Header Ads

নর্থ-ইষ্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি তৈরি হবে’ বিশ্বব্যাংক বন্য নিয়ন্ত্রনের অসমকে ৫ হাজার কোটি টাকা দেবে ঃ কেশব মহন্ত

অমল গুপ্ত,গুয়াহাটি
অসমের বন্যা এবং ধ্বকে জাতীয় সমস্যা হিসাবে গণ্য করে অসমকে উপযুক্ত আর্থিক প্যাকেজ দেবার দাবিতে অসম বিধানসভায় বহুবার সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল দিল্লিতে পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল। ২০০২, ২০১২ সালে এবং ২০১৫ সালে অসম বিধানসভার অধ্যক্ষ সর্ব দলীয় প্রতিনিধি দল দিল্লিতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার থেকে কোনাে সদর্থক সাড়া পাওয়া যায়নি। আজ বিধানসভায় জলসম্পদ মন্ত্রী কেশব মহন্ত পুনরায় সর্বদলীয় এক প্রতিনিধি দল দিল্লিতে পাঠিয়ে অসমের বন্যা ও ধ্বস্ সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা হিসাবে গণ্য করে আর্জি জানাতে বলেন অধ্যক্ষকে। আজ বিধানসভায় সংকল্প প্রস্তাবের জবাবে জলসম্পদ মন্ত্রী কেশব মহন্ত বলেন, আগে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যের আপত্তির জন্য অসমের বন্যা সমস্যা সমাধানে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে এই সর্বপ্রথম নর্থ-ইষ্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি’ তৈরি করা হয়েছে। তা অবশ্য সরকারি ভাবে ঘােষণা করা হয়নি, সংসদে এ বিষয়টি নিয়ে বিল উত্থাপন করা হবে, রাজ্যের সাংসদরা এই বিল উত্থাপনে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে, তার আর্জি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে এই অথরিটি বাস্তবায়িত হলে অসমের বন্যা ও ধ্বসের সমস্যা স্থায়ী সমাধানের পথ খুলে যাবে। অসমের বন্যা সমস্যা সম্পর্কে বিস্তৃত তথ্য দিয়ে মন্ত্রী জানান, বরাক ও ব্রহ্মপুত্র নদ সহ ১২১টি উপনদী অন্যান্য রাজ্য এবং রাষ্ট্র থেকে প্রবাহিত হয়ে আসছে। জাটিঙ্গা, সিরিঙ সহ মাত্র তিনটি নদী অসমের নিজস্ব ভূখণ্ডে প্রবাহিত হয়। ভূটান থেকে আসছে বেঁকি, সঙ্কোচ ও পুঠিমারি নদী। নাগাল্যান্ড থেকে আসছে ভােগদৈ, ধানসিরি। মিজোরাম থেকে সােনাই। এই পরিস্থিতিতে অসমের বন্যা সমস্যা সমাধান করা খুবই জটিল ব্যাপার বলে মন্তব্য করেন। প্রতিবছর প্রায় ৩২ হাজার বর্গ কিলােমিটার এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়। যা প্রায় ৪০ শতাংশ। ১৯৫০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪ লক্ষ ২৭ হাজার বর্গ কিলােমিটার জমি নদীগুলিতে তলিয়ে গেছে। যা প্রায় ৭.৪ শতাংশ। রাজ্যে ৪ হাজার ৪৬৪ কিলােমিটার দৈর্ঘ্য বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। তার মধ্যে সুইচ গেট নির্মাণ করা হয়েছে ৪৪২টি। অসম সহ ভূটান, সিকিম সব নদী বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। এই প্রথমবার গত জুলাই মাসে বিধানসভায় ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এসওপিডি-এফডিআর বাঁধের মেরামতির বদলে পুননির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। বাঁধের উপর রােলার চালিয়ে পুর্ত দপ্তরের পথের মতাে পথ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পথ না থাকলে বাঁধের ওপর পথকেই পাকা করে মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগে এক একটি রাস্তা নির্মাণে ১০০-১৫০ ঠিকাদার নিয়ােগ করা হতাে। এখন সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে একজন চিফ ইঞ্জিনিয়ারের অধীনে মাত্র এক-দু’জন ঠিকাদারকে নিয়ােগ করে কাজ করার নতুন কনসেপ্ট তৈরি করা হয়েছে। আগে ব্রহ্মপুত্রের জলপ্রবাহ সম্পর্কে চীন সরকার আগাম কোনাে খবর জানাতােনা। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এখন চীন সরকার অসমের ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর সম্পর্কে ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক খবরাখবর দিয়ে থাকে। জল সম্পদ বিভাগের উদ্যোগে নদীগুলি থেকে বালি ও পাথর তুলে তা কাজে লাগানাে হচ্ছে। কিন্তু বন বিভাগ তা ব্যবহার করে নিচ্ছে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। জলসম্পদ মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার নীতি আয়ােগের প্রচেষ্টায় বিশ্ব ব্যাংক থেকে অসম সরকার বন্যা নিয়ন্ত্রণে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার অর্থ সাহায্য পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ডােনার মন্ত্রালয় থেকে এনওসি পাওয়া গেছে। এই টাকা পেলে অসমের বন্যা ও ধ্বসের সমস্যা চিরস্থায়ীভাবে সমাধান হবে। কমল সিং নার্জারি, রূপজ্যোতি কুর্মি, চক্র গোঁহাই, হাফিজ বসির আজমেদ, ওয়াজেদ আলি চৌধুরী,কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, গুরজ্যোতি দাস, আমিনুলি ইসলাম,বৃন্দাবন গােস্বামী প্রমুখরা এই সংকল্প প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন। বিরােধী দলপতি দেবব্রত শইকিয়া বলেন, এক সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলকে দিল্লিতে পাঠানাে হােক। অসমের বন্যা সমস্যায় ন্যূনতম ১ হাজার কোটি টাকা প্যাকেজ ঘােষণার দাবি জানানাে হােক। কংগ্রেসের কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ অভিযােগ করেন, সরকার অর্থ মঞ্জুর করেছেবলে শুধু ঘােষণাই করে থাকে। তা বাস্তবায়িত হয় না। হাফিজ বসির আহমেদ বলেন, চর অঞ্চলগুলি বন্যায় প্লাবিত হওয়ার ফলে পুরাে চর অঞ্চলইডুবে যায়। মানুষগুলি ঠিকানা পরিবর্তন করে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নেয়। তাদেরকে তখন সন্দেহজনক নাগরিক হিসাবে তা সেটে হয়রানি করা হয়। তাই তিনি স্থানান্তরিত মানুষগুলিকে ‘ডিসপ্লেস সার্টিফিকেট ইস্যু করার দাবি জানান।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.