Header Ads

এনপিআর-এর তথ্য আপডেট 2020 সালের এপ্রিল থেকে, খরচ হবে 8500 কোটি

নয়া ঠাহর প্রতিবেদন, নয়াদ্দিল্লি, 24 ডিসেম্বরঃ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর)-এ সবুজ সঙ্কেত দিল কেন্দ্রএনপিআর-এর তথ্য আপডেট করার জন্য বাজেট বরাদ্দে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।আজ জাতীয় জনগণনা কমিশনের এক তথ্য মতে জানা গেছে, অসম ছাড়া সব রাজ্য তথা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে2020 সালের এপ্রিল মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এনপিআর-এর কাজ চলবে খরচ হবে প্রায়8500 কোটি টাকা।এবার এনপিআর-এ বায়োমেট্রিক তথ্য নেওয়া হবে বলে নানা মহলে গুজব ছড়িয়েছেকিন্তু কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানিয়েছেন, এনপিআর-এ বায়োমেট্রিকের প্রয়োজন নেই।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হওয়ার পরই এই আইনের পাশাপাশি এনআরসি ও এনপিআরের বিরোধিতা করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে রাস্তায়ও নেমেছেন তিনিলাগাতার সভা-মিছিল করছেন তিনি। মঞ্চ থেকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় এনআরসি হতে দেবেন না। শুধু এনআরসি নয়, সিএএ'ও কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়এই বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন মোদী সরকারকে। তিনি বলেন, 'আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে এনআরসি করতে হবে।'
সেন্সাস কমিশন জানিয়েছে,নাগরিকদের পরিচিতির একটি ডেটাবেস তৈরি করার জন্যই এই এনপিআর। দেশের যে কোনও নাগরিই এর আওতায় এসে যাবেযে ব্যক্তি তাঁর এলাকায় ছ'মাস ধরে বসবাস করছে এবং আগামী 6 মাস ধরে বসবাস করবে, সেই ব্যক্তিকে ওই এলাকায় রেজিস্টার করতে হবে। ফলে ওই ব্যক্তির বায়োমেট্রিক ডিটেল থাকবে।এর মাধ্যমে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
     ইউপিএ সরকারের আমলে 2010 সালে প্রথমবার এনপিআরে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।দরজায় দরজায় গিয়ে সার্ভে করে এনপিআর আপডেট করা হয়।ইতিমধ্যে সেই তথ্যের ডিজিটাইজেশন সম্পূর্ণ হয়েছে।এক সূত্রে জানা গিয়েছে, 2011 ও 2015 সালে এই এনপিআর করা হয়েছিল। কিন্তু এবার 2021-তে এরাজ্যে আর এনপিআর হবে না।
সেন্সাসের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ এই এনপিআর। বিভিন্ন মহলের দাবি, এই এনপিআর নাকি আসলে এনআরসি-রই প্রথম ধাপ। তাই এনপিআর নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিরোধীরা।
ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং কেরল সরকার আগেই এনপিআর-এর কাজ স্থগিত রাখার ঘোষণা করেছে। নিজেদের রাজ্যে সিএএ কার্যকর করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করেছে একাধিক রাজ্য। তার মধ্যেই এনপিআর-এর এই সিদ্ধান্তের জেরে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যগুলির সঙ্ঘাত আরও বাড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।10 বছর পর পর দেশে জনগণনা হয়। তার আগে সরকারের প্রতিনিধিরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকদের পরিচয় সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন। 2011 সালে জনগণনার আগে 2010 সালে প্রথম এনপিআর-তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। তার পর 2015 সালে ফের বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করে সেই তথ্য ডিজিটাইজেশনের কাজও সম্পূর্ণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জনগণনা কমিশনএবার 2021 সালের জনগণনার আগে আগামী বছরের এনপিআর তথ্য আপডেট করার জন্য মঙ্গলবার অর্থবরাদ্দের অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।
কিন্তু সিএএ ও এনআরসি নিয়ে বর্তমানে দেশে যে ধরনের আবহাওয়া বইছে, তাতে সেই কাজ কতটা সুষ্ঠু ভাবে করা সম্ভবপর হয়ে ওঠবে, তা নিয়ে সংশয়ে অনেকেই। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সমস্ত জেলা প্রশাসন ও পুরসভাকে এনপিআর-এর কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত সেই কাজ শুরু করা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল। কেরলের বাম সরকারও প্রায় একই রকম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, সিএএ-এনআরসি নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বন্ধ রাখা হচ্ছে এনপিআর-এর কাজ। আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পিনারাই বিজয়ন ছাড়াও সিএএ-এনআরসি রাজ্যে কার্যকর করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করেন পঞ্জাব সহবিহার, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা।
ইতিমধ্যে অসমে এনআরসি-র মাধ্যমে নাগরিকদের চিহ্নিত করার কাজ সমাপ্ত হয়েছেবলে জানা গেছেতাই অসমে আলাদা করে এনপিআর-এর কাজ হবে না বলেজানিয়েছে জনগণনা কমিশন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.