বিতর্ক নিয়েও মোদী এদিন বিরোধীদের এক চুল জমি ছাড়েননি। ' আপনাদের ভাবনা চিন্তা অনুযায়ী রামজন্মভূমি চিরকালই বিতর্কে থেকে গিয়েছে। আর আপনাদের চিন্তাভাবনা নিয়ে যদি চলি ,তাহলে করতারপুর সাহিব করিডর কোনও দিনই হত না। ভারত-বাংলাদেশ সমস্যার সমাধান কোনও দিনই হতনা। '
'কংগ্রেসের রাস্তায় চললে ৫০ বছর পর এনিমি প্রপার্টি ল এর জন্য অপেক্ষা করতে হত। ৩৫ বছর পরও আমাদের পরবর্তী জেনারেশন ফাইটার এয়ারক্রাফ্টের অপেক্ষায় থাকত। বেনামি প্রপার্টি ল ২৮ বছরেও আসত না।' এমন ভাষাতেই এদিন কংগ্রেসকে অলরাউন্ড আক্রমণ শানান মোদী।
এদিন মোদী বলেন, গোটা বিশ্ব অপেক্ষা করে রয়েছে ভারতের থেকে। তিনি বলেন , 'এখনই যদি আমরা চ্যালেঞ্জে চ্যালেঞ্জ না করি আর গতি না বাড়াই কাজের তাহলে উন্নয়ন হবে না। দেশ অনেক বছরের জন্য বহু সমস্যায় ভুগবে। '
এদিন নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন , একাধিক সরকারি প্রকল্প নিয়েও। তিনি বলেন, সরকার যদি দ্রুততার সসঙ্গে কাজ না করত, তাহলে ১১ কোটি মানু। শৌচালয় পেত না। পরিবর্তন হত না উত্তরপূর্ব ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতির। ১৩ কোটি মানুষ গ্যাসের সংযোগ পেতেন না। এমন ভাষাতেই পরোক্ষেও বিরোধীদের কটাক্ষ করেন তিনি।
লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের জবাবি বক্তব্যের শুরু থেকেই এদিন রাজকীয় শক্তিশেলে বিপক্ষকে বেঁধেন এই গুজরাতি রাজনীতিক তথা প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিজেপির অনন্ত হেগরের গান্ধীজিকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সংসদে কংগ্রেসের তরফে অধীররঞ্জন চৌধুরীর তোপ যে মোদী ভোলেননি তা এদিন প্রমাণ করে দিলেন। ভরা সংসদভবনে তিনি একের পর এক বাউন্ডারিতে কার্যত ঝোড়ো ইনিংস খেলে গিয়েছেন আজ। আর সেই ভাষণের শুরুতেই ছিল গান্ধীজি প্রসঙ্গ।
'আপনাদের জন্য গান্ধীজি ট্রেলার হতে পারেন, কিন্তু আমাদের জন্য তিনি জীবন।' এইভাবেই গান্ধীজিকে ঘিরে সংসদে কংগ্রেসের উত্তাল বিক্ষোভের জবাব দিয়েছেন মোদী। অনন্ত বিজেপি নেতা হেগড়ের বক্তব্যের পর কংগ্রেসের তরফে সংসদে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। তার জবাব দিয়েই এদিন মোদী নিজের অবস্থান প্রকাশ করেন। আর মোদীর বক্তব্যের সময় থেকেই অধীরের নেতৃত্বে কংগ্রেস শিবির শুরু করে 'মহাত্মা' গান্ধী অমর রহে' স্লোগান।
গান্ধীজির স্বাধীনতা আন্দোলনকে 'নাটক' বলে মন্তব্য করেন। আর তারপরই সংসদে তার পাল্টা হিসাবে অধীররঞ্জন চৌধুরী মোদী শিবিরকে কটাক্ষ করে বলেন, 'এটা তো এখন ট্রেলার ..এরপর দেখুন'। সেই বক্তব্যের জবাব সংসদের বাজেট অধিবেশনেই ফিরিয়ে দিলেন মোদী।
এদিন রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের সূত্র ধরেই তিনি 'নতুন ভারত' গড়ার বার্তা দেন। তৃতীয় দশকে ভারতের উন্নয়নের বার্তার রেশ ধরেই তিনি শুরু করেন বিরোধীদের কটাক্ষ। আর শুরুতেই তিনি রাষ্ট্রপতির ভাষণের দিন বিরোধীদের 'কালো কাপড়' পরে প্রতিবাদকে কটাক্ষ করেন। আর তারপরই বিরোধীদের দিকে আসতে থাকে একের পর 'মোদীচিতো' বাণ!

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.