Header Ads

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম অসম আগমনের শতবর্ষ উদযাপন



দেবযানী পাটিকর গুয়াহাটি। 

 ১৯১৯  সালের ১০ ই অক্টোবর অসমের মাটিতে প্রথম পদার্পণ করেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই ঐতিহাসিক আগমনের শতবর্ষকে অভিনন্দিত করার উদ্দেশ্যে শতবর্ষ উদযাপন সমিতি দ্বারা ১ নভেম্বর শুক্রবার কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুদমার্শন হলে এক বিশেষ বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । বিষয়: ছিল রবীন্দ্রনাথের ভারতভাবনা :স্ববিরোধিতা থেকে আধুনিকতায়।এই বক্তৃতানুষ্ঠানের মূল বক্তা।ছিলেন  বিশ্বনাথ রায় (ভূতপূর্ব প্রধান, বঙ্গভাষা ও সাহিত্য বিভাগ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় )এর ব্যবস্থাপক ছিল কটন বিশ্ববিদ্যালয় ও পাণ্ডু মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ । নিজের  বক্তৃতাতে বিশ্বনাথ রায় বলেন যে রবীন্দ্রনাথের সম্পূর্ণ জীবনের বিভিন্ন পর্বে  তাঁর জীবনজিজ্ঞাসা ও সাহিত্যাদর্শের পরিবর্তন ঘটেছে। বিভিন্ন সময়ে সমাজে  যে পরিবর্তন ঘটেছে, রবীন্দ্রনাথ সবকিছুকেই আত্মস্থ করেছেন গভীর অনুশীলন,  এবং বিশ্বপরিক্রমার মধ্য দিয়ে। তাই তাঁর সাহিত্যজীবনের নানা পর্যায়ে বিষয় ও আঙ্গিকের নিরন্তর পরিবর্তন দেখা যায়। এই জীবন বোধ তাঁর অসংখ্য কবিতা, গান,  ছোটগল্প,  উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গীতিনাট্য,  নৃত্যনাট্য, ভ্রমণকাহিনী, চিঠিপত্রে দেখা যায়। রবীন্দ্রনাথের অন্তর্নিহিত জীবনবোধ ছিল  বহু পরিবর্তনকে স্বীকার করে নিয়েও আপন আদর্শে প্রতিষ্ঠিত; অন্যদিকে তাঁর সৃজনশীল রূপটি ছিল পরিবর্তনশীল। 




বিশ্ব নাথ রায় আরও বলেন যে রবীন্দ্রনাথ সবসময়ই গঠনমূলক কাজের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।তিনি রবীন্দ্রনাথের গোরা, গীতাঞ্জলি, কালান্তক ভারত তীর্থ কথা উল্লেখ করেন। উল্লেখ করেন শান্তিনিকেতনের কথাও।  কবির মনে যে জীবনমুখী আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থার কল্পনা ছিল তারই বাস্তবে রূপায়িত করেন শান্তিনিকেতনে। আর গীতাঞ্জলিতে  আধ্যাত্ম ভাবনায় তার মন ধাবিত হয়  থেকে অরুপের সন্ধানে।
এই প্রসঙ্গে কটন কলেজের উপাচার্য ভাবেশ চন্দ্র গোস্বামী বলেন যে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবীন প্রজন্ম রবীন্দ্রনাথের প্রতিভা ও আদর্শের সাথে পরিচিতি হতে পারবে আর তার আদর্শের দ্বারা অনুপ্রানিত হবে।লক্ষিনাথ বেজবড়ুয়া ও রবীন্দ্রানাথের  দুজনের জাতীয় চেতনার কথা উল্লেখ করে বলেন যে রবীন্দ্রনাথের রচনা আজও প্রাসঙ্গিক।উল্লেখ্য যে ১৯১৯ সনের ১০নভেম্বরের রবীন্দ্রনাথ প্রথম বার গুয়াহাটিতে আসেন।তার সাথে ছিলেন পুত্র রথীন্দ্রনাথ ও পুত্রবধূ প্রতিমা দেবী, দিনেন্দ্র নাথ ঠাকুর আর দিনেন্দ্র নাথের স্ত্রী কমলা





সেই সময় গুয়াহাটিতে বৈবাহিক সম্বন্ধ আত্মীয় ছিলেন "আসামবন্ধুর "সম্পাদক গুনাভীরামের পুত্র জ্ঞানাদাভিরাম বড়ুয়া।১৯০৬সালের ১জুলাইতে জ্ঞানদাভিরামের সাথে কবির অগ্রজ দ্বিজেন্দ্র নাথের পুত্র অরুনেন্দ্রনাথের মেয়ে লতিকার বিয়ে হয়েছিল। শৈল শহর শিলং থেকে ফেরার সময় রবীন্দ্রনাথ গুয়াহাটিতে আতিথ্য গ্রহণ করেন।সেখানে তিনি  অনেক সভা সমিতিতে অংশ গ্রহন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ঊষা রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন যে রবীন্দ্র নাথ গুয়াহাটি এসেছিলেন  নগরের পাণ্ডু  দিয়ে । রবীন্দ্র নাথের আগমনের একশ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রথম অনুষ্ঠানটি  পান্ডুতে হয়,এর পরের অনুষ্ঠান শিলং এর ,তৃতীয় অনুষ্ঠানটি কটন কলেজে ও চতুর্থ অনুষ্ঠানটি ব্রাহ্মসমাজ মন্দিরে আয়োজন করা হয়। তিনি আরো বলেন যে রবীন্দ্রনাথ শিলচর ভ্রমণের সময় স্টেশনের প্লাটফার্মে  তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয়। উল্লেখ্য যে শনিবার  রয়েছে সংগীতের অনুষ্ঠান "সঙ্গীতাঞ্জলী" "এর ব্যবস্থাপক গুয়াহাটির ব্রাহ্মসমাজ।



স্থান নগরের ব্রাহ্মসমাজ মন্দির। আমন্ত্রিত শিল্পীরা হলেন সন্দীপ সেন(অধ্যাপক বিশ্বভারতী) ও ইন্দ্রানী বড়কটকী( জোরহাট) । এদিনের অনুষ্ঠানে  কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষা শিপ্রা গুহ নিয়োগী, অধ্যাপক ডা০ প্রশান্ত চক্রবর্তী, সাহিত্যিক মুক্তি দেব চৌধুরী , অধ্যাপক ডা০ তিমির দে দেবাশীষ ভট্টাচার্য্যর সাথে অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও ছাত্র ছাত্রীরা   উপস্থিত ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.