Header Ads

লাল বাহাদুর শাস্ত্রী : তাঁর ১১৫তম জন্মবার্ষিকীতে কিছু তথ্য

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : আজ, ২ অক্টোবর। এইদিনটা প্রত্যেক ভারতীয়র কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ, এইদিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন দেশের দুই জনপ্রিয় জাতীয়তাবাদী নেতা মহাত্মা গান্ধি ও লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। এইদিন গোটা দেশজুড়ে স্মরণ করা হয় এই দুই জাতীয়তাবাদী নেতার।
স্বাধীন ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন দলনেতা হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। আজ, ২ অক্টোবর তাঁর ১১৫ তম জন্মবার্ষিকী। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে এবং আমাদের দেশের প্রতি তাঁর অবদান আজও স্মরণীয়। 
১৯০৪ সালের ২ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের মুঘলসরাই রেল স্টেশন সন্নিহিত এক ছোট্ট শহরে শ্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। তাঁর যখন মাত্র দেড় বছর তখনই তাঁর বাবা মারা যান। অত্যন্ত দারিদ্রতার মধ্যে দিয়ে তিনি তাঁর শৈশব অতিবাহিত করেছেন।
তাঁর সম্পর্কে কিছু তথ্য : 
ক) তিনি মুঘলসরাই এবং বারাণসীতে ইস্ট সেন্ট্রাল রেলওয়ের আন্তঃ কলেজে পড়াশোনা করেছেন। ১৯২৬ সালে তিনি কাশী বিদ্যাপীঠ থেকে স্নাতক পাশ করেন। এরপর, 'শাস্ত্রী'(পণ্ডিত) উপাধিতে ভূষিত হন তিনি। এই উপাধি তাঁকে কাশী বিদ্যাপীঠ থেকেই দেওয়া হয়। 
খ) ভারতীয় জাতীয়তাবাদ নেতা গান্ধীজীর কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। খুব ছোটো বয়সেই তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান করেন। তাঁর বিখ্যাত স্লোগান "জয় জওয়ান, জয় কিষাণ" এইসময় খুবই জনপ্রিয় ছিল। তাঁর এই ডাক উদ্বুদ্ধ করে এদেশের সমাজভাবনাকে।
গ) তিনি ১৯২৮ সালে ললিতা দেবীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং যৌতুক গ্রহণে তিনি স্বীকৃতি দেননি। তবে শ্বশুরবাড়ির অনুরোধে তিনি মাত্র পাঁচ গজ খাদি কাপড় এবং স্পিনিং হুইলকে যৌতুক হিসেবে গ্রহণ করেন। 
ঘ) তিনি লবণ সত্যাগ্রহতে অংশ নিয়েছিলেন। এই কারণে তাঁর দু'বছরের জেল হয়েছিল। 
ঙ) ১৯২১ সালে, গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁর জেল হয়েছিল, তবে নাবালক হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। 
চ) ১৯১৫ সালে, মহাত্মা গান্ধীর একটি বক্তব্য লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর জীবন বদলে দেয়, যা তাঁকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিতে সোচ্চার করে। 
ছ) স্বাধীনতার পূর্ব সময়ে তিনি মার্কস, রাসেল এবং লেনিনের বই পড়ে সময় কাটাতেন। 
জ) নৌকায় যাতায়াত করার মতো টাকা তাঁর ছিল না, তাই তিনি তাঁর মাথার উপরে বই বেঁধে প্রতিদিন গঙ্গায় সাঁতার কেটে স্কুলে যেতেন আসতেন। 
ঝ) ১৯৩০ সালে তিনি কংগ্রেস দলের সেক্রেটারি এবং পরে এলাহাবাদ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি হন। 
ঞ) ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট লাল বাহাদুর শাস্ত্রী পুলিশ ও পরিবহন মন্ত্রী হন। ১৯৫৭ সালে, তিনি পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রী হন এবং তারপরে বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী হন। 
ট) ১৯৬১ সালে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে প্রথম দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্পর্কিত কমিটি চালু করেন। 
ঠ) ১৯৬৬ সালের ১০ ই জানুয়ারি তাসখন্দে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি সম্পাদিত হয়। তার পরের দিন ওখানেই তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সে সময় মৃত্যুর কারণ হিসেবে শাস্ত্রী হৃদরোগে মারা গেছেন বলে প্রচার করলেও তার পরিবার তা অস্বীকার করে তদন্তের দাবি তোলে। 
তাসখন্দ চুক্তি স্বাক্ষর করার পরই ১১ জানুয়ারি মৃত্যু হয় এই জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতার। ১৯৬৬ সালে তাসখন্দে তাঁর মৃত্যু ঘিরে রহস্য এখনও রয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেন অনেকেই।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.