Header Ads

প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির ধর্ষণ কাণ্ডের দায় প্রিয়াঙ্কার উপরেই চাপিয়ে দিলেন তেলেঙ্গানার মন্ত্রী মেহেমুদ আলী !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়ঃ

হায়দ্রাবাদের মহিলা পশু চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির দগ্ধ দেহ পাওয়ার পর গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। মহিলা পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করার পর তাঁকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মহিলা ডাক্তারের দগ্ধ শরীর শাদনগরের আণ্ডারপাসের পাশে পাওয়া গেছে।

হায়দরাবাদের শামসবাদে হওয়া ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডি হত্যাকান্ড
নিয়ে একদিকে পুরো দেশের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছে। দেশের মানুষ অপরাধীদের কঠোর সাজার দাবি তুলেছে। অন্যদিকে তেলেঙ্গানার মন্ত্রী মেহমুদ আলী এমন মন্তব্য করেছেন যা নিয়ে চারিদিকে ছিঃ-ছিঃ হচ্ছে। আসলে মেহমুদ আলী পুরো ঘটনাকে নতুন রঙ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। প্রিয়াঙ্কার ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের দায় উনি দোষীদের উপর না দিয়ে উল্টে প্রিয়াঙ্কার উপরেই চাপিয়ে দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রী মেহেমুদ আলী জঘন্য বিবৃতি দিয়েছেন।
সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি ঘটনা জানতে পেরে খুবই দুঃখিত। তবে প্রিয়াঙ্কা একজন ডাক্তার ও উচ্চশিক্ষিত হয়েও বাড়িতে কেন ফোন করেছিল। প্রিয়াঙ্কা পুলিশকে ফোন করার পরিবর্তে বাড়িতে ফোন করেছিল বলেই এমন ঘটনা ঘটেছে। নাহলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হতো। ” মেহেমুদ আলী বলেন, প্রিয়াঙ্কা কেন তার বোনকে ফোন করতে গেল? কেন সে ১০০ ডায়াল করলো না? ১০০ ডায়াল করলে আমরা তাকে বাঁচাতে পারতাম।
তবে প্রিয়াঙ্কা তার বোনের পরিবর্তে থানায় ফোন করে কতটা সাহায্য পেত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ পুলিশ প্রিয়াঙ্কার পরিবারকে সাহায্য করতে অস্বীকার করেছিল। প্রিয়াঙ্কার সাথে ফোনে যোগাযোগ স্থাপন না হওয়ার পর তার বোন পুলিশকে প্রিয়াঙ্কার নাম্বার দিতে চেয়েছিল। তখন পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়েছিল ওই এলাকা তাদের নয়, যেখানে প্রিয়াঙ্কা আছেন। এরিয়া যে পুলিশ থানার অন্তর্গতই হোক না কেন, অন্য এরিয়ার পুলিশ থানার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে কতই বা সময় লাগে ! সুরক্ষার দায়িত্ব মাথায় রেখে কথিত এরিয়ার থানায় বিষয়টি কেন ট্রান্সফার করা হয়নি?এরপর প্রিয়াঙ্কার বাবা পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডাইরি লেখানো জন্য গেলে পুলিশের তরফে উল্টোপাল্টা মন্তব্য করা হয়। পুলিশ সব ঘটনা শোনার পর বলে, মেয়েটি কোনো ছেলের সাথে পালিয়ে যেতে পারে। এমন গুরুতর পরিস্থিতিতে রাজ্য পুলিশের প্রতিক্রিয়া যা এসেছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয় নয়। এ ছাড়া টোল প্লাজার মতো জায়গায় রাজ্যপুলিশের এমন নিষ্ক্রিয়তা কেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
মিডিয়া রিপোর্টস অনুযায়ী, অবশেষে সিসিটিভি ফুটেজ আর কল ডিটেলস খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে থাকা স্থানীয় ডেপুটি কমিশনার প্রকাশ রেড্ডি বলেন, মহিলা চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ড নিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে, দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে !
এদিকে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, মহম্মদ পাশা নামের এক ব্যাক্তি সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে প্রিয়াঙ্কাকে নিজের বাড়ি নিয়ে গেছিল। সেখানে সে প্রিয়াঙ্কার ফোন কেড়ে নেয়। এরপর প্রিয়াঙ্কাকে মহম্মদ পাশা ও তার সাথীরা মিলে ধর্ষণ করে।
তারপর প্রিয়াঙ্কাকে রাস্তার পাশে নিয়ে গিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয় যাতে কেউ প্রিয়াঙ্কাকে চিনতে না পারে। পুলিশ মহম্মদ পাশাকে গ্রেফতার করেছে এবং তার সাথীদেরও সন্ধানে নেমেছে পুলিশ। প্রিয়াঙ্কার পরিবার অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছে। প্রিয়াঙ্কার মা বলেছেন অপরাধীদের যেন রাস্তায় পুড়িয়ে মারা হয়। ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির পরিবারের এই দাবিকে পুরোপুরিভাবে সমর্থন জানিয়েছেন নেটিজনরা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.