Header Ads

রাতাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রার্থীত্ব নিয়ে ক্ষোভ চরমে

নয়া ঠাহর, রামকৃষ্ণনগর  রাতাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রার্থীত্ব নিয়ে বর্তমানে ক্ষোভ বিরাজ করছে বিজেপির অন্দরমহলে, সূূত্রমতে প্রকাশ। সম্প্রতি, এই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি করিমগঞ্জের বিজয় মালাকারকে মনোনয়ন দেওয়ায় দলীয় সমর্থকদের ক্ষোভ এবার চার দেওয়ালে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রকাশ্যে বিস্তার লাভ করেছে দলের তৃণমূল স্তরের কর্মীমহলে।  উল্লেখ্য, বিজয় মালাকার সাংসদ  কৃপানাথ মালাহর খুবই ঘনিষ্ঠ তথা স্নেহভাজন ব্যক্তি বলে পরিচিত। গত লোকসভা ভোটে সাংসদ কৃপানাথের হয়ে দিনরাত মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ধন ও শ্রম ব্যয় করেছেন তিনি। ফলে, এ মনোনয়ন তার কাছে উপহারস্বরূপ বলেই নানারকম জল্পনা চলছে গেরুয়া শিবিরে। 
এদিকে, দলীয় মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়া আবেদনকারীদের সাথে যোগাযোগ করলে এর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে দিব্যেন্দু নাথ দাস বলেন, বিজেপি রাতাবাড়ির স্বদলীয় কর্মীদের ভাবাবেগে আঘাত করেছে। স্থানীয় ও যোগ্য প্রার্থীদের অবজ্ঞা করে সাংসদ কৃপানাথ মালাহ নিজ ক্ষমতাবলে দলের নীতি- আদর্শ সবকিছু জলাঞ্জলি দিয়ে এমন একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছেন, সেই বিজয় মালাকার শুধু বহিরাগতই নন, শিক্ষাক্ষেত্রেও অনেকটাই পিছিয়ে। দিব্যেন্দুবাবু আরও বলেন বিজেপির দুর্দিনে রাতাবাড়ির কৈবর্ত সমাজ  যেভাবে দলের সঙ্গে থেকে ভাল দিন ফিরিয়েছেন, তাদের ভাবাবেগ তথা স্থানীয় প্রার্থীদের বঞ্চনা করে স্বচ্ছ রাজনীতির সংজ্ঞাকেই পাল্টে দিয়েছেন কৃপাণাথ। এদিকে, জয়দেব দাস রাতাবাড়ি বিজেপির খুব পরিচিত নাম। তিনি স্থান পেয়েছিলেন প্রদেশ বাছাই কমিটির দুনম্বরে।  তার বক্তব্য অনুযায়ী, একসময় বিজেপির দুঃসময়ে দলের হয়ে রাতাবাড়ি কেন্দ্রে স্বদলকে টিকিয়ে রাখতে নিরলস কাজ করে গেছেন তিনিও। তাছাড়া, কৃপানাথ বিজেপিতে যোগদান করার পর সমর্থক মহলে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল তাও পুষিয়ে নিতে অগ্রনী ভূমিকায় ছিলেন তিনি। তার কথায় সেইসময় মনোনয়নের প্রবল দাবিদার একমাত্র তিনিই ছিলেন। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে প্রার্থী কৃপানাথকে বিজয়ী করতে কোনো চেষ্টাই তিনি বাকি রাখেননি। কিন্তু দল এবার সব ভুলে সাংসদ কৃপানাথ মালাহ এর পছন্দের প্রার্থী তথা এমন একজন বহিরাগত ও স্বল্পশিক্ষিত লোককে বাছাই করল, যা বিজেপির মতো একটি অনুশাসিত দলে বেমানান। এর জবাবদিহি অতি অবশ্যই রাতাবাড়ির গণদেবতার কাছে কৃপানাথকে  দিতে হবে বলে জানালেন জয়দেব দাস। 
তাছাড়া, মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়া চাবাগান এলাকার মুন স্বর্ণকার, অনিল দাস ও করিমগঞ্জ জেলা বিজেপির বরিষ্ঠ নেতা অমরেশ রায় একে একে নিজ নিজ ক্ষোভ ব্যক্ত করে বলেন, যে, তারা উভয়েই দীর্ঘ বছর থেকে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, এমনকি, গত লোকসভা নির্বাচনে দলের তাবড় তাবড় নেতা মন্ত্রী কৃপানাথ  মালাহকে সাংসদ নির্বাচিত করতে উপনির্বাচনে মনোনয়ন প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজও করিয়েছিলেন। ফলে তারা নিজেদের মনোনয়ন একরকম পাকাপাকি ভেবেই টিকিটের জন্য তারা কোনও আবেদনই করেননি। কিন্তু, সবই ঢপ। ফাঁকা আওয়াজ। তবে শেষবেলায় দল তাদের প্রতি যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তা, সহজে মেনে নিতে পারছেন না তারা।  তারা  প্রশ্ন তুলেন,  বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি ওয়ার্ড সদস্যের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক করেছিল। তবে বিধায়কের বেলায় ওই ফরমান কার স্বার্থে উলঙ্ঘন করা হল?  এছাড়া, অনিল দাস ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুধু মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার জন্য নয়, দলীয় কর্মীদের ভাবাবেগে এভাবে আঘাত করার জন্য তিনিও দলীয় সিদ্ধান্তকে মানতে নারাজ। এদিকে, অমরেশ রায়ও মনোনয়ন থেকে ছিটকে গিয়ে আসন্ন রাতাবাড়ি উপনির্বাচনে বিজেপি দলকে ঘরোয়া কোন্দলের মুখে পড়ে বিদ্ধস্ত হতে হবে বলে তিনি তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সবমিলিয়ে ক্ষোভের পারা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.