Header Ads

ঘোড়া-ভেড়া ও হোটেল-রিসর্টের নির্লজ্জ রাজনীতি !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় 
 
মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে শিবসেনা বিজেপি’র সঙ্গে জোট গঠন করেই (বিশ বছরের সখ্যতা) ২৮৮ আসনের মধ্যে মাত্র ৫৬ আসনে জয়ী হয়--যা এক চতুর্থাংশের চেয়েও কম। অন্যদিকে বিজেপি শিবসেনার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ আসনে জয়ী হলেও শিবসেনা মুখ্যমন্ত্রীত্বের দাবিতে অনড় হয়ে রইল--এই দাবির মধ্যে স্বৈরাচারী মানসিকতা ছাড়া গণতান্ত্রিক মানসিকতার ছিটেফোঁটাও নেই। তাদের এই অন্যায় ও অযৌক্তিক দাবির কাছে খুব সঙ্গত কারণেই বিজেপি নতি স্বীকার করে নি। ফলে ২৪ অক্টোবর বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়ে গেলেও প্রায় এক মাসের মধ্যেও শিবসেনা তাদের অযৌক্তিক ঔদ্ধত্যপূর্ণ দড়ি টানাটানির কারণে শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি’র নীতিহীন মতাদর্শ জলাঞ্জলি দেওয়া একটা ক্ষণস্থায়ী সরকারও গঠন করা সম্ভব হল না। 

 
কেন হল না--সরকার গঠনকে কেন্দ্র করে উদ্ধব-পাওয়ার-সনিয়া ত্রিদলের যাত্রাপালাও কি ভাবে ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলালো তাও মানুষ লক্ষ্য করেছে। বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কিন্তু প্রথম থেকেই বলে এসেছেন মহারাষ্ট্রে বিজেপি’র দেবেন্দ্র ফড়নবিশ-ই মুখমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন। চূড়ান্ত অপদার্থতার সঙ্গে দীর্ঘ কালহরণের যাত্রাপালা দেখতে দেখতে বিজেপি সুযোগের অপেক্ষায় নিঃশব্দে ঘর গুছিয়ে যাচ্ছিল। অমিত শাহ-ই শেষপর্যন্ত জিতলেন--ত্রিদল লজ্জাজনকভাবেই হারলেন !

 
এই সরকার গঠনের নৈতিকতা নিয়ে রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়ে ঘোড়া-ভেড়া বেচা-কেনা নিয়ে তারাই সমস্বরে হৈ-হৈ চিৎকার করবেন (শুরু করে দিয়েছেন) যারা নিজের নিজের দলের বিধায়কদের (মহামান্য জনপ্রতিনিধিদের) ঘোড়া বলছেন ভেড়া বলছেন এবং তাদের বিশ্বাস করতে পারছেন না ভরসা রাখতে পারছেন না বলেই ঘোড়া-ভেড়ার পালদের হোটেল-রিসর্টে ঢালাও খানাপিনার আয়োজন করে ঘরবন্দি করে রাখছেন ! মহারাষ্ট্র থেকে গোয়া খুব বেশি দূর নয়--কিন্তু রাজস্থান? সে তো খুব কাছে নয়--তবু সেখানে পাঠাতে হচ্ছে কেন? পাঠাতে হচ্ছে কারণ, দলের কেষ্টবিষ্টুরা জানেন তাঁরা যাদের নিয়ে রাজনীতি করেন তারা খুব সহজেই ক্রয়যোগ্য ঘোড়া-ভেড়া !
পাওয়ার এবং সনিয়া ও তাঁর ব্রিগেড অর্থাৎ আহমেদ প্যাটেল-খাড়গে প্রমুখের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর গদির লোভে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য উদ্ধব ঠাকরে আলোচনার নামে দীর্ঘ কালহরণ করলেন কেন? আলোচনা চলাকালীন হঠাৎ করেই পাওয়ার নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করলেন কেন? এনসিপি সুপ্রিমো বিন্দুমাত্র টের পেলেন না অথচ তাঁরই ভাতিজা তথা বিধানসভা দলনেতা অজিত পাওয়ার সকাল হতে না হতেই বেশ কয়েকজন বিধায়কের সম্মতি আদায় করে রাজভবনে শপথ নিতে চলে গেলেন? তিনি কিচ্ছু জানতেন না এটা কিন্তু মানুষ বিশ্বাস করছে না।
বেশ কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এনসিপি তথা অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে--গভীর অস্বস্তির মধ্যে রয়েছেন স্বয়ং শারদ পাওয়ারও। মানুষ তাঁদের মুখে নৈতিকতা, গণতান্ত্রিক সুবচন শুনবে কেন? শিবসেনাকে মুখ্যমন্ত্রীত্ব থেকে ঠেকানো গেছে বলে মহারাষ্ট্রের বহু মানুষ-ই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন। অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের মানুষ নিশ্চিতভাবেই চায় নি এনসিপি-কংগ্রেস জোটকে ক্ষমতায় বসাতে। ফলে জনগণের রায় মাথা পেতে নিয়ে তাঁরা বিরোধী আসনে বসার সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে সম্মান বাড়তো--এভাবে স্থূল কমেডি যাত্রাপালার কমেডিয়ান ভাবমূর্তি তৈরি হত
না--মানুষ হাসাহাসি করার সুযোগ পেত না !

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.