টেট বয়কট করার পথে ঠিকা শিক্ষকরা সিদ্ধান্ত শীঘ্রই !
নয়া ঠাহর প্রতিবেদন, বদরপুর : সরকারি অবহেলা আর টালবাহানায় তিতিবিরক্ত হাই স্কুলের ঠিকা ভিত্তিক শিক্ষকরা টেট নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে শীঘ্রই বৈঠকে বসছেন। ২০১০ - য়ে সারা অসমে চুক্তি ভিত্তিক সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষকের নিযুক্তি হয়েছিল। এদের আকাডেমিক রেকর্ড এবং শিক্ষাদানের দক্ষতা দেখে কংগ্রেস আমলের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই শিক্ষকদের সেরা শিক্ষক বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। প্রায় ভেঙ্গে পড়া রাজ্যর প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড সোজা করতে এই চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষকরা অগ্রনী ভুমিকা নিয়েছিলেন এটা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। এই শিক্ষকদের ভরসাতেই সরকার মাধ্যমিকে ন্যুনতম ৩০ শতাংশ স্কুল প্রতি ছাত্র পাশের শর্ত বেঁধে দিতে পারছে। কিন্তু নিজেদের দায়িত্ব পালন যথারীতি করলেও এই শিক্ষকদের প্রতি সরকারের বিমাতৃসুলভ মনোভাব বদলাচ্ছে কই? উল্টে বছরের পর বছর এই শিক্ষকরা স্কুল কর্তৃপক্ষ বা সরকারি তরফে নানা ভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। এরা যে সব স্কুলে শিক্ষকতা করছেন তার অনেকগুলি স্কুলের সিনিয়র বা হেড মাস্টারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এদের থেকে কম। ফলে প্রফেশন্যাল জেলাসি-র শিকার এদের হরদম হতে হচ্ছে।
কয়েক বছর আগে সরকার টেট ঘোষণার পর এরা যখন এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন সরকারি তরফে তাঁদের টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দিলে এদেরও টেট উত্তীর্ণদের সঙ্গে স্থায়ী করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টেট পাস দের চাকরি হলেও চুক্তি ভিত্তিকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করেনি সরকার। এরা সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে গেলেও সরকারি উদাসিনতায় শুনানির তারিখ বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে আবার নুতন করে মাধ্যমিক টেট ঘোষণা করেছে সরকার। পরীক্ষা আগামী ২২ ডিসেম্বর। আর হাইকোর্টে যে কেস চলছে তার শুনানির তারিখ পড়েছে ৬ জানুয়ারি। এই অবস্থায় কী করবেন ভেবে পাচ্ছেননা চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষকরা।
শিক্ষা মন্ত্রক তাঁদের ভবিষ্যত নিয়ে কোন পরিস্কার সিদ্ধান্তে আসছে না। তার উপর সরকার কে বিশ্বাস করে একবার ঠকেছেন। এছাড়া যদি টেট--য়ে বসেন আর পাস করেন তবে চাকরি স্থায়ী হলেও এক ধাক্কায় দশ বছরের সিনিয়রিটি খোয়া যাবে। সম্প্রতি তারা গুয়াহাটিতে আন্দোলন করেছেন।বরাকেও আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শোনা যাচ্ছে, সারা অসমেই এই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা টেট বয়কট করবেন। ঠিকাভিত্তিক শিক্ষক সংস্থার করিমগঞ্জ জেলার সভাপতি অরূপ রায় দু একদিনের মধ্যেই এ ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। যদি কোন শিক্ষক সংগঠনের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে টেট পরীক্ষায় বসেন তবে ভবিষ্যতে তাদের কোন বিষয়ে সংগঠন দায় নেবেনা গোছের কড়া সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
কোন মন্তব্য নেই